পলিগ্রাফ পরীক্ষায় মোট ১০টি প্রশ্ন করা হয় আরজি কর-কাণ্ডে ধৃতকে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর নয়, তাঁর সম্বন্ধে জানতে হলে যেতে হবে অন্য একটি সরকারি হাসপাতালে। পলিগ্রাফ পরীক্ষায় এমনটাই দাবি করেছেন আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, ধৃত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেছেন। যদিও তাঁর বক্তব্য যাচাই করা প্রয়োজন বলেও মেনে নিয়েছেন আইনজীবী। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতেই অভিযুক্ত পলিগ্রাফ পরীক্ষায় রাজি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, পলিগ্রাফ পরীক্ষার সময় ১০টি প্রশ্ন করা হয়েছিল অভিযুক্তকে। প্রতি ক্ষেত্রেই তিনি দাবি করেছেন, এই অপরাধের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। পলিগ্রাফ বা সত্য যাচাইয়ের পরীক্ষায় সিবিআইয়ের কোন কোন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন অভিযুক্ত?
ধৃতকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি খুন করে সেমিনার হল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় কী ভাবে ঘর সাজিয়ে এসেছিলেন? এই প্রশ্নের জবাবে প্রথমেই অভিযুক্ত জানিয়ে দেন, তিনি খুন করেননি। তাই ঘর সাজানোর প্রশ্নই ওঠে না। কতটা পড়াশোনা করেছেন? জবাবে অভিযুক্ত জানান, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক পাশ।
আইনজীবীর বক্তব্য অনুযায়ী, এর পর পলিগ্রাফ পরীক্ষার সময়েই ধৃত জানান, আরজি কর নয়, অন্য একটি সরকারি হাসপাতালে গেলে জানা যাবে, তিনি কেমন মানুষ। কারণ, ওই হাসপাতালেই তাঁর বেশি যাতায়াত ছিল। সেখানকার কর্মীরা তাঁকে চেনেন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত। তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, ওই হাসপাতালের কর্মীদের উপর অভিযুক্তের বিশ্বাস আছে। তাঁরা যে তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে সঠিক তথ্য দেবেন, তা-ও তিনি বিশ্বাস করেন। সূত্রের খবর, শিয়ালদহের একটি সরকারি হাসপাতালের নাম করেছেন অভিযুক্ত।
ধৃত যে বাইকটি ব্যবহার করতেন, তাতে ‘পুলিশ’ লেখা ছিল। কার কাছ থেকে ওই বাইক পেয়েছিলেন? ধৃত জানিয়েছেন, কলকাতা পুলিশের এএসআই (অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর) অনুপ দত্ত তাঁকে বাইকটি ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ওই পুলিশকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় সংস্থার দফতরের সামনে সাংবাদিকদের দেখে তাঁকেই দৌড়তে দেখা গিয়েছিল।
কেন ৮ অগস্ট রাতে আরজি কর হাসপাতালে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত? পলিগ্রাফ পরীক্ষায় তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বন্ধুর দাদা সেখানে ভর্তি ছিলেন। তাঁকে দেখতেই গিয়েছিলেন হাসপাতালে। তবে সেখানে যে ঘটনা ঘটেছে, তার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি বার বার অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত, দাবি আইনজীবীর।
উল্লেখ্য, গত ৯ অগস্ট আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। এক দিনের মধ্যে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে এই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। পুলিশ জানিয়েছিল, গ্রেফতারির পর জেরার মুখে অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত। তা হলে এখন কেন অস্বীকার করছেন? আইনজীবীকে ধৃত জানিয়েছেন, পুলিশ তাঁর উপর অত্যাচার করেছিল। তাই স্বীকার করতে তিনি বাধ্য হয়েছিলেন। তবে তাঁর সব কথাই যে যাচাই করা প্রয়োজন, মেনে নিয়েছেন আইনজীবী। তিনি জানান, এই মুহূর্তে ধৃতের মানসিক সহায়তা প্রয়োজন। তাই তাঁর বক্তব্য যাচাই করার সময় এখনও তিনি পাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy