রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ। —ফাইল চিত্র
বিজ্ঞান বিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নাল এবং গবেষণাপত্র বিনামূল্যে ডাউনলোড করার ওয়েবসাইট সাই-হাব এবং লিবজেন বন্ধ করা নিয়ে প্রতিবাদে নামলেন গবেষকেরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই ওয়েবসাইট দু’টিতে পুরনো কিছু গবেষণাপত্র দেখা গেলেও নতুন গবেষণাপত্র দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে অসুবিধায় পড়েছেন এ দেশের গবেষকেরা। এর প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ চত্বরে জমা হয়েছিলেন একটি বিজ্ঞান সংগঠনের সদস্যেরা।
তাঁদের অভিযোগ, ওই দু’টি সাইটে বিভিন্ন দেশের গবেষক এবং বিজ্ঞানীদের যে গবেষণাপত্র পাওয়া যায়, সেগুলি ছাড়া পিএইচডি এবং গবেষণাভিত্তিক কাজ সম্পন্ন করা কার্যত অসম্ভব। এত দিন পর্যন্ত প্রায় সমস্ত গবেষণাপত্র পিএইচডি স্কলার এবং ছাত্রছাত্রীরা বিনামূল্যে ওই দু’টি সাইট থেকে পেয়ে যেতেন। গত ডিসেম্বরে দু’টি জার্নাল প্রকাশনা সংস্থা এলসেভিয়ার এবং উইলি অভিযোগ করে, সাই-হাব এবং লিবজেন গবেষণাপত্রগুলি বিনামূল্যে দিয়ে কপিরাইট লঙ্ঘন করছে। ফলে সেগুলি বন্ধ করে দিতে হবে। দিল্লি হাইকোর্টও তাদের এই আবেদনে সাড়া দেয়।
এর পরেই সারা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী এবং গবেষকেরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন। প্রায় চোদ্দো হাজার গবেষক ওই পিটিশনে সই করেন। আগামী ৮ এপ্রিল এই মামলার ফের শুনানি হওয়ার কথা।
সাই-হাব ও লিবজেন বন্ধ হয়ে গেলে কতটা সমস্যায় পড়বেন গবেষকেরা? রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের মনস্তত্ব বিভাগের গবেষক স্বাগতা কর্মকার বললেন, “সাইটগুলি থেকে পাওয়া না গেলে আমাদের প্রতিটি গবেষণাপত্রের লেখকদের ব্যক্তিগত ভাবে ইমেল করে সেগুলো চাইতে হবে। এটা সময়সাপেক্ষ। ফলে পাঁচ বছরের মধ্যে পিএইচডি শেষ করতে সমস্যা হবে আমাদের। অন্য দিকে, বিদেশি গবেষাপত্রগুলি ব্যয়বহুল, সবার পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। ফলে গবেষণাই আটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।”
প্রসঙ্গত, ভারতীয় কপিরাইট আইন অনুযায়ী, ব্যক্তিগত গবেষণার কাজের জন্য কোনও গবেষণাপত্র ডাউনলোড করা হলে তাতে কপিরাইট লঙ্ঘন হয় না। তবে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে তা ব্যবহার করার অনুমতি নেই। গবেষকদের মতে, পিএইচডি-র কাজকে কোনও ভাবেই ‘ব্যবসায়িক’ বলা যায় না। তা ছাড়া, সাই-হাব, লিবজেন ভারতে রয়েছেও বহু বছর। তা হলে এত দিন পরে কেন এই অভিযোগ? কেনই বা তা মেনে নেওয়া হচ্ছে? এ দিনের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কের গবেষক প্রত্যুষ শিকদার। তাঁর মতে, “এই সরকার বিজ্ঞানের প্রসার বন্ধ করে দিয়ে অপবিজ্ঞান এবং কুসংস্কার ছড়াতে চাইছে। তাই গবেষণা বন্ধ করতে তৎপর।”
তিনি জানান, আট এপ্রিল আদালতের সিদ্ধান্ত শোনার পরে বৃহত্তর আকারে আন্দোলন করতে চান তাঁরা। সেই উদ্দেশ্যে অন্য কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy