গত কয়েক বছরে ঠিক কত পরিমাণ কার্তুজ এবং আগ্নেয়াস্ত্র বি বা দী বাগের অস্ত্র বিপণি থেকে দুষ্কৃতীদের কাছে পাচার করা হয়েছে, তা জানতে ওই দোকানে ফের হানা দিলেন রাজ্য পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দারা। শুক্রবার সকালে গোয়েন্দাদের একটি দল ওই দোকানে হানা দেয়। রাত পর্যন্ত গোয়েন্দারা সেখানেই ছিলেন। সেই অভিযান চলাকালীন সেখানে উপস্থিত ছিলেন দোকানের মালিকও। এ ছাড়া, ওই দোকানের যে দুই কর্মীকে বেআইনি ভাবে কার্তুজ ও আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদেরও এ দিন নিয়ে আসা হয় সেখানে।
এসটিএফের দলের সঙ্গে ছিল রাজ্য পুলিশের কেন্দ্রীয় অস্ত্রাগারের বিশেষজ্ঞদের একটি দল। এসটিএফের এক কর্তা জানান, ওই দোকানে কত আগ্নেয়াস্ত্র বা কার্তুজ রয়েছে, তা গণনা করে একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে কী কী ধরনের কার্তুজ রয়েছে এবং সেই সব কার্তুজ কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রে ব্যবহার করা হয়, তা জানার জন্য কেন্দ্রীয় অস্ত্রাগারের বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
সপ্তাহখানেক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থেকে ১৯০ রাউন্ড কার্তুজ-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেন এসটিএফের গোয়েন্দারা। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় একটি দোনলা বন্দুকও। পরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই সমস্ত কার্তুজ এসেছে বি বা দী বাগের একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত পুরনো অস্ত্রের দোকান থেকে। গোয়েন্দারা সেই দোকানের দুই কর্মী, জয়ন্ত দত্ত এবং শান্তনু সরকারকে গ্রেফতার করেন।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, বি বা দী বাগের লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্রের ওই দোকান থেকে শুধু কার্তুজ নয়, বেআইনি ভাবে আগ্নেয়াস্ত্রও বিক্রি করা হয়েছিল। তবে, কতগুলি আগ্নেয়াস্ত্র বা কার্তুজ সেখান থেকে বেআইনি ভাবে সরানো হয়েছে, তা নির্দিষ্ট করে জানা সম্ভব হয়নি বলেই এ দিন তালিকা তৈরির কাজ করা হয়েছে। সেই তালিকার সঙ্গে রেজিস্টার এবং মজুত কার্তুজ ও আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যা মিলিয়ে দেখা হবে। তাতেই বোঝা যাবে, ওই দুই কর্মী ঠিক কত সংখ্যক আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজ সেখান থেকে বেআইনি ভাবে সরিয়েছেন।
শুধু তা-ই নয়, প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, লাইসেন্স দেখিয়ে এই কাজ করা হয়েছে। তাই কার লাইসেন্স ব্যবহার করে ওই দোনলা বন্দুক এবং কার্তুজ পাচার করা হয়েছে, তা জানার জন্য তালিকা তৈরি করে তার সঙ্গে রেকর্ড মিলিয়ে দেখা হবে বলে প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)