ফাইল চিত্র।
আদালতের নির্দেশের পরে বুধবার থেকে বিড়লা গোষ্ঠীর তিনটি স্কুল— জি ডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশন, অশোক হল এবং মহাদেবী বিড়লা শিশু বিহারে সমস্ত পড়ুয়াই ক্লাস করতে পারল। যে সমস্ত পড়ুয়ার ফি বকেয়া রয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তাদের স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, এ দিন তারাও স্কুলে যায় ও ক্লাস করে। অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, তাঁদের ছেলেমেয়েরা পরবর্তী ক্লাসে ওঠার রিপোর্ট কার্ডও পেয়েছে। কিন্তু সেই সঙ্গে অভিভাবকদের অভিযোগ, ওই রিপোর্ট কার্ডের নীচে লেখা রয়েছে, বকেয়া ফি মিটিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।
অভিভাবকদের প্রশ্ন, এই ভাবে কি রিপোর্ট কার্ডে ফি সংক্রান্ত কোনও কথা লেখা যায়? তাঁদের দাবি, তাঁরা আদালতের নির্দেশ মেনে ফি মিটিয়েছেন। তার পরেও কী ভাবে রিপোর্ট কার্ডে এমন লেখা হচ্ছে?
সম্প্রতি ফি নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই স্কুলের সামনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বলে দাবি করে নোটিস দিয়ে চার দিনের জন্য ক্লাস বন্ধ করে দেয় ওই তিন স্কুল। এর পরে গত ১১ এপ্রিল থেকে স্কুল খুললেও নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, স্কুলে শুধু তারাই ক্লাস করার অনুমতি পাবে, যারা পুরো বেতন মিটিয়েছে। যে সব অভিভাবক জানিয়েছিলেন, তাঁরা আদালতের নির্দেশ মতো ফি দেওয়া সত্ত্বেও স্কুল তা মানছে না এবং তাঁদের সন্তানদের স্কুলে ঢুকতে দিচ্ছে না, তাঁদের কয়েক জন গত ১১ এপ্রিল স্কুলে গেলে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এর পরে ওই অভিভাবকেরা ফের আদালতের দ্বারস্থ হন।
মঙ্গলবার হাই কোর্টে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, বেতন বকেয়া থাকলেও কোনও পড়ুয়াকে ক্লাস করা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। ওই ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, স্কুল পড়ুয়াদের পড়াশোনায় বাধা দিতে পারে না। সেই সঙ্গে বকেয়া বেতন এবং স্কুলের সামনে আইনশৃঙ্খলাজনিত কারণ দেখিয়ে যে নির্দেশিকা স্কুলগুলি দিয়েছিল, তা-ও ঠিক নয় বলে জানায় কোর্ট। ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করতেও বলা হয়।
যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, আদালতের নির্দেশ মতোই তাঁরা ফি নিচ্ছেন। এমনকি, আদালত করোনা কালে ২০ শতাংশ ফি মকুব করার কথা বললেও অনেক অভিভাবক সেই নির্দেশ মতো ফি দেননি। আবার অভিভাবকদের দাবি, আদালতের নির্দেশ মেনেই করোনা কালের ফি তাঁরা মিটিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, নতুন শিক্ষাবর্ষেও কয়েক গুণ ফি বৃদ্ধি করেছে স্কুলগুলি।
অভিভাবকেরা জানান, এ দিন তাঁদের সন্তানেরা স্কুলে গিয়ে রিপোর্ট কার্ড পেলেও তার তলায় বকেয়া ফি মেটানোর কথা দেখে তাঁরা হতভম্ব। রাজীব ঘোষ নামে এক অভিভাবক বললেন, “আমরা আদালতের নির্দেশ মেনেই ফি দিয়েছি। এর পরেও কী ভাবে রিপোর্ট কার্ডে বকেয়া ফি-র কথা স্কুল কর্তৃপক্ষ লেখেন? আমরা বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছি। কিন্তু তাঁরা কিছুই বলতে চাননি। বিষয়টি আমাদের আইনজীবীকে জানাব।”
এ দিন ওই তিন স্কুলের কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য না করলেও একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, আদালতের ১৯ এপ্রিলের নির্দেশ মতো স্কুলের সমস্ত পড়ুয়াই ক্লাস করতে পারবে।
অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, নতুন শিক্ষাবর্ষেও ফি বাড়ানো হয়েছে নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে। মৌমিতা চন্দ চক্রবর্তী নামে এক অভিভাবক বলেন, “স্কুল খোলার পরে নতুন শিক্ষাবর্ষে ফি বাড়ানো হয়েছে
৫৭ শতাংশ। এক লাফে ফি এতটা বাড়ানো যায় কি না, সেটাও বিবেচ্য বিষয়। আমরা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ফি মিটিয়েছি।” মৌমিতা জানান, আদালত একটি কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটি খতিয়ে দেখবে, তাঁদের কাছ থেকে স্কুল টাকা পাবে, না কি তাঁরা স্কুলের থেকে টাকা পাবেন। আগামী ৬ জুন সেই রিপোর্ট আদালতকে দেবে কমিটি। মৌমিতা বলেন, “আগামী ৬ জুন কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার পরে পরবর্তী শুনানি হবে ১০ জুন। সব দিক দেখে তার পরেই আমরা নতুন শিক্ষাবর্ষের ফি মেটানো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy