Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Noise Pollution

শব্দ-দাপট ঠেকান, আর্জি পর্ষদ গঠিত কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যানেরই

আবেদনকারীরা জানাচ্ছেন, শব্দযন্ত্রে সাউন্ড লিমিটর লাগানো বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছিল সেই ২০০৪ সালে। তার পরে ১৮ বছর পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত হল না।

ডিজের উৎপাত তো বটেই, শব্দবাজি রোধেও সতর্ক থাকার জন্য পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে।

ডিজের উৎপাত তো বটেই, শব্দবাজি রোধেও সতর্ক থাকার জন্য পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:৪০
Share: Save:

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ গঠিত শব্দদূষণ রোধ কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। কিন্তু নতুন বছরে ডিজে-র সম্ভাব্য দাপটের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তা রোধ করার জন্য তিনিই চিঠি দিলেন রাজ্য পরিবেশ দফতরে! অতীতে পর্ষদ গঠিত শব্দদূষণ রোধ কমিটির চেয়ারম্যান, ইএনটি চিকিৎসক দুলাল বসুর আক্ষেপ, শব্দদূষণ রোধে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদেরই যথেষ্ট গা-ছাড়ামনোভাব রয়েছে।

দুলালবাবুর কথায়, ‘‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে পুলিশ-পর্ষদ, সবারই ভূমিকা দায়ী। এ বিষয়ে পুলিশ-পর্ষদের মধ্যে উনিশ-বিশ ফারাক।’’ সে কারণে তিনি-সহ আরও অনেকে, মূলত প্রবীণ নাগরিকেরা, নতুন বছর উদ্‌যাপনে শব্দতাণ্ডব রুখতে ওই চিঠি দিয়েছেন।

আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অবহাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ’-এর প্রাক্তন অধিকর্তা অরুণাভ মজুমদারও। তিনি জানাচ্ছেন, দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে শব্দের মাত্রা নির্ধারণেরই কোনও অর্থ থাকে না। কারণ, শব্দ, বায়ু, জল— যা-ই হোক না কেন, তার দূষণের মাত্রা নির্ধারিত হয় স্বাস্থ্যের উপরেক্ষতিকর প্রভাবের নিরিখে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে অরুণাভবাবু বলছেন, ‘‘সেই মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার জন্য যতটা পদক্ষেপ করার দরকার ছিল, তাতে যথেষ্ট খামতি রয়েছে। ডিজে যাঁরা বাজাচ্ছেন, তাঁরা এখনও বাজার থেকে ডিজে ভাড়া পাচ্ছেন বলেই সেটা করতে পারছেন। এ বার ডিজে বন্ধ বা মাইক্রোফোন-সহ যে কোনও শব্দযন্ত্রে সাউন্ড লিমিটর লাগানো বাধ্যতামূলক করা, সেটা তো পুলিশ-প্রশাসন ছাড়া অন্য কেউ করতে পারবে না।’’

আবেদনকারীরা জানাচ্ছেন, শব্দযন্ত্রে সাউন্ড লিমিটর লাগানো বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছিল সেই ২০০৪ সালে। তার পরে ১৮ বছর পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত হল না। যদিও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জানাচ্ছে, রাজ্যের শব্দযন্ত্র প্রস্তুতকারীদের তালিকা তৈরি করে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পর্ষদের এক কর্তার কথায়, ‘‘কোন থানা এলাকার কোথায় শব্দযন্ত্র প্রস্তুতকারীদের পাওয়া যাবে, তা বলা রয়েছে ওই তালিকায়।যাতে খুঁজে বার করতে কোনও অসুবিধা না হয়।’’

প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহেই রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছিলেন, নতুন বছরে শব্দদূষণ রোধে কড়া পদক্ষেপ করার জন্যপুলিশ এবং জেলাশাসকদের ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে। ডিজের উৎপাত তো বটেই, শব্দবাজি রোধেও সতর্ক থাকার জন্য পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, মুষ্টিমেয় কয়েক জনের শব্দতাণ্ডব রুখতে সমস্ত রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। আজ, শনিবার ও আগামী কাল রবিবার শব্দদূষণ সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণের জন্য দু’টি নম্বর চালু করা হয়েছে। নম্বর দু’টি হল ১৮০০৩৪৫২৩৩৯০ (টোল ফ্রি) এবং (০৩৩) ২৩৩৫৮২১২।

তবে পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত বলছেন, ‘‘দূষণ রোধে পর্ষদ পুরোপুরি ব্যর্থ। না হলে এই দৌরাত্ম্য চলতে পারে না।’’ শব্দদূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘সাউন্ড লিমিটর এ রাজ্যে আর বাস্তবায়িত হবে না। বছর ঘুরে যাবে, আর পর্ষদ তা নিয়ে শুধু ঘোষণাই করে যাবে!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE