—ফাইল চিত্র।
সংশয় ছিল প্রথম থেকেই। সেই আশঙ্কা সত্যি করে পূর্ব ভারতের প্রথম হাত প্রতিস্থাপন সফল হল না। এসএসকেএম হাসপাতালে দু’টি হাত প্রতিস্থাপিত হওয়া যুবকের বাঁ হাতটিও এ বার বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে খবর। কয়েক দিন আগে প্রতিস্থাপন হওয়া ডান হাতটি বাদ দিতে হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রতিস্থাপন সফল না হওয়ার কারণ নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করেছে পিজি। সে জন্য দেশে ওই প্রতিস্থাপনের পথিকৃৎ বলে পরিচিত চিকিৎসকের সঙ্গেও আলোচনা করা হচ্ছে।
জানা যাচ্ছে, এক-দু’দিনের মধ্যেই বাঁ হাতটি বাদ দেওয়া হবে। মঙ্গলবারের বায়প্সি পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ডান হাতের মতো বাঁ হাতেও ‘হাইপার অ্যাকিউট রিজেকশন’ হচ্ছে। অর্থাৎ, দাতার অঙ্গকে গ্রহীতার শরীর প্রত্যাখ্যান করছে। প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হাত প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে এক বছরের মধ্যে প্রত্যাখ্যানের হার ৮৬ শতাংশ। কিডনির ক্ষেত্রে সেটি ১০-১২ শতাংশ। পিজি-র প্লাস্টিক সার্জারির এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘প্রতিস্থাপনের এক বছরের মধ্যে প্রত্যাখ্যানের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।’’
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হাত প্রতিস্থাপনে জটিলতার কারণ, পাঁচটি স্তরের উপস্থিতি। ত্বক, চর্বি, মাংস পেশি, স্নায়ু ও শিরা-ধমনী, হাড়— এগুলি পর্যায়ক্রমে থাকে। হাত প্রতিস্থাপনে প্রত্যাখ্যান বেশি হয় ত্বক থেকে। চিকিৎসকদের কথায়, ‘‘কিডনি-সহ অন্যান্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনে এতগুলি স্তর যুক্ত করতে হয় না।’’
১৪ জুলাই উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা হরিপদ রানার ব্রেন ডেথের পরে তাঁর স্ত্রীর সম্মতিতে হাত দু’টি প্রতিস্থাপনের জন্য নেওয়া হয়। ওই হাত প্রতিস্থাপন করা হয় বিরাটির এক যুবকের শরীরে। বৈদ্যুতিক শকে যাঁর হাত দু’টি ঝলসে গিয়েছিল। প্রায় এক বছর অপেক্ষার পরে দু’টি হাত প্রতিস্থাপন হয়।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দাতা হরিপদের বাঁ হাতে স্যালাইন ও রক্ত সঞ্চালিত হয়েছিল। তাই সেটিতে থ্রম্বোসিস হয়। ফলে ওই হাত নিয়ে প্রথম থেকেই সংশয় ছিল। কিন্তু গ্রহীতার শরীর দু’টি হাতই কেন প্রত্যাখ্যান করল, তার বিশ্লেষণ করতে কোচির এক বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিস্থাপনের প্রধান চিকিৎসক সুব্রহ্মণ্য আইয়ার কে-এর সঙ্গে আলোচনা চলছে। পিজি কর্তৃপক্ষ এক বার ওই চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। দ্বিতীয় বারও সমস্ত রিপোর্ট, চিকিৎসার যাবতীয় তথ্য নিয়ে আলোচনা হবে। ওই চিকিৎসক প্রথম সফল ভাবে দু’টি হাত প্রতিস্থাপন করেছিলেন আফগানিস্তানের এক জওয়ানের। পরেও তিনি বেশ কয়েকটি হাত প্রতিস্থাপন করেছেন। দেশে এখনও পর্যন্ত ১৫টির মতো হাত প্রতিস্থাপন হয়েছে। তার সাফল্যের হারও বেশি নয়।
দীর্ঘ অস্ত্রোপচারের পরে আইটিইউ-তে রাখা হয়েছিল যুবককে। সূত্রের খবর, অস্ত্রোপচার ঠিকঠাক হলেও প্রতিস্থাপন সফল, তা বলতে চাননি প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসকেরা। কারণ, অস্ত্রোপচারের আট দিন পরে প্রথম বোঝা যায়, গ্রহীতার শরীর প্রত্যাখ্যান করছে কি না। ওই যুবকের ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছিল। দেখা যায়, ডান হাত ক্রমশ শক্তি হারাচ্ছে। এক সময়ে ওই হাতটি ‘হাইপার অ্যাকিউট রিজেকশন’ হচ্ছে বলে বোঝা যায়। ২৫ জুলাই যুবকের ডান হাতটি বাদ দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy