Advertisement
E-Paper

দশমীতে বিসর্জনের রীতি মেনে অনেকে নেই কার্নিভালে

পুজোকর্তাদের অনেকের কাছেই কার্নিভালের খরচ দুশ্চিন্তার বিষয়। এক দিনের জন্য ট্রেলারের ভাড়া আকাশছোঁয়া! শোভাযাত্রায় আগে যেতে কার্যত সকাল থেকে লাইন দিতে হয়।

An image of Durga

বিদায়বেলা: রেড রোডে চলছে পুজো কার্নিভালের মঞ্চ তৈরির কাজ। তার সামনে দিয়েই বিসর্জনের জন্য গঙ্গার পথে প্রতিমা। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:০৪
Share
Save

বাংলার পুজো বিশ্বজনীন করে তোলার মঞ্চ হিসেবে রেড রোডের ভাসান কার্নিভালের কথা প্রায়ই বলে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কার্যত তাঁর পাড়ার পুজো সঙ্ঘশ্রীই কাল, শুক্রবার কার্নিভালে যেতে পারছে না। মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় মিলন সঙ্ঘ, যুব মৈত্রী, ফরোয়ার্ড ক্লাবেরা থাকলেও একদা দক্ষিণের গর্ব সঙ্ঘশ্রীই কার্নিভালে নেই।

এ কালে সঙ্ঘশ্রী অবশ্য নিতান্তই মধ্যবিত্ত পুজো। কিন্তু যে থিম তথা পুজো-শিল্পের জোরে কলকাতার পুজোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, সঙ্ঘশ্রী সেই ঘরানার অন্যতম পূর্বসূরি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের শৈশব-স্মৃতি জড়িয়ে এই পুজোয়। মুখ্যমন্ত্রীর ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ঘনিষ্ঠ সংযোগ আছে। যদিও সঙ্ঘশ্রীর যুগ্ম সম্পাদক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘মমতাদির ভালবাসা, অনুদান, সরকারি স্বীকৃতি আমাদের বড় সহায়। কিন্তু কার্নিভালে গেলে পাড়ার লোকের মন খারাপ হয়ে যাবে। আগে তাও গিয়েছি। পাড়ার লোক প্রতিমার সঙ্গে শাঁখ বাজিয়ে ফুল ছড়িয়ে ভাসানে যান। তা ছাড়া আমাদের দশমীতেই ভাসানের রীতি।”

দশমীতে ভাসানের রীতির প্রশ্নে বরাবরই কার্নিভাল-বিমুখ বাগবাজার, ম্যাডক্স স্কোয়ারের মতো ধ্রুপদী সাবেক পুজোও। এ বারও ভার্চুয়াল উদ্বোধনের সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে বাগবাজারের পুজোকর্তা অভয় ভট্টাচার্য সবিনয়ে তাঁর অপারগতার কথা প্রকাশ করেন। ১০৫ বছরে মাত্র দু’বার প্রাকৃতিক গোলযোগ এবং পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যায় বাগবাজারের ঠাকুর একাদশীতে জলে পড়েছে। মুদিয়ালির পুজোও দশমীর ভাসানের রীতির কথা বলেই কার্নিভাল থেকে বিরত থাকছে।

তবে পুজোকর্তাদের অনেকের কাছেই কার্নিভালের খরচ দুশ্চিন্তার বিষয়। এক দিনের জন্য ট্রেলারের ভাড়া আকাশছোঁয়া! শোভাযাত্রায় আগে যেতে কার্যত সকাল থেকে লাইন দিতে হয়। লাইনে ইট পাতার মতো প্রতিমাকে রাস্তায় বসানো অনেকের দৃষ্টিকটু লাগে। এই জাঁকে দু’-তিন লক্ষ টাকার বাজেট বাড়ে বলে পুজো কমিটি সূত্রের খবর। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের আশা, কম-বেশি ১০০টি পুজো কার্নিভালে থাকবে।

প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পুজো একডালিয়া এভারগ্রিন গত বারের মতো এ বারেও নেই। পুজোকর্তা স্বপন মহাপাত্র জানালেন, একডালিয়ার সম্পাদক গৌতম মুখোপাধ্যায় এবং সহ-সভাপতি তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় সদ্য মারা গিয়েছেন। শোকের আবহে একডালিয়া কার্নিভালে নেই। থাকছে না উত্তর কলকাতার শিকদার বাগানও। পুর নেতা সুশান্ত ঘোষের রাজডাঙা নব উদয় সঙ্ঘ প্রতিমা উঁচু হয়েছে বলে থাকছে না। টালা বারোয়ারির প্রতিমার কাঠামোর এক দিকে ভারতমাতা, অন্য দিকে দুর্গা! “উচ্চতা এবং প্রতিমা তোলার সমস্যায় যেতে পারছি না”, বলছেন পুজোকর্তা তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা অভিষেক ভট্টাচার্য। একদা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পুজো নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ এ বারের কার্নিভালে ফিরছে।

ভবতোষ সুতারের ১৫ ফুট উঁচু ফাইবারের বিদ্রোহী নারীর আদলে দুর্গা প্রতিমা নিয়ে যাবে বাগুইআটি অর্জুনপুরের ‘আমরা সবাই’। টালা প্রত্যয় আজ, বৃহস্পতিবার মণ্ডপেই প্রতিমা গলিয়ে ফেলবে। মণ্ডপে ঢোকার মুখে ফাইবারের তৈরি দুর্গা প্যানেল এবং নটরাজ নিয়ে তাঁরা কার্নিভালে যাবেন বলে জানালেন শিল্পী সুশান্ত পাল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja Carnival Durga idol immersion Bengali Tradition

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}