Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
RVNL

জলাশয় ফিরে পাননি মাছ চাষিরা, জোটেনি ক্ষতিপূরণও

১৯৮৮ সালের পরে ইএম বাইপাস লাগোয়া পাটুলির বিভিন্ন জলাশয় মৎস্য দফতরের অধীনে আসে। ওই সমস্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বাড়াতে মৎস্য দফতর মাছ চাষিদের নিয়ে একটি সমবায় সমিতি তৈরি করে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২০ ০২:২৪
Share: Save:

গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর কাজের জন্য ইএম বাইপাস লাগোয়া পাটুলিতে প্রায় চার হেক্টরের ছ’টি জলাশয় ‘রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেড’ বা আরভিএনএল-কে শর্তসাপেক্ষে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল রাজ্য মৎস্য দফতর। শর্ত ছিল, মেট্রোর নির্মাণকাজ শেষ হলে ২০১৬ সালের মধ্যে জলাশয়গুলি পুনরায় আগের চেহারায় ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে পাঁচ বছর ধরে ওই সমস্ত জলাশয়ে মাছ চাষ বন্ধ রাখার জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় সাড়ে ৮৪ লক্ষ টাকা দিতে হবে মাছ চাষিদের। অভিযোগ, ২০১৬ সালের পরে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও মাছ চাষিরা ক্ষতিপূরণের বেশির ভাগটাই পাননি। জলাজমিও আগের অবস্থায় ফেরানো হয়নি।

১৯৮৮ সালের পরে ইএম বাইপাস লাগোয়া পাটুলির বিভিন্ন জলাশয় মৎস্য দফতরের অধীনে আসে। ওই সমস্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বাড়াতে মৎস্য দফতর মাছ চাষিদের নিয়ে একটি সমবায় সমিতি তৈরি করে।
যার নাম দেওয়া হয় ‘বৃজি পাটুলি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি’। রাজ্যের বিভিন্ন জলাশয় এমনই বিভিন্ন সমবায় সমিতিকে লিজ়ে
দিয়ে টাকা আয় করে মৎস্য দফতর। ওই দফতর সূত্রের খবর, মেট্রোর কাজের জন্য ২০১১ সালে আরভিএনএল কর্তৃপক্ষ বাইপাস লাগোয়া ছ’টি জলাশয় নিয়েছিল। তার জন্য মৎস্য দফতর, ‘বৃজি পাটুলি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি’ এবং আরভিএনএল কর্তৃপক্ষের মধ্যে চুক্তিও হয়েছিল।

সেই চুক্তি অনুযায়ী, পাঁচ বছর পরে ওই জলাজমি আগের চেহারায় ফিরিয়ে দিতে হবে। আর প্রতি বছর মাছ চাষের গড় উৎপাদনের নিরিখে পাঁচ বছরের মোট আয় ধরে সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৮৪ লক্ষ টাকা ওই সমিতিকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দিতে হবে। কিন্তু অভিযোগ, নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরোনোর পরে তিন বছর কেটে গেলেও সমিতি হাতে পেয়েছে মাত্র ১৭ লক্ষ টাকা।

সমিতির চেয়ারম্যান গফুর হালদারের অভিযোগ, ‘‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আরভিএনএলের কাছ থেকে প্রাপ্য টাকা পাচ্ছি না। তার উপরে জলাশয়গুলিও ফিরে পাইনি এখনও। সব মিলিয়ে ভীষণ কষ্টে রয়েছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘৬৫ জন চাষি মিলিয়ে প্রায় ৪০০ জনের জীবন এই মাছ চাষের আয়ের উপরে নির্ভরশীল। চুক্তি অনুযায়ী মৎস্য দফতরকে বছরে লক্ষাধিক টাকা দিতে হয় আমাদের। আরভিএনএলের টাকা না পেলে সেই টাকা কোথা থেকে দেব?’’

সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত মৎস্য দফতরের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক কৃষ্ণেন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বকেয়া টাকার জন্য আরভিএনএল কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি পাঠিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘চুক্তি অনুযায়ী, তিন মাস পর পর সমিতিকে টাকা
দেওয়ার কথা আরভিএনএলের। কিন্তু সেই নিয়ম মানা হয়নি। ২০১৬-র মার্চের পরে সমিতি কোনও টাকাই পায়নি।’’

এ বিষয়ে আরভিএনএলের প্রোজেক্ট ম্যানেজার এ কে রায়ের বক্তব্য, ‘‘জমি-জটের কারণে গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয়নি। কাজ শেষ হলেই আমরা ওই সমস্ত জলাশয় ফিরিয়ে দেব।’’ ক্ষতিপূরণের বকেয়া টাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দ্রুত ফাইল খতিয়ে দেখে সমস্যার সমাধানে ব্যবস্থা নেব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

RVNL Patuli
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy