প্রতীকী ছবি।
অচেনা নম্বর থেকে মোবাইলে মেসেজ এসেছিল, ‘বাজেটের পরে ইমিটেশনের গয়নার দাম বেড়ে যাচ্ছে। আগের দামেই ভাল জিনিস পেতে সঙ্গে দেওয়া লিঙ্কে দেখুন’। সামনে মেয়ের বিয়ে। সোনার গয়নার সঙ্গে কিছু ইমিটেশন গয়নাও কেনার ইচ্ছে ছিল পর্ণশ্রীর রবীন্দ্রনগর এলাকার বাসিন্দা এক প্রাক্তন রেলকর্মীর। লিঙ্কে ক্লিক করার পরে তাঁর কাছে ফোন আসে। বলা হয়, মোবাইল থেকে কিনতে একটি অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতে হবে। এর পরে একটি গয়নার দাম দিলেই বিনামূল্যে মিলবে আরও দু’টি!
সন্দেহ হওয়ায় আর এগোননি ওই ব্যক্তি। উল্টে ফোন এবং মেসেজ যে দু’টি নম্বর থেকে এসেছিল, সেগুলিকে নিজের ফোনে ব্লক করে লালবাজারের সাইবার শাখায় পাঠিয়ে দেন তিনি। ইমিটেশন গয়নার ওয়েবসাইটের লিঙ্কও পাঠান। তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে, বৈধ ওয়েবসাইট যেখানে শুরু হওয়ার কথা ‘https://’ দিয়ে, সেখানে এটি শুরু হয়েছে ‘http://’ দিয়ে। যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল, সেটির খোঁজ করে আরও অবাক পুলিশ। দেখা যায়, সিম কার্ডটি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এক উচ্চপদস্থ কর্তার নামে নেওয়া। তিনি কিছুই জানেন না।
কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। কলকাতার অনেকেই বাজেটের নামে এমন ফোন বা মেসেজ পেয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। কারও কাছে ফোন বা মেসেজ এসেছিল বাজেট ঘোষণার আগে। কাউকে আবার ফোন করা হয়েছে বাজেট ঘোষণার পর থেকে বুধবার রাতের মধ্যে। আগে আসা ফোন বা মেসেজে কোনও একটি নির্দিষ্ট পণ্য বা পরিষেবার নাম করে দাবি করা হয়েছে, সেগুলির খরচ অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যেতে পারে। তাই আগাম সেগুলি কিনে রাখার জন্য অফার চলছে। অভিযোগ, এমনও ফোন এসেছে যে, বাজেট ঘোষণার সময়ে নতুন হেলথ কার্ডের কথা বলা হবে। সেই কার্ডের সঙ্গে ফোন নম্বর, আধার এবং প্যান কার্ড যুক্ত করতে হবে। ঘোষণার পরে এ নিয়ে চাপ বাড়বে, তাই আগেই করে নিলে ভাল। ঘোষণার পরে আবার সব চেয়ে বেশি ফোন এবং মেসেজ এসেছে এই বলে, যে সব সামগ্রীর দাম বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত রয়েছে, সেগুলি এখনই কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
কিন্তু পুলিশ এবং অর্থনীতির শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, যে কোনও বাজেট আগামী অর্থবর্ষের জন্য ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার যে বাজেট পেশ হয়েছে, তা এখন বিল আকারে সংসদে পাশ হবে। তার পরে সেই বাজেট কার্যকর হবে আগামী ১ এপ্রিল, নতুন অর্থবর্ষের শুরু থেকে। ফলে রাতারাতি কোনও কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ার বা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে কোনও সংস্থা চাইলে ছাড় দিয়ে পুরনো স্টক বিক্রি করে দিতে পারে। কিন্তু এমন সংস্থার সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে।
আরও একটি বিষয়ে সতর্ক হতে বলছেন তদন্তকারীরা। প্রতারকেরা সমাজের কোনও প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বা কোনও সংস্থার কর্তা-ব্যক্তিদের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিচ্ছে। তাঁদের ইমেল আইডি জোগাড় করে লাগাতার তাতে ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত মেল পাঠাচ্ছে। সেই পথেই জোগাড় করছে তাঁদের ফোন এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর। পরে সেই নম্বরের সিম হারানোর ভুয়ো জেনারেল ডায়েরির কপি এবং ভুয়ো নথি বানিয়ে মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার অফিসে গিয়ে নম্বরটি বন্ধ করিয়ে দিচ্ছে। ওই নম্বরে নতুন সিম বার করে তাই দিয়েই চলছে লাগাতার প্রতারণার ফোন। বৈধ ব্যবহারকারী হয় দেখছেন সিমটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে গিয়েছে, নয়তো মেসেজ আসছে না। যত ক্ষণে তিনি মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করছেন, তত ক্ষণ ওই সিম দিয়ে প্রতারণা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy