স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যুতে পুলিশি হেফাজতে সৌরভ চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যুর ঘটনায় ধৃত সৌরভ চৌধুরীকে ২২ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত। শনিবার আদালতে হাজির করানো হয় সৌরভকে। ২৫ অগস্ট পর্যন্ত হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং হস্টেলের আবাসিক সৌরভকে গ্রেফতার করা হয়। পুত্রের মৃত্যুতে অভিযোগপত্রে সৌরভের নাম উল্লেখ করেছিলেন স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ কুন্ডু।
শনিবার আদলতে সৌরভের আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, ‘‘সৌরভ স্বপ্নদীপের সহপাঠী, রুমমেট, বন্ধু নন। সৌরভের ফোন থেকে ফোনও করা হয়নি। যার ফোন থেকে ফোন করা হয়েছিল, সেটা দেখা হোক। স্বপ্নদীপের বাবা সৌরভকে চিনতেন না। হয়তো ছেলের থেকে শুনেছেন।’’ আদালতে সরকারি কৌঁসুলি সৌরিন ঘোষাল জানান, তিন জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে হবে। দু’টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি সৌরভের ফোন। কল ডিটেলস খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, ‘‘একটা অত্যাচারের গল্প পাচ্ছি। যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁর নামও আসছে।’’
বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপকে উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। র্যাগিংয়ের কারণে মৃত্যু বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রের পরিবার। ছেলের মৃত্যুতে হস্টেলের আবাসিকদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ। খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। এই ঘটনায় শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং হস্টেলের আবাসিক সৌরভকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছে।
সৌরভের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায়। সৌরভের গ্রেফতারের খবরে ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবার। ছেলের গ্রেফতারির খবর পেয়ে চিন্তিত সৌরভের বাবা নিরূপ চৌধুরী এবং মা প্রণতি চৌধুরী। পরিবারের একটাই দাবি, সৌরভ নির্দোষ এবং তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। শুক্রবার রাতে গ্রেফতারির আগে মাকে ফোন করেছিলেন সৌরভ। তাঁর মা বলেন, ‘‘স্বপ্নদীপের মৃত্যুতে আমার ছেলে দায়ী নয়। আমার ছেলে ও রকম ছেলেই না। এটা যাদবপুরের ছেলেরাও বলবে যে, সৌরভ এ কাজ করতে পারে না। সন্ধ্যাবেলা জানতে পারি যে ওকে (সৌরভকে) গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার সঙ্গে বিকেলেও ওর কথা হয়। ও বলে, ‘আমি কোনও ভুল করিনি মা। আমার শাস্তি হবে না। আমি কাউকে র্যাগিং করিনি। কোনও দিন করিনি। আমার একটাই ভুল যে, ওর (স্বপ্নদীপের) বাবাকে বলেছিলাম আমি লক্ষ রাখব।’” তাঁর দাবি, ‘‘আমার ছেলে নির্দোষ। ওকে ফাঁসানো হয়েছে। স্বপ্নদীপের বাবা-মা ফাঁসিয়েছে। আমার ছেলের নাম বার বার নেওয়া হচ্ছে।’’
স্বপ্নদীপের বাবা পুলিশকে জানান, গত ৩ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে একটি চায়ের দোকানে তাঁর সঙ্গে সৌরভের আলাপ। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সৌরভ জানান, ২০২২ সালে তিনি এমএসসি পাশ করেছেন। সৌরভের কথায় ভরসা পেয়েছিলেন রামপ্রসাদ। সৌরভের হাত ধরে বলেছিলেন, ছোট ভাইয়ের মতো স্বপ্নদীপকে দেখতে।
যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy