রজত এবং অনিন্দিতা দে
নিউ টাউনে আইনজীবী রজত দে-র অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তাঁর স্ত্রী-সহ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করছেন মৃতের পরিজনেরা। যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে সোমবার মৃতের স্ত্রী ও তাঁর পরিবারের বক্তব্য, তদন্ত হলে সত্য সামনে আসবে।
শনিবার গভীর রাতে নিউ টাউনের ডিবি ব্লকের বাসিন্দা আইনজীবী রজত দে-র মৃত্যু হয়। এই মৃত্যু এবং তার পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া নিয়ে দুই পরিবারের বয়ানে ভিন্ন মত সামনে এসেছে। রজতের স্ত্রী অনিন্দিতা-সহ শ্বশুরবাড়ির চার সদস্যের বিরুদ্ধে খুন ও তথ্য লোপাটের অভিযোগ করছে রজতের পরিবার। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আসার পরেই নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হবে।
রজতের পরিবার সূত্রের খবর, আইনজীবী রজতের সঙ্গে ২০১৬ সালে অনিন্দিতার বিয়ে হয়। রজতের বাবা সমীর দে জানান, রজত এবং অনিন্দিতা নিজেরা পছন্দ করেই বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের দেড় বছরের একটি সন্তানও রয়েছে। সমীরবাবুর অভিযোগ, ‘‘রজত অশান্তিতে ছিল। মূলত আর্থিক বিষয় নিয়েই অশান্তি।’’ যদিও অভিযোগ খারিজ করে অনিন্দিতা জানান, রজতের সঙ্গে কোনও অশান্তি ছিল না। তবে নিজের পরিবারের সঙ্গে রজতের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। সে কারণেই তাঁরা নিউ টাউনে ফ্ল্যাট কিনে থাকছিলেন।
ছেলের মৃত্যু স্বাভাবিক না বলার পক্ষে প্রশ্ন তুলেছেন সমীরবাবু। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘রজত অসুস্থ হওয়ার পরে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল না কেন? রজতের দেহ যে ঘরে ছিল, সেটি লণ্ডভণ্ড কেন ছিল?’’ তাঁর দাবি, ছেলের শরীরে দাগ ছিল, শরীর নীলবর্ণ হয়ে গিয়েছিল। তাঁদের সন্দেহ, রজতকে খুন করা হয়েছে।
রজতের পরিবারের অভিযোগ খারিজ করে অনিন্দিতা সংবাদমাধ্যমকে সোমবার জানান, তিনি এবং রজত শনিবার রাতে বাইরে খাওয়াদাওয়া সেরে ফেরেন। তিনি ঘুমোতে যান। রজত তখন পাশের ঘরে ছিলেন। রাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ আসার পরে তিনি পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন, রজত অচৈতন্য অবস্থায়। এর পরে তিনি বাড়ির লোককে খবর দেন। অনিন্দিতার দাবি, রজতের পরিবারের লোকেরা যখন তাঁদের ফ্ল্যাটে আসেন, তখন তাঁরা ঘটনাস্থলে ছিলেন।
অনিন্দিতার বাবা আইনজীবী অলোক পাল বলেন, ‘‘রজত সৎ এবং কর্মঠ ছেলে। এই ঘটনায় আমরা মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে ঘটনার সত্যতা সামনে আসবে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, দুই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সোমবার সকালে ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলে ঘুরেও এসেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ দিন জানান, সময় পেরিয়ে যাওয়ায় ময়না-তদন্ত হয়নি। পুলিশের সিদ্ধান্ত অনুসারে আজ, মঙ্গলবার ময়না-তদন্ত হবে।
রজতের পরিবারের তরফে আইনজীবী মহম্মদ জিশান উদ্দিন বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ পুলিশ হয়ে হাসপাতালে পৌঁছনো, এই পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে ময়না-তদন্তের নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy