চিন্তায় বড়বাজারের বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র
বৌবাজারের বিপর্যয় দেখে দুশ্চিন্তায় বড়বাজারও!
বছর দু’য়েক আগে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ গঙ্গার নীচ দিয়ে কলকাতায় ঢুকতেই বড়বাজার এলাকার ৪২ নম্বর স্ট্র্যান্ড রোডের একটি বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ জন ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বৌবাজারে মাটির নীচে মেট্রোর সুড়ঙ্গ তৈরি হওয়ার সময়ে একের পর এক বাড়ি ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় প্রবল আতঙ্কে স্ট্র্যান্ড রোডের ওই বাড়িটির ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।
তিনতলার বারান্দায় বসে সেই প্রসঙ্গেই নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন কল্যাণী সোনকার, মীরা দেবী ও রমা দেবীরা। কল্যাণীর কথায়, ‘‘দু’বছর আগে আমাদের বাড়ির নীচ দিয়ে মেট্রোর সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছিল। এখন বৌবাজারের দশা দেখে আমাদের ভয় হচ্ছে। এই বাড়িটাও কোনও দিন ভেঙে পড়বে না তো?’’ মীরা বললেন, ‘‘দু’বছর আগে সেই সময়ে মেট্রোর প্রতিনিধিরা নিয়মিত আমাদের কাছে আসতেন। খোঁজখবর নিতেন। কিন্তু এখন কেউ আসেন না। আমাদের বাড়িটা ঠিক অবস্থায় আছে তো?’’ এ বিষয়ে মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) এ কে নন্দী অবশ্য আশ্বাস দিয়ে বলছেন, ‘‘বড়বাজারের বাসিন্দাদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। মেট্রোর পুরো পথটাই আমাদের নজরদারিতে রয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এ ভাবে আতঙ্ক ছড়ালে তো কোনও কাজই করা যাবে না!’’
স্ট্র্যান্ড রোডের ওই বাড়ির বাসিন্দারা জানান, ২০১৭ সালের জুলাইয়ে বাড়িটির আশপাশের মাটি শক্ত করার জন্য ‘গ্রাউটিং’ (সিমেন্ট, বালি ও জলের মিশ্রণ যন্ত্রের সাহায্যে মাটিতে ঢোকানো)-এর কাজ হয়েছিল। ওই বাড়ির ‘ট্রেডার্স অ্যান্ড টেনান্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক রাজকুমার রায়ের অভিযোগ, ‘‘দু’বছর আগে গ্রাউটিং-এর কাজ করার পরে এ বাড়ির গোটা নিকাশি ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। তখন নিকাশির সংস্কার করতে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। ওঁরা কাজ করলেও নিকাশি সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি।’’
অশোক পাল নামে এক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ‘‘মেট্রোর কাজ হওয়ার পরেই মাটির নীচ থেকে জল উপরে উঠে আসছে। একটু বৃষ্টিতেই জল জমে যায়। মশার উপদ্রব বাড়ছে।’’ গ্রাউটিং-এর কারণে নিকাশির সমস্যা যে দেখা দিতে পারে, তা মেনে নিচ্ছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ সোম। তাঁর পর্যবেক্ষণ,
‘‘গ্রাউটিং-এর জন্য নিকাশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে তার সংস্কার করা সম্ভব।’’ স্ট্র্যান্ড রোডের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) এ কে নন্দী বলেন, ‘‘বছর দেড়েক আগে ওই ভবনটির নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার করা হয়েছিল। ওঁদের এখনও কোনও সমস্যা থাকলে আমাদের চিঠি দিয়ে জানাতে পারেন। আমরা সারিয়ে দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy