উদ্যাপন: রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়ের বার্ষিক অনুষ্ঠান। শনিবার, গিরিশ মঞ্চে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
মাধ্যমিক থেকে শুরু করে অন্যান্য শ্রেণির কৃতীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছিল বিভিন্ন স্মৃতি পুরস্কার। স্মৃতির সেই তালিকায় থাকা একটি নাম আসতেই অনেকের চোখের কোণ চিকচিক করে উঠল। কারণ, ১৩ বছর আগে ওই বিদ্যালয় থেকেই মাধ্যমিক পাশ করা পূজা দত্তের স্মৃতিতে পাঁচ পড়ুয়ার হাতে তুলে দেওয়া হল পুরস্কার!
শনিবার ছিল রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়ের বার্ষিক অনুষ্ঠান। সেখানেই সোদপুরের বাসিন্দা পূজার স্মৃতিতে পুরস্কার প্রদান করা হল। স্নাতকোত্তর পরীক্ষা পাশ করার পরে চাকরির পরীক্ষারপ্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ওই তরুণী। ইচ্ছে ছিল, বেতনের একটি অংশ দেবেন নিজের বিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে। কিন্তু ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে চাকরির পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে লোকাল ট্রেনের দরজার কাছে এসে দাঁড়ানো পূজার সমস্ত স্বপ্ন, ইচ্ছে তছনছ হয়ে গিয়েছিল রেললাইনের ধারের বাতিস্তম্ভে ধাক্কা খেয়ে। মেয়ের মৃত্যুর পরে তাঁর ইচ্ছেপূরণ করতে মাসীমা দত্ত বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন হাজার পাঁচেক টাকা।এ দিন যখন পূজার নামাঙ্কিত স্মৃতি-পুরস্কার তুলে দেওয়া হচ্ছিল পড়ুয়াদের হাতে, প্রেক্ষাগৃহে বসে তখন চোখের জলে পুরনো স্মৃতি আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছিলেন তাঁর মা।
মেয়ের ইচ্ছেপূরণে মায়ের ভূমিকাকেও এ দিন কুর্নিশ জানান বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভগিনীনিবেদিতার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৮৯৮ সালের ১৩ নভেম্বর, কালীপুজোর দিন ১৬ নম্বর বোসপাড়া লেনের বাড়িতে এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকরেছিলেন সারদাদেবী। পরে ১৯২২ সালে সেটি চলে আসে ৫ নম্বর নিবেদিতা লেনে। সেখানেই এখন চলে মাধ্যমিক বিভাগ। এ দিনগিরিশ মঞ্চের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্বের অধ্যাপক দীপ্তেন্দু চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কালীপুজোর দিন যে বিদ্যালয়ের শুরু হয়েছিল, তা আজও সমাজ ও নারীশিক্ষার পথিকৃৎ হয়ে এগিয়ে চলেছে।’’ এ দিন বিভিন্ন সাফল্য, মাধ্যমিকের ফলাফল-সহ কার্যবিবরণী পাঠের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সহ-সম্পাদিকা প্রব্রাজিকাসোমপ্রাণা জানান, চলতি বছর থেকে নিবেদিতা বিদ্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগও চালু হচ্ছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের সম্পাদিকা প্রব্রাজিকা দেবপ্রাণা-সহ অন্য সন্ন্যাসিনীরা।
এ দিন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিভাগের পড়ুয়াদের অংশগ্রহণে মঞ্চস্থ হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান।শ্লোকপাঠের মধ্য দিয়েঅনুষ্ঠানের সূচনা হয়। চন্দন পরিয়ে অতিথিদের বরণ করে নেয় খুদে পড়ুয়ারা। এর পরে গান, প্রাথমিক বিভাগের পড়ুয়াদের নাটক ‘হ-য-ব-র-ল’, মাধ্যমিক বিভাগের পড়ুয়াদের ‘বাল্মীকি প্রতিভা’ এবং করোনাভাইরাস ও পরিবেশ দূষণকে বিষয়বস্তু করে একটি নৃত্যনাট্যও পরিবেশিত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy