প্রতীকী চিত্র।
অতিমারিতে দীর্ঘ দিন ধরেই প্রায় বিচ্ছিন্ন পড়ুয়া-শিক্ষক সংযোগ। ফলে স্কুলছুটের সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়ছে সমাজের একটা অংশে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলে প্রতিকূল অবস্থাতেও যে সেতুবন্ধন সম্ভব, নিজস্ব উদ্যোগে একটি সমীক্ষা করে তা দেখিয়ে দিল শহরের এক অনামী প্রাথমিক স্কুল। এমন সমীক্ষা সব স্কুল করলে সমাজের সামগ্রিক পরিস্থিতির একটা স্পষ্ট ছবি উঠে আসতে পারে বলেই মত শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের একটি বড় অংশের।
স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যে ক’জনের পরিবার করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত? বেহালার একটি প্রাথমিক স্কুল তা বিশদে জানতে চেয়েছিল। সেই তথ্যের ভিত্তিতে পরিসংখ্যান দিয়ে তারা জানাচ্ছে, প্রতি শ্রেণিরই বেশ কিছু পরিবার করোনা-পর্বে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই পরিবারগুলির পাশে তাঁরা দাঁড়াচ্ছেন বলেও
দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। ভোলানাথ হালদার স্মৃতি গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড ফ্রি প্রাইমারি স্কুল নামে বেহালার ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বর্ণালী সেনগুপ্ত জানান, তাঁদের স্কুলের প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধিকাংশ পড়ুয়াই আর্থিক ভাবে দুর্বল পরিবার থেকে আসে। ওরা কেমন আছে, কী ভাবে দিন যাপন করছে, সে সব জানতেই তাঁরা একটি সমীক্ষা করেন।
কী ভাবে হয় সেই সমীক্ষা? শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, পড়ুয়ার মা-বাবা বা অভিভাবকেরা যখন মিড-ডে মিল নিতে আসেন, আলাপচারিতার ফাঁকেই তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কিছু কথা। যেমন, তাঁরা কী কাজ করেন? যে কাজ আগে করতেন, সেই কাজই কি এখন করছেন? না কি অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন? বর্ণালীদেবী বলেন, “কোনও কোনও অভিভাবক জানিয়েছেন, তাঁরা কাজ হারিয়েছেন। আবার কেউ কেউ জানিয়েছেন, আগের বেতনের এক-তৃতীয়াংশ পাচ্ছেন এখন।” সেই সব কথার ভিত্তিতে পরিসংখ্যান তৈরি হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৬৯ জন পড়ুয়ার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ৬৯টি পরিবার। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, সব থেকে খারাপ অবস্থা প্রাক্-প্রাথমিক ও তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়াদের। প্রাক্-প্রাথমিকের ১৯ এবং তৃতীয় শ্রেণির ১৭ জন পড়ুয়ার পরিবারই ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বর্ণালীদেবী বলেন, “এই সব পড়ুয়ার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে স্কুল। কী ভাবে? হয়তো দেখা গিয়েছে, কোনও পরিবারের মোবাইল আছে, কিন্তু আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় নিয়মিত রিচার্জ করা যাচ্ছে না। তখন ফোন রিচার্জ করে দিচ্ছে স্কুল। পড়ুয়াদের কিনে দেওয়া হচ্ছে রং পেন্সিল, খাতা, গল্পের বই। এমনই ছোট ছোট প্রয়াসের মাধ্যমে ওদের ভরসা তৈরির চেষ্টা করছি আমরা।”
এমন সমীক্ষা অন্যান্য প্রাথমিক স্কুলেও করা হলে সামগ্রিক অবস্থার চিত্র ফুটে উঠতে পারে। এমনটাই জানাচ্ছেন শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের অনেকে। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্নার আবার বক্তব্য, “নিঃসন্দেহে এটা খুবই ভাল কাজ। অনেক স্কুল এই ধরনের কাজ করতে পারে। তবে সরকারি অনুমোদন নিয়ে এমন সমীক্ষা করলে সব দিক দিয়েই ভাল হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy