প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রবেশিকা পরীক্ষা বন্ধের প্রতিবাদ জানালেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ। প্রবেশিকা না হলে আন্দোলনের পথে যাওয়ার কথাও তাঁরা জানিয়েছেন। পড়ুয়াদের মতে, রাজ্য সরকার প্রবেশিকা বন্ধের নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপরে কোনও ভাবেই চাপিয়ে দিতে পারে না। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার ক্ষুণ্ণ হয়।
বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে উপাচার্যদের বৈঠকে প্রবেশিকা পরীক্ষা বন্ধের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শেষ পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরে এ বার ভর্তি নেওয়ার নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ মেনেই বাতিল হয়েছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা। ওই পরীক্ষার দিন ঘোষণাও হয়ে গিয়েছিল। এই পরীক্ষা নিয়ে থাকে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। রাজ্য সরকারের নির্দেশে বৃহস্পতিবার বোর্ড পরীক্ষা বাতিলের কথা জানিয়েছে।
এ দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে প্রবেশিকা না হওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সংসদ উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, এ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার ক্ষুণ্ণ হতে দেওয়া যায় না। ওই ছাত্র সংসদের চেয়ারপার্সন জ্যোতির্ময় বিশ্বাস জানান, উপাচার্যকে তাঁরা লিখেছেন, প্রবেশিকা পরীক্ষা অবশ্যই নিতে হবে। এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক এবং অন্যান্য বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা হচ্ছে না। বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পড়ুয়াদের যে ফল তৈরি হচ্ছে, তা প্রশ্নাতীত নয়। তাই স্বাধিকারের কথা ভেবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মান অক্ষুণ্ণ রাখতে কর্তৃপক্ষকে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই নেতৃত্বাধীন কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের চেয়ারপার্সন তীর্ণা ভট্টাচার্য বলেন, “যে ভাবে উচ্চ মাধ্যমিক-সহ অন্যান্য বোর্ড বিকল্প মূল্যায়ন করে দ্বাদশের ফল তৈরি করছে, তা প্রহসন ছাড়া কিছু নয়। তাই প্রবেশিকা ছাড়া যাদবপুরে ছাত্র ভর্তি নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ক্ষুণ্ণ হবে।” তীর্ণার বক্তব্য, রাজ্য সরকার কখনওই প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে নিজেদের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরে চাপাতে পারে না। যদি সরকার এই সিদ্ধান্ত চাপানোর চেষ্টা করে, তা হলে তাঁরা আন্দোলনের পথে যাবেন।
এসএফআই নেতৃত্বাধীন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ বৃহস্পতিবারই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। শুক্রবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় এসএফআই ইউনিটের তরফে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের উপরে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপের তারা প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার ভঙ্গ করা যায় না।
প্রেসিডেন্সির অন্যতম ছাত্র সংগঠন ‘ইন্ডিপেন্ডেন্টস কনসলিডেশন’ও (আইসি) সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। আইসি-র পক্ষে অহন কর্মকার জানিয়েছেন, রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে কোনও এক নীতি অনুসরণ যোগ্য হতে পারে না। তাই একতরফা নীতি গ্রহণ করলে তা সকলের পক্ষে ক্ষতিকর। আইসি-র দাবি, প্রেসিডেন্সির প্রবেশিকা পরীক্ষা বন্ধের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত সকলের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ হয়। পড়ুয়ারা তা মেনে নেবেন না।
রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট) ইতিমধ্যে পেশাদার বিভিন্ন কোর্সে ভর্তির প্রবেশিকা সিইটি এবং ম্যানেজমেন্ট পড়ার জন্য প্রবেশিকা জেইম্যাট নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ম্যাকাউটের উপাচার্য সৈকত মৈত্র এ দিন বলেন, “উচ্চশিক্ষা দফতর স্থির করেছে একক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনও কোর্সে পড়ুয়া ভর্তির জন্য প্রবেশিকা নেওয়া যাবে না। এই পরীক্ষাগুলি সেই আওতায় পড়ে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy