ফাইল চিত্র।
সুরক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকলে পড়ুয়াদের আর কোনও মতেই রোয়িং প্রতিযোগিতায় পাঠানো হবে না। এমনটাই জানাচ্ছে শহরের বেশ কিছু স্কুল। তাদের মতে, গত শনিবার যতই দুর্যোগ হোক না কেন, পাড়ে যদি পর্যাপ্ত সংখ্যক ‘লাইফ সেভার’ বা ডুবুরিরা থাকতেন এবং স্পিড বোট থাকত, তা হলে হয়তো বেঘোরে প্রাণটা দিতে হত না সাউথ পয়েন্টের দুই ছাত্র, পূষন সাধুখাঁ এবং সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায়কে।
মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে জানালেন, তাঁদের স্কুলের দল প্রতি বছর এই আন্তঃরাজ্য রোয়িং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এ বার রবীন্দ্র সরোবরে যে আন্তঃস্কুল রোয়িং প্রতিযোগিতা হচ্ছিল, তাতে তাঁদের স্কুলের পড়ুয়ারাও অংশগ্রহণ করেছিল। যদিও সাউথ পয়েন্টের কাছে তারা কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যায়। তিনি বলেন, “সাউথ পয়েন্টের ওই দুই ছাত্র আমাদের স্কুলের না হলেও প্রতি মুহূর্তে ওদের কথাই মনে হচ্ছে। যারা রোয়িং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে, তারা প্রত্যেকেই দক্ষ সাঁতারু হয়। তবু কেন সরোবরে পর্যাপ্ত লাইফ সেভার ছিলেন না? কেন একটা স্পিড বোটও রাখা হয়নি সরোবরে?” রাজা জানান, কিছু দিনের মধ্যেই অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁরা জানিয়ে দেবেন, সুরক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকলে স্কুলের দলকে আর রোয়িং প্রতিযোগিতায় পাঠানো হবে না। সেই সঙ্গে অভিভাবকদের মত কী, তা-ও তাঁরা জেনে নেবেন।
সোমবার সাউথ পয়েন্টের তরফে স্কুলের অধ্যক্ষা রূপা সান্যাল ভট্টাচার্য ও স্কুলের আর এক প্রতিনিধি মৃত দুই ছাত্রের বাড়িতে যান। সৌরদীপের বাবা সৌভিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওঁরা সমবেদনা জানালেন। সেই সঙ্গে জানালেন, তাঁদের জানা ছিল না যে, রবীন্দ্র সরোবরে অনেক সুরক্ষা-বিধিই মানা হচ্ছিল না। কিন্তু এখন আর একে অপরকে দোষারোপ করে কী হবে? সুরক্ষা-বিধি ছাড়াই যে ওখানে একটা রোয়িং প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, তা কেউ আগে থেকে জানতে পারল না কেন? দোষী তো আমরা সবাই।”
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বললেন, “সুরক্ষা-বিধি পর্যাপ্ত না থাকলে এই ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা স্কুলপড়ুয়াদের পক্ষে কতটা ঠিক হবে, সেই সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত নেব। যত দিন পর্যন্ত পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা করা না হবে, তত দিন হয়তো রোয়িং করতে দেওয়া হবে না স্কুলের পড়ুয়াদের। এ বিষয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের মতামত জানা হবে।”
লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজ়ের সঙ্গেই রবিবার ফাইনালে নামার কথা ছিল সাউথ পয়েন্টের ওই চার পড়ুয়ার। লা মার্টিনিয়ারের সচিব সুপ্রিয় ধর বললেন, “এটা একটা দুর্ঘটনা। কিন্তু পর্যাপ্ত সুরক্ষা-বিধি থাকলে হয়তো প্রাণহানি এড়ানো যেত। আমাদের স্কুলের পড়ুয়ারা অনেক বছর ধরেই এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। যারা দক্ষ সাঁতারু, তারাই এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার ছাড়পত্র পায়। কিন্তু সাঁতার জানাটাই তো সব নয়। পর্যাপ্ত ডুবুরি কেন থাকবে না এত বড় একটা প্রতিযোগিতায়? কেন স্পিড বোট থাকবে না? একটা স্পিড বোট কতটা দূষণ করবে? সরোবরের পাশ দিয়ে তো প্রচুর গাড়ি যাচ্ছে। তাতে কি দূষণ ছড়ায় না?” সুপ্রিয়বাবুর আরও প্রশ্ন, এই ধরনের প্রতিযোগিতায় আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখা হবে না কেন? বিশেষত, এখন যখন পূর্বাভাস বেশির ভাগই মিলে যায়? তিনি বলেন, ‘‘এ বার স্কুলের কেউ এই প্রতিযোগিতায় নামতে গেলে আগে বার বার সব ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে তবেই পাঠানো হবে। স্কুলের প্রতিটি ছাত্র আমাদের সন্তানের মতো। তাদের কোনও রকম ক্ষতি মেনে নেওয়া যায় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy