জোকা ইএসআই হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুল্যান্স থেকে বার করা হচ্ছে ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে। —নিজস্ব চিত্র।
‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বার করা হল প্রায় পাঁচ মাস পর। অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গত ১৭ জুলাই প্রথম বার তিনি এসএসকেএম হাসপাতালেই ভর্তি হন। অগস্ট মাসে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। পরে ২২ অগস্ট থেকে আবার এসএসকেমে ভর্তি রয়েছেন সুজয়। ইডি সূত্রে খবর, রাতেই তাঁর গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। আপাতত জোকা ইএসআই হাসপাতালে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করার জন্য রাতেই তাঁকে আলাদা একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ৩টে ২০ নাগাদ ‘কাকু’কে আবার ইএসআই হাসপাতাল থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে ফেরত আনা হয়েছে। তবে কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের কাজটি রাতেই সম্পন্ন হয়েছে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বুধবার রাতে হঠাৎই এসএসকেএম হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিভাগের (যেখানে ‘কাকু’ চিকিৎসাধীন ছিলেন) সামনে এসে পৌঁছয় ইএসআই হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স। হাসপাতালের সামনে মোতায়েন করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। ইডি আধিকারিকেরাও এসএসকেএমে পৌঁছন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তখনই আন্দাজ করা গিয়েছিল, ‘কাকু’কে এসএসকেএম থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
রাতে দেখা যায়, এসএসকেএমের হৃদ্রোগ বিভাগের কেবিন থেকে বার করা হয়েছে সুজয়কে। খয়েরি রঙের চাদর মুড়ি দিয়ে ছিলেন ‘কাকু’। মুখে মাস্ক। হুইলচেয়ারে করে তাঁকে বার করে তোলা হয় অ্যাম্বুল্যান্সে। বেরোনোর সময়ে ‘কাকু’ কোনও কথা বলেননি। ইএসআই হাসপাতালেও অ্যাম্বুল্যান্স থেকে বার করে হুইলচেয়ারে তোলা হয় ‘কাকু’কে।
‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চায় ইডি। নিয়োগ মামলার তদন্তের স্বার্থে যা গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি কেন্দ্রীয় সংস্থার। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টার পরেও ‘কাকু’র স্বরের নমুনা মেলেনি। এমনকি, আদালতের নির্দেশের পরেও সংগ্রহ করা যায়নি নমুনা।
ওই নমুনা সংগ্রহ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল ইডি। নিয়োগ মামলার তারাই সুজয়কে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে জেল থেকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সুজয়কে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাদের দাবি ছিল, ‘কাকু’কে আড়াল করছে এসএসকেএম। ইচ্ছা করেই তাঁর স্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
বার বার এসএসকেএমে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে ইডিকে। এসএসকেএমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, ইএসআই হাসপাতালে ‘কাকু’কে নিয়ে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করা হোক। তাঁর গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করা যাবে কি না, তা-ও জোকা ইএসআইয়ের মেডিক্যাল টিম ঠিক করবে বলে জানিয়েছিল আদালত।
এর পরেই এক দিন ইএসআইতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ‘কাকু’র কেবিনের সামনে পৌঁছে গিয়েছিল অ্যাম্বুল্যান্স। কিন্তু সে দিনও তাঁকে হাসপাতাল থেকে বার করা যায়নি। এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, আগের রাত থেকে সুজয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাঁকে রাখতে হয়েছে আইসিইউতে। সে দিন ছ’ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে ফিরে গিয়েছিল ইডি।
বুধবার প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাই কোর্টে। বিচারপতি অমৃতা সিংহ রুদ্ধদ্বার শুনানি করেন। এই মামলায় মঙ্গলবারই বিচারপতি ইডির যুগ্ম ডিরেক্টর এবং ইএসআইয়ের মেডিক্যাল দলের প্রধানকে তলব করেছিলেন। রুদ্ধদ্বার শুনানিতে তাঁরা ছিলেন। নিয়োগ মামলার যে রিপোর্ট ইডি আদালতে জমা দিয়েছে, সেখানে ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ এবং তার সিইও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তি সংক্রান্ত রিপোর্টও ছিল। ওই সংস্থাতেই কাজ করতেন সুজয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy