Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bowbazar

আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না বৌবাজারের

বিপত্তি: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জেরে চৈতন সেন লেনের বাড়িতে ফাটল পরখ করতে বসেছে ক্র্যাক মিটার (বাঁ দিকে)। ঠেকনা দিতে বাড়ির ভিতরে বসেছে লোহার বিম (ডান দিকে)। শুক্রবার, বৌবাজারে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

বিপত্তি: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জেরে চৈতন সেন লেনের বাড়িতে ফাটল পরখ করতে বসেছে ক্র্যাক মিটার (বাঁ দিকে)। ঠেকনা দিতে বাড়ির ভিতরে বসেছে লোহার বিম (ডান দিকে)। শুক্রবার, বৌবাজারে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৫৮
Share: Save:

গত বছরের ৩১ অগস্ট বৌবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ চলাকালীন আচমকাই নেমে এসেছিল বিপর্যয়। সুড়ঙ্গে বালি এবং জল ঢুকে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় এলাকার অনেক বাড়ির ভিত। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন সেকরাপাড়া লেন এবং দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দারা। ওই দুই রাস্তায় একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়ায় তাঁরা এক রাতের মধ্যে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন। ফাটল দেখা দেয় চৈতন সেন লেন এবং গৌর দত্ত লেনের বহু বাড়িতেও। তার পরেই সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে আনা হয়। বন্ধ হয়ে যায় কাজ।

গত সপ্তাহ থেকে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ফের শুরু হয়েছে সুড়ঙ্গ কাটার কাজ। তার পরেই ফের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বৌবাজারের বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে। কোনও বাড়িতে ফাটল দেখা দিলেই তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে ওই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)-এর আধিকারিকদের খবর দিচ্ছেন। এমনকি, টায়ার ফাটার আওয়াজ পেলেও পাড়ায় কোনও বাড়ি ফের ভেঙে পড়ল কি না আশঙ্কা করছেন। পাশাপাশি এত বড় বিপর্যয়ের পরেও কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষ কেন ন্যূনতম সতর্ক হবেন না, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা।

যদিও কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গত বছরের বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁরা এ বার অতি সতর্ক। সমস্ত রকম প্রস্তুতি ও সাবধানতা নিয়ে কাজ হচ্ছে। সুড়ঙ্গ খোঁড়ার জন্যই যে চৈতন সেন লেনের কিছু বাড়িতে ফাটল ধরেছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ জানার জন্য সব রকম পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে কোনও বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় নেই। বাড়ির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোরও প্রয়োজন নেই।

শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ওই রাস্তার বেশ কিছু বাড়িতে ঠেকনা দেওয়ার জন্য বাইরে এবং কোথাও কোথাও ঘরের মধ্যে লোহার বিম বসানো হয়েছে। ফাটল পরখ করতে বসানো হয়েছে ক্র্যাক মিটারও। কেএমআরসিএল-এর আধিকারিকেরা এ দিন ফাটল ধরা কয়েকটি বাড়ি পরীক্ষাও করেন।

১০/১এ চৈতন সেন লেন ঠিকানায় একটি বাড়িতে ছ’টি পরিবারের বাস। ওই বাড়ির এক বাসিন্দা মমতা সেন বলেন, ‘‘এখনও আতঙ্কে কাটাচ্ছি। হঠাৎ করে বাড়ি ভেঙে পড়বে কি না, সেই ভয় সব সময়ে রয়েছে। ক’দিন আগে একটি গাড়ির টায়ার ফেটেছিল। তখন বাড়িসুদ্ধ লোক ঘুম থেকে উঠে খোঁজ করছিলেন, কোথাও আবার বাড়ি ভেঙে পড়ল না তো?’’ ওই বাড়িরই এক বাসিন্দা সুজিত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মেট্রোর কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রথম থেকেই বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছিল। মেট্রোকর্মীরা এসে অনেক বার সারিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু বারবার এমন হলে বাড়ি ভেঙে পড়তে কতক্ষণ?’’

চৈতন সেন লেনেরই ১১/১/১এ বাড়ির বাসিন্দা ধনঞ্জয় ঘোষ জানান, প্রথম বারই কাজের সময়ে বাড়িতে লোহার বিম লাগানো হয়েছিল। পরে খুলে নেওয়া হয়। ফের নতুন করে সেগুলি লাগানো হয়েছে। তাঁর এক প্রতিবেশী সুকল্যাণ দত্ত বলেন, ‘‘বাড়ির ফাটল কতটা বিপজ্জনক বুঝতে পারছি না। কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরে তাঁরা বাড়িতে ক্র্যাক মিটার বসিয়েছেন।’’ তা ছাড়া, ফাটল নজরে রাখতে কেএমআরসিএলের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সুকল্যাণবাবু।

অন্য বিষয়গুলি:

Bowbazar Landslide KMRCL Kolkata East West Metro
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy