Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

থাকে না পুলিশ, ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার পড়ুয়াদের

আশপাশে ছিল টানা রিকশার জট। সেই সবের ফাঁক গলে কোনও রকমে শিশুটি রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের স্কুলে পৌঁছে গেল।

প্রতিবাদ: দুর্ঘটনায় এক শিশুর মৃত্যুর পরে বিক্ষোভ। মঙ্গলবার, দমদমে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রতিবাদ: দুর্ঘটনায় এক শিশুর মৃত্যুর পরে বিক্ষোভ। মঙ্গলবার, দমদমে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৯
Share: Save:

‘আঙ্কল, প্লিজ স্টপ’ বলে সাত বছরের শিশুটি অটোর দিকে তাকিয়ে হাত তুলল। অটোচালক তার পরোয়া না করেই শিশুটির পায়ের সামনে জোরে ব্রেক কষলেন। আশপাশে ছিল টানা রিকশার জট। সেই সবের ফাঁক গলে কোনও রকমে শিশুটি রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের স্কুলে পৌঁছে গেল।

মঙ্গলবার সকালে দমদমের নাগেরবাজারে একটি স্কুলের কাছে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে এক স্কুলছাত্রীর। নাগেরবাজারের মতো ঘটনা আগেও বহু বার ঘটেছে এই শহরে। গত বছরের ৭ এপ্রিল তারাতলার কাছে বন্ধুদের সঙ্গে স্কুলে আসার সময়ে স্কুলের গেটের সামনেই ক্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল এক স্কুলছাত্রীর। ওই ছাত্রী স্কুলগাড়িতে চেপে আসছিল। ক্রেনটি ধাক্কা মারলে গাড়ির দরজা ভেঙে গিয়ে ওই ছাত্রী বাইরে পড়ে যায়। তখনই ক্রেনটি তাকে পিষে দেয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শিশুটির।

এ শহরের গুটিকয়েক নামী স্কুল ছাড়া অধিকাংশ স্কুলের সামনেই রাস্তা পার হতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় অভিভাবকদের। অভিযোগ, ট্র্যাফিক পুলিশ না থাকায় স্কুল শুরু ও ছুটির সময়ে ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পেরোতে হয় পড়ুয়াদের। গার্ডেনরিচের বাসিন্দা আমিনা বেগম প্রতিদিন তাঁর শিশুপুত্রকে ওই এলাকারই একটি স্কুলে পৌঁছে দিতে যান। আবার ছুটির সময়ে নিয়ে আসেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘গার্ডেনরিচ রোডে পুলিশ না থাকায় হাত দেখালেও গাড়ি থামে না। ঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছনোর তাড়া থাকায় প্রাণ বাজি রেখেই রাস্তা পেরোতে হয়। স্কুলের সামনে পুলিশের থাকাটা

খুব জরুরি।’’

রাজাবাজার এলাকায় একাধিক ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। সেখানে এক অভিভাবকের প্রস্তাব, ‘‘স্কুলের সামনে ব্যস্ত রাস্তায় জেব্রা ক্রসিং ও স্পিড ব্রেকারের ব্যবস্থা করা হোক। না হলে খুব অসুবিধা হচ্ছে।’’ খিদিরপুরের কাছে কয়েকটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল চালুর সময়ে ট্র্যাফিক পুলিশের দেখা মিললেও ছুটির সময়ে তাঁদের দেখা মেলে না।

আবার নিউ মার্কেট থানা এলাকার লেনিন সরণিতে কাছাকাছিই রয়েছে দু’টি নামী মেয়েদের স্কুল। অভিযোগ, সকালই হোক বা দুপুর, স্কুলের সামনে ট্র্যাফিক পুলিশের দেখা মেলে না কখনওই।

এ বিষয়ে পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, স্কুলের সামনে মোতায়েন করার জন্য পুলিশের আলাদা কোনও ইউনিট নেই। তবু বেশ কিছু স্কুল খোলা ও বন্ধ হওয়ার সময়ে সেখানে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের রাখা হয়। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘শিশুদের রাস্তা পারাপারে আমরা সব সময়েই সহযোগিতা করি। বিভিন্ন সময়ে ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে সচেতনতা-কর্মসূচিও নেওয়া হয়। অনেক স্কুলের আবার রাস্তা পারাপারের জন্য নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। পুলিশ তাঁদের সহযোগিতা করে।’’ ওই কর্তার কথায়, ‘‘শহরের প্রতিটি স্কুলের সামনে পুলিশ দেওয়ার মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই। তবে ব্যস্ত রাস্তা হলে স্কুল শুরু ও ছুটির সময়ে যাতে সেখানে সিভিক ভলান্টিয়ারদের মোতায়েন করা যায়, সে বিষয়ে ভাবা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Road Safety Traffic Traffic Jam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy