Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
board exam

করোনার মধ্যেই কি শেষ করতে হবে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা? উদ্বেগ

করোনা পরিস্থিতি যে রকম ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, তাতে এই মুহূর্তে কী ভাবে স্কুলে এসে পরীক্ষার্থীরা প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা দেবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২১ ০৬:৫২
Share: Save:

আগামী ৩১ মে-র মধ্যে দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা শেষ করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে ‘কাউন্সিল ফর ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশন’ (সিআইএসসিই)। শহরের অধিকাংশ স্কুল প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা শেষ করে ফেললেও কিছু স্কুল জানিয়েছে, তাদের এখনও সমস্ত প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নেওয়া শেষ হয়নি। কিন্তু বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি যে রকম ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, তাতে এই মুহূর্তে কী ভাবে স্কুলে এসে পরীক্ষার্থীরা প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা দেবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ।

করোনার জেরে প্রায় এক বছর বন্ধ থাকার পরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য খুলেছিল স্কুল। স্কুল এত দিন বন্ধ থাকায় সব চেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েছিল দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। কারণ, অনলাইনে পড়াশোনা হলেও স্কুল বন্ধ থাকায় প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস কার্যত কিছুই হয়নি। এ দিকে, দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা এগিয়ে আসায় ১২ ফেব্রুয়ারি স্কুল খোলার পরেই তড়িঘড়ি করে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করানো শুরু হয়। এর কিছু দিন পরেই কাউন্সিল জানিয়ে দেয়, ২২ মার্চ থেকে ৩১ মে-র মধ্যে নিতে হবে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা। অধিকাংশ স্কুল এই সময়সীমার মধ্যে যাবতীয় প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নিয়ে নিলেও শহরের কিছু স্কুল কিন্তু সমস্ত প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা এখনও নিয়ে উঠতে পারেনি।

চিন্তিত অভিভাবকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কেন প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা শেষ করতে পারল না ওই সমস্ত স্কুল? শহরের কয়েকটি স্কুলের অধ্যক্ষেরা জানিয়েছেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুলে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস শুরু হলেও করোনার বিধি মানতে গিয়ে বেশি সংখ্যক পড়ুয়াকে একসঙ্গে সেই ক্লাসে ডাকা যায়নি। ফলে ক্লাস শেষ হতে হতেই এপ্রিলের শেষ হয়ে যায়। কেউ আবার জানাচ্ছেন, ভোটের কারণেও স্কুলে কয়েক দিন প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস হতে পারেনি। উত্তর কলকাতার একটি স্কুলের অধ্যক্ষা আবার বললেন, “আমাদের স্কুলে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক দিনের মধ্যেই কয়েক জন শিক্ষকের করোনা ধরা পড়ে। তাই পরীক্ষা স্থগিত রাখতে হয়।”

এমনই বিভিন্ন কারণে বেশ কিছু স্কুল প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা শেষ করতে পারেনি। সিআইএসসিই বোর্ডের দক্ষিণ কলকাতার একটি জ়োনের আহ্বায়ক শুভ্রা পাল বললেন, “আমার জ়োনের বেশির ভাগ স্কুলই প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা শেষ করে ফেলেছে। কয়েকটি স্কুল এখনও পারেনি। ওদের ৩১ মে-র মধ্যে পরীক্ষা শেষ করতে হবে বলে এখনও পর্যন্ত জানি।”

যদিও প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা শেষ করতে না-পারা কয়েকটি স্কুলের অধ্যক্ষদের প্রশ্ন, এই পরিস্থিতিতে করোনা-বিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্কুলে পরীক্ষা হয়তো হবে, কিন্তু পরীক্ষার্থীরা তো গণপরিবহণে চড়ে স্কুলে আসবে। তাদের সঙ্গে মা-বাবারাও আসবেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরোটাই কি খুব ঝুঁকির হয়ে যাবে না? বোর্ডের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নিতে আসেন অন্য স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষিকারা। অধ্যক্ষদের প্রশ্ন, এই পরিস্থিতিতে তাঁরাই বা কী করে স্কুলে আসবেন? পরীক্ষা থাকলে স্কুলেও বেশ কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে উপস্থিত থাকতে হয়। তাঁদের পক্ষেও তো স্কুলে আসাটা ঝুঁকির হয়ে যাবে। তা ছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন কেউ যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন কী ভাবে পরীক্ষা শেষ হবে? তাই তাঁদের দাবি, সময়সীমা বাড়ানো হোক।

সিআইএসসিই বোর্ডের কর্তাদের একাংশের মতে, “প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার জন্য অনেকটা সময় দেওয়া হয়েছিল। তাই ৩১ মে-র পরে সময়সীমা বাড়ানোর সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। করোনা-বিধি কঠোর ভাবে মেনে, প্রয়োজনে পরীক্ষা নেওয়ার দিনের সংখ্যা বাড়িয়ে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নিতে হবে।” বোর্ডের আর এক কর্তা আবার বললেন, “সিআইএসসিই বোর্ড সব সময়ে পড়ুয়াদের কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত নেয়। পরিস্থিতি খুব খারাপ হলে ৩১ মে-র সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না, তা বিবেচনা করে দেখা হতে পারে।”

অন্য বিষয়গুলি:

board exam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy