দুর্বিষহ: এ ভাবেই বারুইপুরের কুলপি রোডের ধারে স্তূপীকৃত হয়ে থাকে আবর্জনা। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
রাস্তার ধারের বিশাল এলাকা জুড়ে পড়ে রয়েছে আবর্জনা। মাঝেমধ্যে সেই আবর্জনায় আগুন লেগে ধোঁয়ায় ঢাকছে চারধার। দূষণ এবং দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পথচলতি মানুষ। এই ছবি বারুইপুরের কীর্তনখোলা এলাকার।
জঞ্জালের ওই স্তূপের কাছেই রয়েছে রাণাবেলিয়াঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানে মাধ্যমিক পরীক্ষার আসন পড়ায় গত কয়েক দিন ধরে দুর্গন্ধ আর ধোঁয়ার সঙ্গে যুঝতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে এই পরিস্থিতির সঙ্গে অপরিচিত পড়ুয়ারা। পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের অভিযোগ, ধোঁয়া এবং দুর্গন্ধে কষ্ট হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। বারুইপুর পুরসভা সূত্রের খবর, কীর্তনখোলার ওই জায়গায় পুরসভার আবর্জনা ফেলা হয়।
গোটা বারুইপুর পুর এলাকা থেকে আবর্জনা এনে জমা করা হয় ওখানে। দিনের পর দিন আবর্জনা জমে স্তূপ হয়ে গিয়েছে ওই জায়গা। আবর্জনার পাহাড়ে গা ঘেঁষে এক দিকে কুলপি রোড। অন্য দিকে, বারুইপুর বাইপাসের সম্প্রসারিত অংশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, আবর্জনা প্রায়ই বাইপাসের উপর এসে পড়ে। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা তখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। ব্যস্ত রাস্তার ধারে এ রকম ভাবে কেন ময়লা ফেলা হবে, সেই প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, আবর্জনার স্তূপ থেকে সব সময়ই দুর্গন্ধ বেরোয়। তা ছাড়া কেউ বা কারা সেখানে আগুন ধরিয়ে দেন। এমনিতেই দুর্গন্ধের কারণে এলাকায় থাকা দায় হয়ে উঠছে। তার উপরে আবর্জনায় আগুন লেগে যে ধোঁয়া বেরোয়, তাতেও এলাকাবাসীর মধ্যে শ্বাসকষ্টের মতো অসুখ বাড়ছে।
কুলপি রোড এবং বাইপাস দিয়ে অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করেন। আবর্জনার পাশ দিয়েই আসা-যাওয়া করতে হয় পড়ুয়াদেরও। ধোঁয়া-দূষণের মধ্যে থেকে দীর্ঘদিন ধরে ওই পড়ুয়াদের নাজেহাল হওয়া নিয়ে স্কুলের তরফে পুর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। সম্প্রতি স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে এসে সেই একই সমস্যায় বেশ কয়েক জন পরীক্ষার্থীর অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মেয়েকে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসা সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘কিছু ক্ষণের জন্য বাইরে দাঁড়িয়েই কষ্ট হচ্ছে। ওরা কী ভাবে এতগুলো পরীক্ষা সুস্থ ভাবে দিতে পারবে, জানি না।’’
রাণাবেলিয়াঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানাইলাল দাস বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই ওখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। দুর্গন্ধ আর ধোঁয়ার জন্যে পড়ুয়া এবং শিক্ষক, সকলেরই সমস্যা হয়। এখন আবার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরাও একই অভিযোগ করছেন। পুরসভাকে জানিয়েও কাজ হয়নি। কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, ওখানে আবর্জনা পুনর্ব্যবহারের কাজে লাগানোর প্রকল্প হবে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করা হবে। তারই প্রস্তুতি চলছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জমা আবর্জনার সমস্যা অনেকটাই কমবে। আপাতত ধোঁয়ার সমস্যা মেটাতে নিয়মিত ওখানে জল ঢালা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুরসভা। উপ পুরপ্রধান গৌতম দাস বলেন, ‘‘জমা আবর্জনা থেকে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়। সেই গ্যাস থেকেই আগুন লেগে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। কেউ আগুন ধরাচ্ছে না। পুরসভা ওই এলাকায় নজর রাখছে। আগুন লাগলেই তা জল ঢেলে নেভানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy