অঘটন: নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উড়ালপুলের রেলিংয়ে ধাক্কা মারে গাড়িটি। বাইপাস থেকে লেকটাউন যাওয়ার পথে। শনিবার। ছবি: শৌভিক দে
ট্র্যাফিকের পরিকাঠামোয় সংস্কার, নিয়মিত পুলিশি অভিযান এবং লাগাতার সচেতনতার প্রচার করে চলেছে বিধাননগর পুলিশ। তবুও হুঁশ ফিরছে না চালক এবং পথচারীদের একাংশের। যার জেরে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোরের মধ্যে পরপর দু’টি দুর্ঘটনা ঘটে গেল বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায়। ওই দু’টি ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার এবং তিন জন আহত হয়ে ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে।
শুক্রবার রাত ৯টার কিছু পরে সল্টলেকের পিএনবি মোড় ছাড়িয়ে ফাঁড়ি বাসস্টপের কাছে প্রথম দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, করুণাময়ী থেকে একটি বেসরকারি রুটের বাস উল্টোডাঙার দিকে যাচ্ছিল। ফাঁড়ি বাসস্টপের কাছে তখন রাস্তা পেরোচ্ছিলেন চন্দননগরের বাসিন্দা ঝর্না কুমার (৭২) নামে এক মহিলা। বাস আসতে দেখে তিনি খানিকটা হকচকিয়ে গিয়ে রাস্তার মাঝেই দাঁড়িয়ে পড়েন। আচমকা রাস্তার মাঝে এক পথচারীকে দেখে বাসটির চালক গতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধার। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এর আগেও ওই জায়গায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে। বারবার দুর্ঘটনা ঘটা সত্ত্বেও বাসস্টপটির কাছে ট্র্যাফিক পুলিশের নজরদারি সেই তুলনায় কম রয়েছে। আবার পুলিশের একাংশের অভিযোগ, যাত্রীরাও বাসের জন্য যত্রতত্র দাঁড়িয়ে পড়েন। বাস বা অটোগুলিও খুশিমতো জায়গা থেকে যাত্রী তোলে এবং নামায়। অনেক সময়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে পথচারীদের অসতর্কতাও বিপদ ডেকে আনছে। স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম দে বলেন, ‘‘ওই বাসস্টপের আগে এবং পরে দু’টি আইল্যান্ড পার করেই গতি বাড়িয়ে দেন চালকেরা। অথচ দু’টি আইল্যান্ডের মাঝে থাকা ওই বাসস্টপে অসংখ্য মানুষ রাস্তা পারাপার করেন। তবু বেশির ভাগ চালক সতর্ক থাকেন না।’’
দ্বিতীয় দুর্ঘটনাটি ঘটে শনিবার ভোরে, ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস থেকে লেক টাউন যাওয়ার পথে উড়ালপুলের উপরে। পুলিশ সূত্রের খবর, লেক টাউনের দিকে যাচ্ছিল একটি গাড়ি। এ ক্ষেত্রে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উড়ালপুলের গার্ডওয়ালে ধাক্কা মারেন। সেই গাড়িতে চালক ছাড়াও ছিলেন দুই মহিলা। ঘটনায় তিন জনেই আহত হন। এর আগেও ওই উড়ালপুলে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বিধাননগর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়ির বেপরোয়া গতিতে রাশ টানতে বছরভর
হাম্প, স্পিড ব্রেকার, স্পিড ক্যাম, সিগন্যাল ব্যবস্থা করা হয়েছে, সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নিয়মিত নজরদারিও চলছে। নিয়ম ভাঙলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, চালকের লাইসেন্স সাময়িক সময়ের জন্য বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। তবুও দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, নতুন বছর থেকে দুর্ঘটনা রুখতে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হবে। ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি এবং অন্যান্য সচেতনতার প্রচার আরও জোরদার করা হবে। সিসি ক্যামেরা ও স্পিড-ক্যামের সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তাভাবনাও চলছে। তাঁর দাবি, ‘‘বছরভর বিধাননগর পুলিশ ট্র্যাফিক সচেতনতা নিয়ে কাজ করায় সমস্যা আগের তুলনায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy