বৃহস্পতিবার থেকে সাধারণ যাত্রীদের জন্য খুলে যাচ্ছে শিয়ালদহ স্টেশনের দরজা। ফাইল ছবি
যাত্রীদের ভিড়ের কথা মাথায় রেখেই সদ্য উদ্বোধন হওয়া শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনে মোট ২৯টি টিকিট কাউন্টারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু সেখানে সব মিলিয়ে কর্মী সংখ্যা মাত্র ১৮! স্টেশনের দরজা খোলা-বন্ধ করা, স্টেশন পরিচালনা, টিকিট কাউন্টার, প্যানেল সামলানো-সহ পুরো স্টেশনের দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে ওই ১৮ জন কর্মীর কাঁধেই। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে সাধারণ যাত্রীদের জন্য খুলে যাচ্ছে ওই স্টেশনের দরজা। ফলে ব্যস্ত সময়ে যাত্রীদের ভিড় ও স্টেশনের হাজারো ঝক্কি কী ভাবে সামলাবেন ওই গুটিকয় কর্মী, সেই প্রশ্ন উঠছে।
আজ সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটে দিনের প্রথম ট্রেন শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ অভিমুখে এবং সকাল ৭টা নাগাদ সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহের দিকে যাত্রীদের নিয়ে ট্রেন ছাড়বে। এত দিন ফুলবাগান থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যেখানে দৈনিক আড়াই হাজার যাত্রী হত, সেখানে শিয়ালদহ পর্যন্ত পরিষেবা সম্প্রসারণের পরে সেই সংখ্যা এক ধাক্কায় ৩৫ হাজারে পৌঁছে যেতে পারে বলে অনুমান মেট্রো কর্তাদের। বছর দুয়েকের মধ্যে হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবা শুরু হলে ২০২৫ সালের পরে শুধু শিয়ালদহ স্টেশনেই দৈনিক যাত্রী সংখ্যা ১ লক্ষ ৮৩ হাজারেরও বেশি হতে পারে বলে অনুমান। কিন্তু এমন সম্ভাব্য অতিব্যস্ত স্টেশন সামলানোর গুরুদায়িত্বে রয়েছেন মাত্র ১৮ জন মেট্রোকর্মী।
ভবিষ্যতে যাত্রীদের ভিড় উপচে পড়তে পারে, সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই শিয়ালদহ স্টেশনের উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্ত মিলিয়ে মোট ২৯টি টিকিট কাউন্টার তৈরি করা হয়েছে। শহরতলির ট্রেন থেকে নেমে মেট্রোয় উঠতে চাওয়া যাত্রীদের বেশির ভাগই নতুন হবেন বলে অনুমান। তাই তাঁদের মেট্রোর ব্যবস্থার সঙ্গে সড়গড় করে তুলতে স্টেশনে পর্যাপ্ত কর্মীর প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। সেখানে মাত্র ১৮ জনের পক্ষে কী করে সবটা সামলানো সম্ভব হবে, সেই প্রশ্ন উঠছে। যদিও মেট্রো কর্তাদের ব্যাখ্যা, ভিড়ের কথা ভেবেই স্টেশন চত্বরে থাকছে ৫৩টি সিসি ক্যামেরা। এ ছাড়া রেল এবং অন্য স্টেশন থেকে বাড়তি কর্মীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে খবর। স্টেশন চত্বরে থাকছে ৪৫০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন বাতানুকূল যন্ত্রও।
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শিয়ালদহ স্টেশনে যাত্রীদের জন্য স্বয়ংক্রিয় টোকেন এবং ৫টি স্মার্ট কার্ড ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। ফলে টিকিট কাউন্টার কম খুললেও টিকিট কাটতে যাত্রীদের বেশি ভোগান্তি হবে না বলেই আশ্বস্ত করছেন মেট্রো আধিকারিকেরা।
তবে যাত্রীদের সুবিধার্থে ওই ২৯টি টিকিট কাউন্টার থেকে একইসঙ্গে রেল এবং মেট্রোর টিকিট কাটতে পারার মতো ব্যবস্থা থাকা উচিত বলে মনে করছেন অনেক যাত্রী। কারণ, উত্তর ও দক্ষিণ শহরতলি থেকে আসা লোকাল ট্রেন থেকে নেমে যাত্রীদের একাংশ যেমন মেট্রো ধরবেন, তেমনই অনেক মেট্রোযাত্রী লোকাল ট্রেন ধরতে ছুটবেন। তাই সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন বলে মত নিত্যযাত্রীদের একাংশের।
তবে যাত্রী পরিষেবা শুরুর আগে বুধবার একাধিক দাবিতে মেট্রোরেলের প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে মদন মিত্রের নেতৃত্বে পার্ক স্ট্রিটে মেট্রো ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন কর্মীরা। অভিযোগ, ২০১০ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে মেট্রোয় নিযুক্ত প্রায় ৫০০ কর্মী চাকরিতে উপযুক্ত সুযোগসুবিধা পাচ্ছেন না। এ ছাড়াও মেট্রো স্টেশনগুলিতে শূন্য পদে নিয়োগের দাবিও জানানো হয়। নতুন স্টেশনের জন্য কর্মী নেওয়া হলেও বিকল্প কাজ চালানোর লোক মিলছে না বলে সংগঠনের অভিযোগ। পরে মেট্রোর তৃণমূলের ট্রেড ইউনিয়নের কর্মী সংগঠনের সভাপতি মদন মেট্রোর পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানান। কর্তৃপক্ষ সমস্যামেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মদন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy