ফাইল চিত্র।
ফেব্রুয়ারিতে সংক্রমণ কিছুটা কম থাকায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য খুলেছিল স্কুল। তাতে উপকৃত হয়েছিল উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা। বর্তমানে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা থাকলেও রাজ্যে সংক্রমণের হার অনেকটাই কম। তাই করোনা-বিধি মেনে ফের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলার দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষকদের একাংশ। যদিও বুধবার রাজ্য সরকারের বিধিনিষেধ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে স্কুল-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘স্কুল অব হেডমিস্ট্রেসেস অ্যান্ড হেডমাস্টার্স’-এর মতে, অতিমারি আবহে গত বছর টানা স্কুল বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছিল উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা। বিশেষত, দ্বাদশের বোর্ডের পরীক্ষায় বসতে যাওয়া পড়ুয়াদের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার জন্য কোনও প্রস্তুতিই ছিল না। পরীক্ষার আগে তড়িঘড়ি কিছু প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস নেওয়া হলেও অনেক বিষয়ই বাদ থেকে যায়। সমস্যায় পড়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও। কসবা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের মতো স্কুলে, যেখানে প্রচুর আর্থিক ভাবে দুর্বল ছাত্র পড়ে, তাদের অনেকেই অনলাইন ক্লাস করতে পারে না। ফলে তাদের পড়াশোনা ঠিকমতো হচ্ছে না প্রায় দেড় বছর ধরে। করোনা-বিধি মেনে নবম থেকে দ্বাদশের জন্য স্কুল খুললে ওরা উপকৃত হবে।”
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার জানাচ্ছেন, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় স্কুল খোলার দাবি জানিয়ে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং স্কুলশিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “কয়েকটি রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি ভাল হওয়ায় কিছু এলাকায় স্কুল খুলতে শুরু করেছে বলে শুনছি। এখানেও করোনা-বিধি মেনে অন্তত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল খোলা হোক। রোজ নির্দিষ্ট সংখ্যক পড়ুয়া স্কুলে আসবে, এমন রুটিন তৈরি হলে করোনা-বিধি মেনেই স্কুল চলবে। তাতে অন্তত দ্বাদশের প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস শুরু করা যাবে।”
শিক্ষকদের একাংশ আবার মনে করাচ্ছেন, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় করোনা পরিস্থিতি একই রকম নয়। তাই যে সব জেলায় সংক্রমণ কম, সেখানে বিধি মেনে স্কুল খোলার পক্ষে কথা বলছেন তাঁরা। বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায়, যেখানে সংক্রমণ না থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের অভিন্ন নীতির কারণে স্কুল বন্ধ রয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর মতে, ২০২০ সালের প্রথম দিকে যে পড়ুয়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে উঠেছিল, সে এখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। ২০২১ সালের শেষে সে অষ্টম শ্রেণিতে উঠে যাবে। কিন্তু অনলাইন ক্লাস সব জায়গায় ঠিক মতো হচ্ছে না। ফলে পাঠ্যক্রমের অনেক কিছুই না জেনেই বহু পড়ুয়া পাশ করে যাচ্ছে, যা খুবই দুশ্চিন্তার। তাই কিঙ্কর বলছেন, “শুধু নবম থেকে দ্বাদশই নয়, নির্দিষ্ট রুটিন মেনে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ারাও স্কুলে আসুক। বিধি মেনে স্কুল খোলার জন্য শিক্ষা দফতরে চিঠি লিখছি।”
স্কুল খোলার পক্ষে রয়েছেন শহরের বেশ কিছু বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষেরাও। যেমন, রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, “স্কুল খোলার পরিস্থিতি আছে কি না, তা সরকারের সিদ্ধান্ত। তবে স্কুল খোলার পক্ষে সায় দিয়েছেন বেশ কিছু শিক্ষকও। করোনা পরিস্থিতি অনেকটা ভাল হওয়ায় শিক্ষকদের অনেকেই ক্লাসরুমে শিক্ষাদানে ফিরতে চাইছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy