Advertisement
E-Paper

গাড়ির গতিই ভরসা ট্যাংরার তদন্তে

মঙ্গলবার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল ট্যাংরার গোবিন্দ খটিক রোডে?

মাপজোক: ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক দল। বৃহস্পতিবার, গোবিন্দ খটিক রোডে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

মাপজোক: ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক দল। বৃহস্পতিবার, গোবিন্দ খটিক রোডে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:০৩
Share
Save

মঙ্গলবার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল ট্যাংরার গোবিন্দ খটিক রোডে?

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বা প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানের থেকেও অ্যাম্বুল্যান্সটির গতির উপরেই বেশি ভরসা করতে হচ্ছে তদন্তকারীদের। কারণ, আপাতত যে ক’টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছে, তার মধ্যে দু’টি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে। সেই দুই ফুটেজে প্রৌঢ়কে অ্যাম্বুল্যান্সের

পিষে দেওয়ার প্রত্যক্ষ ছবি বা মহিলাকে হাত ধরে ওই গাড়িতে টেনে তোলার চেষ্টার দৃশ্য দেখা যায়নি। মিলেছে চার সেকেন্ডের সময়ের ব্যবধান। যে সময়ের মধ্যেই ওই রাতে যা কিছু ঘটার ঘটেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, গতি কত থাকলে ওই রাতে মহিলাকে টেনে তোলার চেষ্টা এবং প্রৌঢ়কে পিষে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব ওই অ্যাম্বুল্যান্সটির পক্ষে!

সেই উত্তর খুঁজতেই বৃহস্পতিবার বেলায় ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন লালবাজারের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। ঘটনাস্থল হিসেবে তাঁরা গোবিন্দ খটিক রোডের ৬৩ মিটার বা ২০৬ ফুট জায়গা চিহ্নিত করেছেন। মঙ্গলবার রাতে যা কিছু ঘটেছিল, তা ওই জায়গাতেই হয়েছে বলে তাঁদের দাবি। অ্যাম্বুল্যান্সটি যেখানে প্রৌঢ়কে ধাক্কা মেরেছিল, সূচনাস্থল হিসেবে সেই জায়গাটিকে ধরা হয়েছে। ৬৩ মিটারের দূরত্ব শেষ হচ্ছে ধাক্কা খাওয়ার পরে যে জায়গা থেকে প্রৌঢ়ের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, সেখানে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, এখনও পর্যন্ত পাওয়া একটি সিসি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে একটি সাদা অ্যাম্বুল্যান্স মঙ্গলবার রাত ১১টা ৫৩ মিনিট নাগাদ গোবিন্দ খটিক রোড দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। তার ঠিক চার সেকেন্ড আগে অভিযোগকারিণী ও তাঁর পরিবারকে সেখান দিয়ে হেঁটে যেতে দেখা গিয়েছে। এখন ওই চার সেকেন্ড সময়টাই সূত্র।

তা ধরেই দেখা হচ্ছে তপসিয়ার দিকের সিসি ক্যামেরায় ক’টায় ধরা পড়েছিল ওই অ্যাম্বুল্যান্সটির ছবি। এর পরে ওই সময়ের ব্যবধান, অ্যাম্বুল্যান্সের ইঞ্জিনের গতি তোলার ক্ষমতা— এ সব ধরে দেখা হবে গাড়িটি আদৌ ওই ৬৩ মিটার রাস্তার মধ্যে বা তার আশপাশে কোথাও দাঁড়িয়েছিল কি না! এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘যদি দাঁড়িয়ে থাকে তা হলেই প্রশ্ন, কেন দাঁড়িয়েছিল? সেই দাঁড়ানো কি মহিলাকে অ্যাম্বুল্যান্সে টেনে তোলার চেষ্টা করতে গিয়ে, না কি প্রৌঢ়কে ধাক্কা মারার অভিঘাত সামলাতে?’’ আরও দেখা হচ্ছে, প্রৌঢ়কে ধাক্কা মারার আগে বধূকে টেনে তোলার চেষ্টা করে চার সেকেন্ডের মধ্যেই সেটির পক্ষে গতি বাড়িয়ে চলে যাওয়া সম্ভব কি না।

মৃতের পুত্রবধূ, যিনি তাঁকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন, এ দিন তাঁকেও ওই ৬৩ মিটার রাস্তায় হাঁটতে বলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। এর পরে ১০০ মিটার হাঁটিয়ে নথিভুক্ত করা হয় তাঁর হাঁটার গতি। সেই সময়ে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের ওই মহিলা দেখান, ঠিক কোন জায়গায় তাঁকে টেনে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলার চেষ্টা হয়েছিল।

প্রশ্ন উঠেছে, গোবিন্দ খটিক রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তায় একের পর এক সিসি ক্যামেরা থাকলেও ঘটনার প্রত্যক্ষ ফুটেজ পেতে সমস্যা হচ্ছে কেন?

ট্যাংরা থানা সূত্রের খবর, সম্ভাব্য যে জায়গা থেকে মহিলাকে গাড়িতে টেনে তোলার চেষ্টা হয়েছিল বলে তাঁর দাবি, সেখান থেকে বেশির ভাগ ক্যামেরাই দূরে। তবে ওই ঘটনাস্থলের কাছে একটি দোকানে সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। গাছের উপরে লাগানো সেই ক্যামেরা চালু থাকলেও তা নাকি আবার কোনও ভিডিয়োই রেকর্ড করে রাখে না। ফলে ফুটেজ ছেড়ে আপাতত গতির চর্চাই সম্বল তদন্তকারীদের।

tangra accident ambulance

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}