থইথই: জলে ভাসছে সল্টলেকের তথ্যপ্রযুক্তি তালুক। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
রাত থেকে চলা একটানা বৃষ্টিতে জলে টইটম্বুর হয়ে গিয়েছিল মূল নিকাশি খাল। তার সঙ্গে যুক্ত হয় গঙ্গার জোয়ার আর কুলটিতে বৃষ্টির জল নিষ্কাশন কেন্দ্রে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। যার জেরে সল্টলেক থেকে শুরু করে কলকাতা বিমানবন্দর ও দমদমের বিস্তীর্ণ এলাকা শনিবার জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হওয়ার পরে কুলটির ওই কেন্দ্রে ফের কাজ শুরু হয়। তার পরেই বিকেল থেকে ধীরে ধীরে পূর্ব কলকাতায় জল নামতে শুরু করে। সেচ দফতর জানিয়েছে, কুলটির ওই কেন্দ্রে পাম্পের কোনও সমস্যা হয়নি। ঘণ্টা দু’য়েক বিদ্যুৎ না থাকায় পাম্প চালানো যায়নি।
এ দিন দুপুরে বিধাননগরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে জলমগ্ন একটি বাড়িতে ইনভার্টার ছুঁতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম অজয় বেরা (৪৬)।
বৃষ্টিতে সল্টলেকের বিভিন্ন ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বেহাল দশা হয় করুণাময়ী আবাসনের। অন্য দিকে, সুকান্তনগর থেকে শুরু করে কুলিপাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকাও জলে ডুবে যায়। জলবায়ু বিহার আবাসন এলাকাও চলে যায় জলের নীচে। পুরসভা সূত্রের খবর, সেখানে মেট্রোর কাজের জেরে নিকাশি নালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ দিন সকালে সেখান থেকে জল বার করার অস্থায়ী ব্যবস্থা করে পুরসভা। দত্তাবাদের নিচু এলাকায় জল জমলেও তুলনায় দ্রুত নামানো গিয়েছে। কিন্তু সল্টলেকের ডিডি ব্লক পুরোপুরি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। সেখানে হাসপাতাল থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি বেশ কিছু অফিস রয়েছে। এ দিন সকালে মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী-সহ কয়েক জন কাউন্সিলর এলাকা পরিদর্শনে বেরোন। মেয়র জানান, কাউন্সিলর ও পুরকর্মীরা রাস্তায় নেমে কাজ করছেন। ত্রাণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
নবদিগন্ত সূত্রের খবর, বাগজোলা ও অন্যান্য খাল উপচে পড়ায় জল ‘ব্যাক ফ্লো’ করেছে। বিকেল থেকে অবশ্য ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে জল। রাস্তা ভেসে যাওয়ায় সকালের দিকে প্রবল দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। নবদিগন্ত, এনকেডিএ এবং হিডকো কন্ট্রোল রুম চালু করেছে।
রাজারহাট-গোপালপুরের ২৭টি ওয়ার্ডের অধিকাংশই এ দিন জলমগ্ন হয়ে পড়ে। সব চেয়ে বেহাল দশা হয় চিনার পার্ক ও হলদিরাম এলাকার। এ দিন সেখানে পরিদর্শন করতে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যান প্রাক্তন মেয়র পারিষদ দেবাশিস জানা। তিনি রাস্তায় থাকাকালীন খুব কাছেই বাজ পড়ে। অল্পের জন্য রক্ষা পান দেবাশিসবাবু ও কয়েক জন সাংবাদিক।
দেবাশিসবাবুর কথায়, ‘‘জোয়ার, একটানা বৃষ্টি আর কুলটির জল নিষ্কাশন কেন্দ্রে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে অতিরিক্ত পাম্প চালিয়েও বিধাননগর পুর এলাকা থেকে বেশি জল সরানো যায়নি। ‘ব্যাক ফ্লো’ করে এলাকায় ঢুকে পড়েছে জল। তবে দুপুরে কুলটির ওই কেন্দ্র কাজ শুরু করায় জল নামতে শুরু করেছে।’’
ভিআইপি রোডের বিস্তীর্ণ অংশে জল জমায় এ দিন এক দিকের লেন ধরেই দু’দিকের যান চলাচলের ব্যবস্থা হয়েছিল। বিধাননগর পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িচালকদের ভিআইপি রোডের বদলে নিউ টাউনের রাস্তা ধরার অনুরোধ করা হয়েছে। ফলে বিমানবন্দরে পৌঁছতে কিছুটা বেশি সময় লেগেছে।
এ দিন সকালে স্থানীয় বিধায়ক তথা বনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং দক্ষিণ দমদম পুরসভার কয়েক জন কাউন্সিলর বাজ পড়ে মৃত সুবীর পালের দমদমের বিবেকানন্দ পল্লির বাড়িতে যান। সুবীরবাবুর মেয়ের পড়াশোনার ব্যয়ভার বহনের আশ্বাস দেন মন্ত্রী। পাশাপাশি তাঁর স্ত্রীর চাকরি এবং আর্থিক সহযোগিতার বিষয়েও চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy