অবরোধের জেরে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে অ্যাম্বুল্যান্স। সোমবার, কলেজ স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র
অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের সামনে বেলা ১১টায় শুরু হয়েছিল পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। তবে তখনও কলেজ স্ট্রিটের একাংশ খোলা ছিল। ফলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা দিয়ে ধীরে হলেও গাড়ি চলাচল করছিল। কিন্তু দুপুর দেড়টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের পুরো রাস্তা জুড়েই বসে পড়লেন বিক্ষোভকারীরা। আর তখন থেকেই শুরু হল নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তি।
সোমবার, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই কলেজ স্ট্রিটের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার একাংশ অবরোধ হওয়ায় তার জের গিয়ে পড়ে আশপাশের বেশ কয়েকটি রাস্তা ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে। দেখা দেয় যানজট। কলুটোলা থেকে যে সব গাড়ি কলেজ স্ট্রিট হয়ে বিবেকানন্দ রোড যায়, অবরোধের জেরে সেই সব গাড়িকে সূর্য সেন স্ট্রিট ধরতে হয়। আবার, বৌবাজার থেকে কলেজ স্ট্রিট হয়ে বিবেকানন্দ রোডমুখী গাড়িগুলিকেও সূর্য সেন স্ট্রিটের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে সূর্য সেন স্ট্রিটে গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ওই রাস্তা এবং আশপাশের রাস্তাগুলিতে যানজট তৈরি হয়। কলেজ স্ট্রিট মোড়, বৌবাজার মোড়েও বিকেলে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকায় যানজট তৈরি হয়। অভিযোগ, এই ভোগান্তি চলে রাত পর্যন্ত।
কলেজ স্ট্রিটে দুপুর থেকে চলা ওই অবরোধের ফলে ভোগান্তির শিকার হন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগীরাও। তবে অবরোধ চললেও অ্যাম্বুল্যান্স যেতে দেওয়া হয়েছে। নানা কাজে কলেজ স্ট্রিটে আসা মানুষেরাও ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। সদ্য মাধ্যমিকের ফল বেরিয়েছে। হিন্দু ও হেয়ার স্কুলে কবে একাদশ শ্রেণির ভর্তির ফর্ম দেওয়া হবে, তা এ দিন জানতে এসে অবরোধে আটকে পড়েন উল্টোডাঙার রাজীব পাঠক ও তাঁর ছেলে প্রসেনজিৎ পাঠক। রাজীব বলেন, ‘‘ফর্মের খোঁজ নিতে এসেছিলাম। ছেলের জন্য বই কেনারও ইচ্ছে ছিল। কিন্তু যা বিশৃঙ্খল অবস্থা চলছে, তাতে বেশি ক্ষণ থাকার সাহস হচ্ছে না। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে চাই।’’ কলেজ স্ট্রিটে আসা কয়েক জনের অভিযোগ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডেন্সির সামনে অবরোধ কার্যত রোজকার ঘটনা হয়ে গিয়েছে। যে কোনও বিষয়েই অবরোধ হয়। তাঁদের প্রশ্ন, অনলাইনপরীক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ হতেই পারে, কিন্তু তার জন্য সাধারণ মানুষ ভোগান্তি পোহাবেন কেন? এ সব প্রশ্নের অবশ্য উত্তর মেলেনি অবরোধকারীদের কাছে। কলেজ স্ট্রিটের বিভিন্ন অংশে তাঁরা বসে পড়ে স্লোগান দিতে থাকেন। এমনকি, পুলিশ এক বার লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে গেলেও ফের তাঁরা ফিরে আসেন ও বিক্ষোভ চালিয়ে যান।
শুধু কলেজ স্ট্রিটে কাজে আসা মানুষজনই নন, অবরোধের জেরে বাড়ি ফিরতে দেরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরাও। শুধু মূল গেটেই নয়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো দিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে গেট রয়েছে, সেখানেও চলছিল বিক্ষোভ। উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে ওই গেট দিয়ে বেরোতে না পারেন, তাই সেটি আটকে রেখেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু এর জেরে ওই রাস্তা দিয়ে সাধারণ মানুষের যাতায়াতও বন্ধ হয়ে যায়।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক ওই গেট দিয়ে বেরিয়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছতে গিয়ে অবরোধের মধ্যেপড়েন। বেশ কিছু ক্ষণ সেখানে আটকে থাকার পরে তাঁর গাড়ি ছাড়া হয়। কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘কলেজ স্ট্রিটের ওই অংশে অবরোধ চললেও পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করায় মানুষের ভোগান্তি বিশেষ হয়নি। চিত্তরঞ্জনঅ্যাভিনিউয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যান চলাচল মোটের উপর স্বাভাবিকই ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy