Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Medical Colleges

উপাচার্য-জটে আটকে একাধিক মেডিক্যাল কলেজে আসন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া 

এমডি, এমএস, ডিএম, এমসিএইচ-এর মতো বিভিন্ন স্নাতকোত্তর স্তরের কোর্সে আসন বৃদ্ধির জন্য ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের অনুমতি বা অনুমোদনের প্রয়োজন হয় সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজের।

students.

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:২৮
Share: Save:

‘সম্মতি দেবে কে?’ এটাই নাকি এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে। অভিযোগ, তার জেরে রাজ্যের একাধিক মেডিক্যাল কলেজের স্নাতকোত্তর স্তরের আসন বৃদ্ধি কার্যত বিশ বাঁও জলে!

তবে তা নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রশাসনের খুব একটা চিন্তাভাবনা আছে বলে জানা যাচ্ছে না।
অন্য দিকে, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে দাবি, উপাচার্য নেই, তাই কাজ হচ্ছে না। যা শুনে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘‘এমন অচলাবস্থা চললে তো ডাক্তারি পঠনপাঠন লাটে উঠবে!’’ যদিও স্বাস্থ্য প্রশাসনের একাংশ এবং সিনিয়র শিক্ষক-চিকিৎসকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, উপাচার্য না থাকলেও রেজিস্ট্রার বা উপ-উপাচার্য (প্রো-ভিসি) সম্মতি দিতেই পারেন। কিন্তু এ রাজ্যে তা হচ্ছে কই?

জানা যাচ্ছে, এমডি, এমএস, ডিএম, এমসিএইচ-এর মতো বিভিন্ন স্নাতকোত্তর স্তরের কোর্সে আসন বৃদ্ধির জন্য ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের অনুমতি বা অনুমোদনের প্রয়োজন হয় সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজের। তবে তার আগে কলেজ কর্তৃপক্ষকে রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার কাছে ‘এসেনশিয়ালিটি সার্টিফিকেট’ বা প্রয়োজনীয়তা শংসাপত্রের জন্য আবেদন করতে হয়। তিনি সেটি দিলে তা নিয়ে নির্দিষ্ট ফি-সহ রাজ্যের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। যার পরে পাওয়া যায় ‘অ্যাফিলিয়েশন সার্টিফিকেট’। সেই শংসাপত্র-সহ এর পরে আবেদন জমা দিতে হয়
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনে। এর পরে কমিশনের তরফে পরিদর্শন হলে তার পরেই এনএমসি-র তরফে নতুন কোর্স চালু বা আসন বৃদ্ধির অনুমোদন মেলে।

সূত্রের খবর, রাজ্যের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এখন এমনই ২৮টি কোর্সের ‘অ্যাফিলিয়েশন সার্টিফিকেট’ আটকে রয়েছে। এক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আসন বাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা করেও হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। কবে অ্যাফিলিয়েশন মিলবে, জানি না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যুক্তি, উপাচার্য নেই বলে সমস্যা হচ্ছে।’’ আর এক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ বলছেন, ‘‘এমন টালবাহানায় এ বার তো এনএমসি-র কাছে আবেদনের সময়সীমাও পেরিয়ে যাবে।’’ জানা যাচ্ছে, ১৬ অগস্ট থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের কাছে আবেদনের সময় রয়েছে। অর্থাৎ, আবেদন করার জন্য হাতে রয়েছে আর মাত্র কয়েকটা দিন। তা হলে এখন উপায়? সদুত্তর নেই কোনও মহলেই।

ইউজিসি-র নিয়ম মেনে নিয়োগ না হওয়ার জন্য সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পালকে সরিয়ে দেয় রাজভবন। বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন সুহৃতা। অন্য দিকে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক দেবাশিস বসুকে উপ-উপাচার্য পদে নিয়োগ করে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু সূত্রের খবর, অপসারিত উপাচার্য তাঁকে দায়িত্ব হস্তান্তর করে না যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।

কিন্তু দিনের পর দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ রকম অচলাবস্থা চলে কী করে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকদের একাংশও। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্‌থ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘অ্যাফিলিয়েশন না পাওয়া গেলে মেডিক্যাল কলেজগুলি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন করবে কী করে? এতে রাজ্যের মডার্ন মেডিসিনের স্নাতকোত্তর পড়ার যে ক্ষতি হবে, তার দায় প্রাক্তন উপাচার্য নেবেন তো?’’ তাঁর আরও অভিযোগ, হাজিরা খাতা তালাবন্ধ করে রাখা হচ্ছে বলেও জানা যাচ্ছে। কেন
আবেদন করার পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে অ্যাফিলিয়েশন মিলছে না, তা জানতে রেজিস্ট্রার ইন্দ্রজিৎ গুপ্তকে ফোন করা হলে তিনি ‘‘মিটিংয়ে ব্যস্ত আছি’’ বলে ফোন কেটে দেন। তার পর থেকে আর ফোন ধরেননি, মেসেজেরও উত্তর দেননি। ফোন ধরেননি উপ-উপাচার্যও। তবে পরে টেক্সট মেসেজের উত্তরে লিখেছেন, ‘প্রক্রিয়া চলছে।’

অন্য বিষয়গুলি:

Medical Colleges Students Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy