টিবিএম উর্বীর এই ‘সেন্ট্রাল বেয়ারিং’ সম্প্রতি কেটে বার করা হয়েছে। এর ওজন ৩৫ টন। নিজস্ব চিত্র
অনেক ঝড়-ঝাপ্টা পেরিয়ে অবশেষে বৌবাজার নিয়ে উদ্বেগ কমতে চলেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষের।
সুড়ঙ্গ-বিপর্যয়ের প্রায় আড়াই বছর পরে মাটির নীচে আটকে পড়া টিবিএম (টানেল বোরিং মেশিন) ‘চণ্ডী’কে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার করার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। পাশাপাশি, পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের অবশিষ্ট কাজ সম্পূর্ণ করেছিল যে টিবিএম, সেই ‘উর্বী’র যন্ত্রাংশ কেটে বার করার কাজও প্রায় শেষের পথে।
প্রায় হাজার টন ওজনের ‘উর্বী’র সামনের দিকে থাকা ৩৫ টন ওজনের ‘সেন্ট্রাল বেয়ারিং’ কেটে বার করার কাজ শেষ হয়েছে গত ৫ মার্চ। এখন এসপ্লানেডের দিকে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের দুর্ঘটনাগ্রস্ত অংশ পরিষ্কার করার কাজ চলছে। ওই কাজ শেষ হলে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের এসপ্লানেড এবং শিয়ালদহের দিকের খণ্ডিত অংশ দু’টি জুড়ে দেওয়ার কাজ শুরু করা হবে। এর পাশাপাশি বৌবাজারে জোড়া টিবিএম উদ্ধার করার জন্য ৪০ মিটার দীর্ঘ, ১০ মিটার প্রশস্ত এবং ২৮ মিটার গভীর যে গর্ত তৈরি করা হয়েছিল, তার মেঝে কংক্রিট দিয়ে ঢালাই করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রায় ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩০ মিটার অংশে ঢালাইয়ের সেই
কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ওই মেঝের উপরেই দু’প্রান্তের সংযোগকারী সুড়ঙ্গ তৈরি হবে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রের খবর, ২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে জল ঢুকতে শুরু করার পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে আটকে পড়া টিবিএম ‘চণ্ডী’র পিছনের দিকে কংক্রিটের দেওয়াল তৈরি করে দেওয়া হয়। সুড়ঙ্গের মুখ থেকে তখন ওই অংশের দূরত্ব ছিল ১২৫ মিটার। মুখ বন্ধ ওই প্রকোষ্ঠের মধ্যে জল ভর্তি করে ধস ঠেকানো হয়। পরবর্তী কালে ওই অংশের মাটিকে মজবুত করতে জল, সিমেন্টের মিশ্রণ দিয়ে গ্রাউটিং করার সময়ে মুখ বন্ধ প্রকোষ্ঠটি ভরে যায়। ‘চণ্ডী’ কার্যত কংক্রিটে ঢাকা পড়ে যায়। দীর্ঘ চেষ্টার পরে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সেটিকে উদ্ধার করার কাজ শেষ হয়। এখন‘চণ্ডী’র ফেলে আসা পথ পরিষ্কার করার কাজ চলছে। এসপ্লানেডের দিকের প্রায় ৪০ মিটার অংশে জমাট বাঁধা সিমেন্ট, মাটি পরিষ্কার করা হয়েছে।
শিয়ালদহের দিক থেকে ‘উর্বী’ পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের অবশিষ্ট কাজ সম্পূর্ণ করেছে গত বছরের এপ্রিলে। তার পরে সেটিকে শিয়ালদহের দিক থেকে কেটে বার করার কাজ শুরু হয়। প্রায় হাজার টন ওজনের ‘উর্বী’র বাইরের আবরণ পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের একাংশের দেওয়াল হয়ে চিরতরে থেকে যাবে। ওই অংশের সামনের দিকে টিবিএমের ব্লেড ধরে রাখার জন্য মাঝখানে প্রকাণ্ড রথের চাকার মতো বেয়ারিং ছিল। যার ওজনই প্রায় ৩৫ টন। সেই বেয়ারিং মাসখানেকের চেষ্টায় কেটে সম্প্রতি বার করা গিয়েছে। এর ফলে শিয়ালদহের দিক থেকে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের মুখ কার্যত পরিষ্কার হওয়ার পথে। এখন এসপ্লানেডের দিকের অংশ পরিষ্কার হলেই দু’দিকের খণ্ডিত সুড়ঙ্গ জুড়ে দিয়ে ভিতরে মেট্রোর ট্র্যাক পাতার কাজ শুরু করা যাবে। ওই কাজের জন্য আরও বেশ কয়েক মাস লাগতে পারে। তবে,
আপাতত বৌবাজার নিয়ে বিপত্তি কাটছে বলে জানাচ্ছেন মেট্রোকর্তারা। এ প্রসঙ্গে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এক কর্তা বলেন, ‘‘অনেক দুর্যোগের সাক্ষী এই বৌবাজার। ঝড়-ঝাপ্টা পেরিয়ে এ বার মনে হচ্ছে, সুড়ঙ্গের শেষে আলো দেখা যাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy