‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’ ড্রোন মাঝারি উচ্চতায় একটানা ৩৬ ঘণ্টা আকাশে উড়তে সক্ষম। শুধু তা-ই নয়, ৪৫০ কেজি ভার বহন করতেও সক্ষম এই ড্রোনটি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:২২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার আগেই গুজরাতের পোরবন্দরে ভেঙে পড়ল আদানি ‘ডিফেন্স অ্যান্ড এরোস্পেস’ নির্মিত ‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’ ড্রোন। ইজ়রায়েলি প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ দেশে তৈরি আদানি গ্রুপের প্রথম ড্রোন এই ‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিকল’।
০২১৬
মাঝারি উচ্চতায় উড়ানের ক্ষমতাযুক্ত শক্তিশালী এই ড্রোন ইতিমধ্যেই নৌবাহিনী নজরদারির জন্য ব্যবহার করছে। ‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’কে গত বছরই বাহিনীর নজরদারির কাজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে এই সংস্থার তৈরি আরও একটি ড্রোন আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারতীয় নৌসেনার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।
০৩১৬
সামুদ্রিক অভিযানে যুক্ত হতে সেটিকে হায়দরাবাদ থেকে পোরবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে।
০৪১৬
নৌসেনার কাছে হস্তান্তরের আগে পরীক্ষামূলক উড়ানের সময় এটি ভেঙে পড়ে বলে সূত্রের খবর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের খবর, ভেঙে পড়া ড্রোনটি উদ্ধার করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। বিষয়টি সম্পর্কে এখনও কোনও বিবৃতি জারি করেনি আদানি গ্রুপ।
০৫১৬
উপকূলে নজরদারি বৃদ্ধিতে এই ড্রোনটি নৌবাহিনীর বিশেষ সম্পদ হয়ে উঠতে পারে বলে আশা করা হয়েছিল। নৌসেনার হাতে এই ড্রোন আসায় সমুদ্রে শত্রুপক্ষের জাহাজ বা জলদস্যুদের জলযানে নজরদারি করতে সুবিধা হবে। যে কোনও পরিবেশে কার্যকর এই ড্রোন, ঝড়-ঝঞ্ঝা সইতেও সক্ষম। এমনটাই দাবি প্রস্তুতকারক সংস্থার।
০৬১৬
‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’ ড্রোন মাঝারি উচ্চতায় একটানা ৩৬ ঘণ্টা আকাশে উড়তে সক্ষম। শুধু তা-ই নয়, ৪৫০ কেজি ভার বহন করতেও সক্ষম এই ড্রোনটি।
০৭১৬
নৌ ও সেনাবাহিনী গোয়েন্দা তথ্য ও নজরদারির ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে জরুরি ভিত্তিতে দু’টি ড্রোনের অর্ডার দিয়েছিল। দ্বিতীয় ড্রোনটি মঙ্গলবার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, ‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’ নৌসেনার জন্য ভারতে তৈরি প্রথম নজরদারি ড্রোন।
০৮১৬
অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই স্বয়ংক্রিয় ড্রোন তৈরি করা হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের পাশাপাশি আকাশপথে নজরদারি চালাতে বিশেষ ভাবে উপযোগী এই যন্ত্র। প্রতিটি ড্রোনের জন্য খরচ পড়েছে ১৪৫ কোটি টাকা।
০৯১৬
প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির ক্ষেত্রে আগেই পা রেখেছে আদানি গোষ্ঠী। ইতিমধ্যেই ছোট আগ্নেয়াস্ত্র থেকে মাঝারি পাল্লার ড্রোন, রেডার, প্রতিরক্ষার বৈদ্যুতিক সামগ্রী, যোগাযোগের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করেছে তারা। দেশের মধ্যে প্রথম বেসরকারি ড্রোন তৈরির কারখানা তৈরি করেছে আদানিরাই।
১০১৬
ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা সংস্থা এলবিট সিস্টেমস থেকে প্রযুক্তি নিয়ে আদানি ডিফেন্স অ্যান্ড এরোস্পেস তার হায়দরাবাদ ইউনিটে ‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’ তৈরি করেছে। এলবিট সিস্টেমের ‘হার্মিস ৯০০ স্টারলাইনার’ ড্রোনের বিকল্প রূপ হল এই দেশি ড্রোন।
১১১৬
‘আদানি ডিফেন্স অ্যান্ড এরোস্পেস’-এর পক্ষ থেকে ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে সরবরাহ করা প্রথম পণ্যই ছিল এই ড্রোনটি।
১২১৬
নেটোর ‘স্ট্যান্যাগ ৪৬৭১’ ছাড়পত্রও পেয়েছে এই ড্রোনটি। ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকেও এই ড্রোনকে যে কোনও ঋতুতে, যে কোনও আবহাওয়ায় উড়ানের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ড্রোনের জন্য নির্ধারিত আকাশপথে উড়ানের পাশাপাশি এই ড্রোন তার বাইরেও উড়তে পারবে। সেই অনুমতি মিলেছে ‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’-এর।
১৩১৬
সেনাকে আরও শক্তিশালী করতে আত্মঘাতী ড্রোন এবং রকেট ব্যবহার বৃদ্ধি করা হবে জানিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। গত বছর ভারত তার প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি জোরদার করতে ৩১টি এমকিউ-৯বি ড্রোন কেনার জন্য আমেরিকার সঙ্গে ৩০ হাজার ২৬৫ কোটি টাকার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
১৪১৬
‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার ড্রোন কেনা নিয়ে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন তুলেছিল। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্তান এরোনটিক্স লিমিটেড এবং ভারত ডায়নামিক্স-ও রয়েছে যারা ড্রোন তৈরি করে। তা সত্ত্বেও ড্রোন তৈরির জন্য ইজ়রায়েলের এলবিট সিস্টেমস ও আদানি গোষ্ঠীর যৌথ উদ্যোগে তৈরি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
১৫১৬
সরকারি প্রতিষ্ঠানের উপর ভরসা না করে কেন আদানির নতুন সংস্থাকে কয়েকশো কোটি টাকার বরাত দেওয়া হল তা নিয়ে সরব হন বিরোধীরা।
১৬১৬
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ অভিযোগ করেছিলেন, আদানি গোষ্ঠী ইজ়রায়েল থেকে চারটি ‘হার্মিস-৯০০’ ড্রোনের যন্ত্রাংশ আমদানি করে, তা জুড়ে দিয়ে সেই ড্রোনের নাম ‘দৃষ্টি-১০ স্টারলাইনার’ রেখেছে। তারা শুধু ড্রোনের এয়ারফ্রেম তৈরি করেছে।