ফের রণক্ষেত্র দমদম জেল। জেলের ভেতরে ও বাইরে পাহারায় পুলিশ। রবিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
আরজি কর হাসপাতালের পুলিশ মর্গের সামনে রবিবার দুপুরে বসে কাঁদছিলেন তেঘরিয়ার অর্জুনপুর এলাকার প্রৌঢ়া। তাঁকে ঘিরে এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা। ওই প্রৌঢ়া বার বার প্রশ্ন করছিলেন, ছেলেকে একটি বার কেন দেখতে দিচ্ছে না ওরা?
শনিবার দমদম জেলে যে-বন্দি মারা গিয়েছেন, তিনিই তাঁর ছেলে বলে ওই প্রৌঢ়ার বিশ্বাস। ওই প্রৌঢ়ার সঙ্গী প্রতিবেশীরা জানান, ছেলেকে এখনও শনাক্ত করতে পারেননি উনি। হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ এখনও অনুমতি দেননি। তাঁরা জানান, দমদম জেলের আধিকারিক অনুমতির দেওয়ার আগে পর্যন্ত ওই মহিলা মৃতকে শনাক্ত করতে পারবেন না।
শনাক্তই তো হয়নি। তা হলে কী করে তিনি বুঝলেন যে, মৃত ব্যক্তিই তাঁর ছেলে? ওই প্রৌঢ়া বললেন, ‘‘ঘটনাটা যখন ঘটে, তার পরেই জেল থেকে ফোন এসেছিল। ফোনেই আমাকে বলা হয়, আমার ছেলে গন্ডগোলে মারা গিয়েছে।’’ ওই প্রৌঢ়া জানান, শুনেই তিনি রাতেই দমদম জেলে ছুটে যান। সেখান থেকে আরজি কর হাসপাতালে। তার পরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। ছেলেকে শনাক্ত করার সুযোগ পাননি। বসে আছেন মর্গের সামনে। প্রতিবেশীরা অবশ্য সাবধানি, এখনও ওই মহিলার বেশির ভাগ আত্মীয়ই জানেন না, ছেলে বন্দি। এখনও ক্ষীণ আশা, ছেলে যদি বেঁচে থাকে।
আরও পড়ুন: ফের গুজবে প্রশ্নের মুখে সরকারি সতর্কতা
কাঁচরাপাড়ার এক বন্দি গুরুতর আহত হয়ে আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি। রবিবার দুপুরে তাঁর মাকে দেখা গেল, বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন হাসপাতালে। তিনিও এখনও ছেলেকে দেখার অনুমতি পাননি। ওই বন্দির মা বলেন, ‘‘প্রায় একটা দিন কেটে গেল। ছেলের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি মিলল না। আমার ছেলে কেমন আছে? বেঁচে আছে তো? আহত হলে কতটা আহত? কেউ তো ঠিকমতো বলতেই পারছেন না।’’ আরজি কর হাসপাতালের এক কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার তাঁকে জানালেন, তাঁর ছেলের অবস্থা স্থিতিশীল। তিনি সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন, শীঘ্রই ছেলেকে দেখতে পাবেন।
শনিবার বিকেল থেকে পরপর আহত বন্দিরা আসছেন আরজি করে। রবিবারেও চার জনকে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। এখনও পর্যন্ত মোট ২৮ জন বন্দি এসেছেন বলে পুলিশি সূত্রের খবর। শনিবার থেকেই ট্রমা কেয়ার ইউনিট জেলবন্দিদের ভিড়ে ছয়লাপ। সমীর বিশ্বাসের হাতে, হাফিজুল মণ্ডলের গালে গুলি লেগেছে। সেই অবস্থায় বসে আছেন তাঁরা। লালবাজারের এক কর্তা বললেন, ‘‘আরজি করে এত জন বন্দি থাকাটা চিন্তার বিষয়। এক দিকে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি, তার উপরে হাসপাতাল থেকে বন্দিরা কেউ পালিয়ে গেলে কেলেঙ্কারি হবে। পুরোপুরি উভয়সঙ্কটের পরিস্থিতি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy