Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

বিসর্জনের শহর দেখল ‘নৈরাজ্য’

বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিমল গুহ বলেন, ‘‘৯০ শতাংশ হলুদ ট্যাক্সির চালক এক বারে কোথাও যেতে রাজি হন না। আমরাও বলে বলে হয়রান হয়ে গিয়েছি।’’

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:২৩
Share: Save:

উৎসবের নাম বিসর্জন। সোমবার অর্থাৎ কালীপুজোর পরদিন থেকে সেই বিসর্জন ঘিরেই শহর জুড়ে চরম নৈরাজ্য চলার অভিযোগ উঠল। যার সুযোগে কোথাও অটোর ভাড়া হল দ্বিগুণ, কোথাও তিন গুণের বেশি। ‘ঝোপ বুঝে কোপ’ মারার পুরনো রোগ বজায় রেখে ভাড়া হাঁকল হলুদ ট্যাক্সিও। বাড়তি ভাড়ায় হাত পুড়ল অ্যাপ-ক্যাবে উঠেও। সময়ে দেখা নেই বাসের। অনেকেরই অভিযোগ, রাত বাড়তে এই চরম নৈরাজ্যে পুলিশ শুধুই দর্শক!

পুলিশ সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কালী প্রতিমা বিসর্জনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা থেকে গঙ্গার ঘাটে যাওয়ার পথের নির্দিষ্ট পরিকল্পনাও রাখা হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সোমবার থেকেই সেই পরিকল্পনা হাওয়ায় উড়িয়ে বিসর্জন চলছিল। বুধবার রাতে দেখা গেল, অরবিন্দ সরণি, গ্রে-স্ট্রিট হয়ে শোভাবাজার মোড়ের দিকে প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার কোনও নিয়ম মানা হচ্ছে না। সেই সুযোগেই শোভাবাজার মোড় থেকে উল্টোডাঙা যেতে হাঁকা হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

শোভাবাজারে অটোর অপেক্ষায় থাকা এক যাত্রী বলেন, ‘‘এখান থেকে উল্টোডাঙা যেতে ভাড়া ১২ টাকা। সেটাই ২৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে!’’ পাশেই তো পুলিশ। বলছেন না কেন? ওই ব্যক্তির পাল্টা উত্তর, ‘‘পুলিশ নিজে দেখেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?’’ একই চিত্র গিরিশ পার্ক মোড় হয়ে বিবেকানন্দ রোড ও মানিকতলায়। গত দু’দিন বিসর্জনের জন্য বিকেলের পর থেকে বিডন স্ট্রিট প্রায় বন্ধ বলে অভিযোগ। সৌম্য হাজরা নামে এক যাত্রী বলেন, ‘‘কাঁকুড়গাছি পর্যন্ত অটো ১২ টাকার বদলে ৩০ টাকা চাইছে। হলুদ ট্যাক্সি দাঁড়াচ্ছে না। এটুকু যেতে অ্যাপ-ক্যাব ২৬০ টাকা চাইছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, সন্ধ্যা সাতটায় এই অবস্থা হলে পরে কী হবে? পুজোর আগে শুরু বাসের আকাল এখনও মেটেনি বলে অভিযোগ করছেন ধর্মতলার এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী অনিমেষ বসু। তিনি জানান, সন্ধ্যা সাতটার পরে ধর্মতলা থেকে বাস না পেয়ে মেট্রোয় উঠতে হয় তাঁকে। মেট্রো থেকে বেরিয়ে তাঁকেও আটকে পড়তে হয় বিসর্জনের জটে।

বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিমল গুহ বলেন, ‘‘৯০ শতাংশ হলুদ ট্যাক্সির চালক এক বারে কোথাও যেতে রাজি হন না। আমরাও বলে বলে হয়রান হয়ে গিয়েছি।’’ উত্তর কলকাতার যে অটো রুটগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তার দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা মানা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শোভাবাজার, মানিকতলার ওই সব রুট নিয়ে প্রচুর অভিযোগ আসছে। ট্র্যাফিক পুলিশ কড়া না হলে কিছুই করার নেই।’’ হঠাৎ করে অ্যাপ-ক্যাবের ভাড়া বেড়ে যাওয়া নিয়ে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ডের’ সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বলেন, ‘‘আমরা সরকারকে নীতি নির্ধারণ করতে বলেছি। তা না হওয়া পর্যন্ত সমস্যা মিটবে না।’’

কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদীর অবশ্য দাবি, ‘‘কালী প্রতিমার বিসর্জন ঠিক করা রাস্তা দিয়েই হয়েছে। যাত্রী পরিবহণে সমস্যার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তা ছাড়া অটো নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

সেই পরিকল্পনায় কাজ হবে তো? প্রশ্ন রেখে দিল আরও একটি শারদোৎসব।

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Taxi Taxi Auto Fare Taxi Union
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy