Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

পুলক নেই, আছে তাঁর ‘যাদবপুরের গান’

গানটির নাম দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই দর্শন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র পুলকরতন ওঝা।

ইউটিউবে গানের ভিডিয়োয় পুলক।

ইউটিউবে গানের ভিডিয়োয় পুলক।

সুজিষ্ণু মাহাতো
শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৫০
Share: Save:

‘‘জানি এখানে, এই যাদবপুরের গায়ে, কত বয়স মিশে যায়...’’

বাবুল সুপ্রিয় বসে আছেন গাড়ির উপরে। তাঁকে ঘেরাও করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা গাইছেন গান। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল সেই ভিডিয়ো। যে গানটি শোনা যাচ্ছে, তার আক্ষরিক নামও ‘যাদবপুরের গান’।

গানটির নাম দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই দর্শন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র পুলকরতন ওঝা। তিনিই লিখেছিলেন, সুর দিয়েছিলেন এই গানে। ২০১২-র ফেব্রুয়ারিতে পথ দুর্ঘটনায় মারা যান পুলক। তিনি না থাকলেও তাঁর গান যাদবপুর ক্যাম্পাসের অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। পুলকের বন্ধু, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সৌরীশ ঘোষের মনে পড়ছে গানটি তৈরির কথা। তিনি বলেন, ‘‘যত দূর মনে পড়ছে, গানটা ২০০৬ সালে লেখা। আমরা অনেকেই গানটা তৈরির সাক্ষী। ক্যাম্পাসে যে কোনও অনুষ্ঠান, আন্দোলনের প্রস্তুতির সময়ে যখন রাত জেগে কাজ, পোস্টার লেখা হত, পুলক গানটা গাইত।’’ যে কোনও আড্ডা বা ফেস্টেও ‘যাদবপুরের গান’ গাওয়া হতই। ১২ বছর পেরিয়েও সেই গান ক্যাম্পাসের সঙ্গী।

পুলকের বন্ধুরা অনেকেই জানাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়েরই কোনও একটি প্রকল্পের অনুদানে গানটি তৈরি করে, রেকর্ড করেছিলেন তিনি। ইউটিউবেও রয়েছে গানটি। ছাত্রছাত্রীরা কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক বার দাবি জানিয়েছেন গানটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নিজস্ব গান’ করার। কর্তৃপক্ষ সেই দাবি না মানলেও গানটি সত্যিই ‘যাদবপুরের গান’ হয়ে উঠেছে। সৌরীশ বলছেন, ‘‘গানটির শেষ অংশ লেখার সময় পুলক ছন্দ মেলাতে পারছিল না। তখন কী লেখা যায়, তা নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করত।’’ শেষ অনুচ্ছেদে পুলক লেখেন, ‘‘আমার লেনন কিংবা ডিলান প্রথম বার/ এখানেই শুরু এখান থেকে ধার, আমি ধার করে গাই আরও একটা গান/ সেটা তোমায় ভালবাসতে চাওয়ার গান...’’

পুলকের বন্ধুরা জানাচ্ছেন, ক্যাম্পাসকে অসম্ভব ভালবাসতেন তিনি। হস্টেলের ছাদ, খোলা মাঠ বা ক্যান্টিন— ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভেসে আসত তাঁর গলা। এখন পুলক নেই। তবুও তাঁর গান ভাসে ক্যাম্পাসে। বৃহস্পতিবার পড়ুয়াদের স্লোগানে পুলকের গান শুনে প্রাক্তনীরা অনেকেই বলছেন, ‘‘যাঁরা এখন ওই গান গাইছেন, গান তৈরির সময়ে তাঁরা ছিলেন নেহাতই শিশু। এখন তাঁদের মুখেও যাদবপুরের গান।’’

ভিডিয়োতে শোনা যাচ্ছে, প্রিয় ক্যাম্পাস নিয়ে পড়ুয়ারা গাইছেন, ‘‘তোমার বয়স বেড়ে যায়/ তারায় তারায়, তুমি দেওয়ালে দেওয়ালে তাই/ পাল্টে দিতে চাই...’’ তাঁদের সুরেই এখনও যেন ক্যাম্পাসে আছেন পুলকও।

অন্য বিষয়গুলি:

Jadavpur Babul Supriyo Pulak Ojha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy