প্রস্তুতি: স্কুল খোলার ঘোষণা হওয়ার পরে চলছে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কারের কাজ। সোমবার, শিয়ালদহের একটি স্কুলে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে গিয়েই পড়াশোনা করতে পারবে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে। পাড়ায় শিক্ষালয়ে যাবে সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুলের প্রাক্-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়ারা। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার পরে প্রশ্ন উঠেছে, বেসরকারি স্কুলের প্রাক্-প্রাথমিক বা নার্সারি থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়ারাই কি তা হলে ব্রাত্য হয়ে থাকল? তাদের ভরসা কি এখনও সেই অনলাইন ক্লাস? শিক্ষক এবং অভিভাবকেরা অনেকেই কিন্তু চাইছেন, করোনা-বিধি মেনে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল খুলে দেওয়া হোক।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু যদিও আগেই জানিয়েছিলেন, বেসরকারি স্কুলের প্রাথমিকের পড়ুয়ারাও যদি পাড়ায় শিক্ষালয়ে যায়, তা হলে সরকার তাদের সাহায্য করবে। কিন্তু বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের প্রশ্ন, অন্য বোর্ডের পড়ুয়ারা পাড়ায় শিক্ষালয়ে গিয়ে পড়াশোনা করবে কী করে?
এ দিন স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে খুশি বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক, অধ্যক্ষ ও অভিভাবকেরা। তবে তাঁদের অধিকাংশই চান, ধীরে ধীরে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদেরও স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ান্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “অভিভাবকেরা আমাদের জিজ্ঞাসা করছেন, সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল খুলবে কবে? পাড়ায় শিক্ষালয়ে তাঁরা ছেলেমেয়েদের পাঠাবেন না। অষ্টম নয়, প্রাক্-প্রাথমিক থেকেই স্কুল খোলা হোক। তা হলে বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়ারা সকলেই
স্কুলে যেতে পারবে।”
রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বললেন, “প্রাক্-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস চলছে। এ ভাবেই এখন চলবে। এ বার ধাপে ধাপে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল খুলে দিলে ভাল হয়।” হেরিটেজ স্কুলের অধ্যক্ষা সীমা সাপ্রু বলেন, “স্কুলে আসা মানে তো শুধু পড়াশোনা নয়, তাতে পড়ুয়াদের মানসিক বিকাশ ঘটে, চরিত্র গঠিত হয়। নার্সারি থেকেই এ সব শুরু হয়। তাই নার্সারি বা প্রাক্-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদেরও স্কুলে আসা জরুরি। বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়ারা তো পাড়ায় শিক্ষালয়ের সুবিধা নিতে পারবে না।” মডার্ন হাইস্কুল ফর গার্লসের ডিরেক্টর দেবী করের অবশ্য বক্তব্য, “প্রাক্-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলা উচিত কি না, তা চিকিৎসকেরাই বলতে পারবেন।”
চিকিৎসকেরা অনেকেই কিন্তু জানাচ্ছেন, স্কুল খুলে দেওয়া উচিত প্রাক্-প্রাথমিক থেকেই। রাজ্যের কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘স্কুল খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত। পাশাপাশি এটাই কামনা, এলিমেন্টারি বা প্রাথমিক স্কুলও খোলা হোক। স্কুল বন্ধ থাকায় বুনিয়াদি স্তরে পড়ুয়াদের ক্ষতি সব থেকে বেশি হয়েছে। এ দিনের সিদ্ধান্ত যদি প্রথম ধাপ হয়, তা হলে পরের ধাপের সঙ্গে যেন ব্যবধান খুব কম থাকে।” অভিজিৎবাবুর মতে, প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের ‘ব্রিজ’ পাঠ্যক্রম থাকা দরকার। এত দিন স্কুল বন্ধ থাকায় কোথায় কোথায় খামতি রয়েছে, তারও মূল্যায়ন প্রয়োজন।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য সম্পাদক পিন্টু পাড়ুই বলেন, “আমরা চাই, প্রাক্-প্রাথমিক থেকে স্কুল খোলা হোক। সমস্ত শ্রেণি খোলার দাবিতে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy