প্রতীকী ছবি। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
প্রেমিকাকে স্ত্রীর ফ্ল্যাট পাইয়ে দিতে বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে খুন করেছিল স্ত্রীকে। তারপর ভাড়াটে লোককে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ট্রলি ব্যাগে ভরে রেখে এসেছিল শিয়ালদহ স্টেশনে।
২০১৪ সালের সেই খুনের ঘটনায় সোমবার মৃতের স্বামী সুরজিৎ দেব, তার বান্ধবী লিপিকা পোদ্দার এবং ভাড়াটে অপরাধী সঞ্জয় বিশ্বাসকে ফাঁসির সাজা দিল আদালত। সোমবার শিয়ালদহের অতিরিক্ত জেলা বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস অভিযুক্তদের ফাঁসির নির্দেশ দেন।
ঘটনার সূত্রপাত ২০ মে ২০১৪। সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে ভিআইপি পার্কিংয়ে নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন শিয়ালদহ রেল পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর অভিজিৎ সাহা। তিনি লক্ষ্য করেন, সেখানে একটি ট্রলি ব্যাগ এবং একটি বেডিং দীর্ঘক্ষণ ধরে পড়ে রয়েছে। তার কোনও মালিক নেই। তিনি সঙ্গে সঙ্গে থানায় খবর দেন এবং পুলিশ ওই ট্রলি এবং বেডিং থানায় নিয়ে যায়।
সেখানে ওই ট্রলি এবং বেডিং খুলতেই আঁতকে ওঠেন পুলিশকর্মীরা। সেখানে ছিল এক মহিলার টুকরো টুকরো করে কাটা দেহ। প্রথমে মহিলাকে সনাক্ত করা না গেলেও, শেষ পর্যন্ত ট্রলির সূত্র ধরে পরিচয় জানা যায় মহিলার। লেকটাউনের ‘এ’ ব্লকের বাসিন্দা ছিলেন মৃতা জয়ন্তী দেব। জানা যায়, তাঁর স্বামী সুরজিৎ একটি বহুজাতিক সংস্থার কর্মী। দাম্পত্য সমস্যার কারণে প্রায় চার বছর তাঁরা আলাদা থাকেন। জয়ন্তী লেকটাউনের ফ্ল্যাটে থাকলেও, সুরজিৎ থাকেন বিরাটিতে।
আরও পডু়ন: ভ্রূণহত্যা? তিনমাসে একটিও কন্যাসন্তান জন্ম নেয়নি উত্তরকাশীর ১৩২ গ্রামে
তদন্তে জানা যায় সুরজিতের বান্ধবী লিপিকা পোদ্দারের কথা। এর পর পুলিশ সুরজিৎকে আটক করে জেরা শুরু করতেই প্রকাশ্যে আসে মূল কাহিনি। লিপিকার সঙ্গে সম্পর্কের জেরেই আলাদা থাকতেন সুরজিৎ। লিপিকা এবং সুরজিৎ মিলে জয়ন্তীকে খুন করার পরিকল্পনা করে লেকটাউনের ফ্ল্যাটটি হাতাতে। জয়ন্তীকে সরিয়ে ওই ফ্ল্যাটটি লিপিকাকে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল সুরজিৎ।
১৯ মে রাতে জয়ন্তীকে ফোন করে বিরাটিতে ডাকে সুরজিৎ। সেখানে ঘুমের মধ্যে গভীর রাতে পিলসুজ দিয়ে মাথায় আঘাত করে জয়ন্তীকে বেহুঁশ করে দেয় সে। এর পরে সেখানে আসে লিপিকা। দু’জনে মিলে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে জয়ন্তীকে। এর পর লিপিকা তার প্রতিবেশী সঞ্জয় বিশ্বাসকে ডেকে আনে। সঞ্জয় সব্জি কাটার বঁটি দিয়ে জয়ন্তীর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটে। দেহাংশ ভরা হয় বেডিং এবং ট্রলি ব্যাগে। এর পর ট্যাক্সি করে রেখে যায় শিয়ালদহ স্টেশনে।
আরও পডু়ন: বনগাঁ মন্তব্যের জের? হাইকোর্টে বিচারপতির এজলাস বয়কট সরকারি আইনজীবীদের
অভিজিৎ সাহা এই মামলার তদন্তকারী অফিসার। পুলিশ লিপিকা, সুরজিৎ এবং সঞ্জয়কে গ্রেফতার করার পর তিন মাসের মধ্যে চার্জশিট জমা দেয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২(খুন), ২০১(তথ্যপ্রমাণ লোপাট) এবং ১২০ বি(ষড়যন্ত্র)–র অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। এ দিন বিচারক বলেন, যেভাবে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে খুন করে প্রমাণ লোপাট করেছিল অভিযুক্তরা, তা বিরল অপরাধের নজির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy