ফাইল চিত্র।
একেবারে ‘শিয়রে সংক্রান্তি’। দক্ষিণ শহরতলির ছয়টি পুরসভার অধিকাংশ বিদায়ী পুরকর্তা ও ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরদের অবস্থা এখন অনেকটা এমনই। যার কারণ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের দফতর থেকে সপ্তাহখানেক আগে জারি করা এক নির্দেশিকা। যার জেরে আগামী পুর নির্বাচনে অনেক প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারা নিয়েই প্রশ্ন চিহ্ন পড়েছে।
দক্ষিণ শহরতলির মহেশতলা, বজবজ, বারুইপুর, জয়নগর-মজিলপুর এবং রাজপুর-সোনারপুর পুরসভায় নির্বাচন হয়েছিল ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল। শুধুমাত্র ডায়মন্ড হারবার পুরসভায় নির্বাচন হয়েছিল ২০১৩ সালে। শাসকদলের দখলে থাকা এই সবক’টি পুরসভায় চলতি বছরেই নির্বাচন হওয়ার কথা। এ জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের প্রার্থী তালিকা তৈরি করার কাজ শুরুও করে দিয়েছে বলে খবর। এমন অবস্থায় জারি হল সেই নির্দেশিকা।
নির্দেশিকাটি কী? বর্তমানে বিদায়ী পুরকর্তা এবং ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর-সহ বিভিন্ন দলের পরাজিত প্রার্থীদের নামের তালিকা রয়েছে নির্দেশিকায়। যেখানে জানানো হয়েছে, অধিকাংশ শাসকদলের বিদায়ী পুরকর্তা ও ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর-সহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরা গত পুর নির্বাচনের (মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে গণনা পর্যন্ত) খরচের হিসাব এখনও পর্যন্ত জমা করেননি। সেই খরচের হিসাব চলতি মাসের ১৭ তারিখের মধ্যে জমা না করা হলে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হবে।
এতেই মাথায় বাজ পড়ছে বেশির ভাগের। কারণ, এত বছর পরে খরচের সেই হিসাবের প্রতিলিপি খুঁজে পাওয়াই মুশকিল অনেকের কাছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, এই নির্দেশিকার পরে অবশ্য কয়েক জন খরচের হিসাবের প্রতিলিপি ফের দাখিল করেছেন। বিদায়ী পুরকর্তা এবং ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরদের দাবি, নির্বাচনের কয়েক মাস পরেই সমস্ত খরচের হিসাব সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের দফতরে তাঁরা জমা দিয়েছিলেন। তাঁদের প্রশ্ন, এত বছর বাদে হঠাৎ কেন এই নির্দেশিকা জারি হল?
নিয়ম হল যে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনের খরচের হিসাব জমা না দিলে কমিশনের তরফে নোটিস জারি করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে তলব করা হয়। পুরনো প্রার্থীদের দাবি, খরচের হিসাব যদি তাঁরা জমা না করে থাকেন, তা হলে তলবি নোটিস পাওয়ার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাঁরা কোনও নোটিসও পাননি। তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, একসঙ্গে প্রায় প্রতিটি পুরসভার প্রার্থীদের খরচের হিসাব জমা পড়ল না? তা এত বছর পর কেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নজরে এল? এই নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসকের দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাজ্য নির্বাচন কমিশন এই বিষয়টি জেলাশাসকের অফিসে জানিয়েছে। এর পরেই নির্দেশিকা জারি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের দাবি, সাত বছর আগের বিভিন্ন দফতরের অফিসারেরা এখন বদলি হয়ে গিয়েছেন। ওই সময়ে ঠিক কী হয়েছিল, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত যথাযথ উত্তর মেলেনি। ফলে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কারণ, গত নির্বাচনের খরচের হিসাব জমা না করে ওই প্রার্থী আসন্ন ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে আইনি জটিলতা তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।
একসঙ্গে এত প্রার্থীর খরচের হিসাব জমা না পড়ার ঘটনায় হতবাক জেলাশাসকের দফতরের অফিসারেরাও। দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আইনের পথে এই সমস্যার কী ভাবে সমাধান করা যায়, সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy