ফাইল চিত্র।
করোনা-সর্তকতার কারণে এ বছরের সরস্বতী পুজোয় স্কুলের সব পড়ুয়া যোগ দিতে পারছে না। স্কুলে পুজো হচ্ছে, অথচ স্কুলে আসতে পারছে না প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা। অনেকে মিলে প্রতিমা আনতে যাওয়া থেকে শুরু করে একসঙ্গে অঞ্জলি দেওয়া, একে অপরের সঙ্গে প্রসাদ ভাগ করে খাওয়া, বা পাত পেড়ে খিচুড়ি খাওয়া— করোনার কারণে এ বার সবেতেই নানা বিধি-নিষেধ রয়েছে। আবার সব পড়ুয়া পুজোয় অংশগ্রহণ করতে না পারার কারণে এ বার সরস্বতী পুজো হচ্ছে না বেশ কিছু স্কুলেও।
এই বছর স্কুলে সরস্বতী পুজো হবে কি না, সেই নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল জানুয়ারি মাসেও। দিন কয়েক আগে শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেন ১২ ফেব্রুয়ারি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল খুলবে এবং সরস্বতী পুজোও হবে। তবে পুজো করতে হবে করোনা-বিধি মেনেই। এর পরেই বেশির ভাগ স্কুল জানিয়ে দেয়, দুর্গাপুজোর মতোই এ বার সরস্বতী পুজোয় মণ্ডপের ভিতরে দর্শনার্থীদের ঢুকতে দেওয়া হবে না। প্রতিটি স্কুলই জানিয়েছে, মণ্ডপে মাস্ক পরতেই হবে। প্রয়োজনে গ্লাভসও পরতে হবে।
করোনা-বিধি মেনে সরস্বতী পুজো করতে গিয়ে হিন্দু স্কুলে পুজো মণ্ডপের সামনে একটি সুরক্ষা বলয়ই বানিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানালেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সংখ্যক পড়ুয়া এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকছে। তারাই মণ্ডপ সাজানো থেকে শুরু করে পুজোর আয়োজন করবে। ওরা ওই সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থাকবে। ওখানে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। দর্শনার্থীরা একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে পুজো দেখে চলে ষাবেন।’’ শুভ্রজিৎবাবু জানান, ধাপে ধাপে অঞ্জলি দেওয়া হবে। তবে মণ্ডপসজ্জায় একটি থিম থাকবে বলে জানান তিনি।
সরস্বতী পুজোর অঞ্জলির ফুলও এ বার স্যানিটাইজ় করা হবে বলে জানালেন বেলতলা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এ বার পুজো অন্য বারের তুলনায় অনেক ছোট করে হবে। অঞ্জলি দেওয়া হবে ঠিকই, কিন্তু ফুল স্যানিটাইজ় করা হবে। অঞ্জলির পরে ফুল ছুড়ে ফেলা যাবে না। নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হবে। এ বছর প্রসাদ হিসেবে কাটা ফল দেওয়া হবে না।’’ অজন্তাদেবী জানান, খিচুড়ি ভোগ হবে। তবে পুজোর আয়োজন যে সব পড়ুয়া সরাসরি যুক্ত থাকছে, এ বার শুধু তারাই খিচুড়ি ভোগ খাবে।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের সরস্বতী প্রতিমা দেখতে হবে গেটের বাইরে থেকে। জানালেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য। পরিমলবাবু বলেন, ‘‘এ বার নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির দশ জনকে নিয়ে একটা দল তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে কিছু প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষক মিলে পুজো পরিচালনা করছেন। এ বছর পুজোয় কোনও খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা থাকছে না। প্রসাদে কোনও কাটা ফল রাখা হচ্ছে না। পুজো ও অঞ্জলি লাইভ করা হবে।’’
তবে স্কুলে না গিয়ে বাড়িতে বসে লাইভ সরস্বতী পুজো দেখাটা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো বলেই মনে করছে অনেক পড়ুয়া। হেয়ার স্কুলের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, সব পড়ুয়া যে হেতু থাকবে না, তাই তুলনায় ছোট হচ্ছে এ বারের পুজো। স্কটিশচার্চ কলেজিয়েট স্কুলের এক শিক্ষক জানালেন, স্কুলে আসতে পারছে না বলে অনেক ছাত্রের মন খারাপ। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের এক জন দশম শ্রেণিতে পড়ে, অন্য জন পঞ্চম শ্রেণিতে। এ ক্ষেত্রে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ার অবশ্যই মন খারাপ হবে। কারণ, দাদা সরস্বতী পুজোয় স্কুলে যাচ্ছে, কিন্তু ভাই যেতে
পারছে না।’’
স্কটিশচার্চ কলেজিয়েট স্কুলেও এ বার তাই পুজোর আয়োজন খুব ছোট করে হচ্ছে। মণ্ডপের বাইরে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে পুজো দেখা যাবে সেখানেও। প্রসাদে থাকবে গোটা ফল। করোনা-বিধি মেনে প্রতিমা আনা হবে। এবং ভাসানেও জমায়েত নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy