কোনও স্কুলে চলছে মেঝে বা দরজা-জানলা মেরামতির কাজ। কোথাও আবার জোরকদমে স্কুলের পাঁচিল রং করা হচ্ছে।
কোনও স্কুলে চলছে মেঝে বা দরজা-জানলা মেরামতির কাজ। কোথাও আবার জোরকদমে স্কুলের পাঁচিল রং করা হচ্ছে। শুধু পড়ুয়ারাই নয়, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও স্টাফরুমে কী ভাবে দূরত্ব-বিধি বজায় রেখে বসবেন, তার পরিকল্পনা চলছে স্কুলগুলিতে। আগামিকাল, মঙ্গলবার স্কুল খোলার আগের মুহূর্তেও তাই প্রস্তুতি তুঙ্গে শহরের অধিকাংশ সরকারি স্কুলগুলির। সেখানকার প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, শুধু করোনা-বিধি মেনে জীবাণুমুক্ত করার কাজই নয়, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় স্কুলভবনের বেশ কিছু অংশের মেরামতিরও প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
স্কুল খোলার আগে যে সব স্কুলের ভবন সংস্কারের জন্য টাকার দরকার, তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ মঞ্জুর করেছে শিক্ষা দফতর। স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানালেন, সেই টাকা কিছু দিন আগেই স্কুলে এসে পৌঁছেছে। তা দিয়েই একদম শেষ মুহূর্তে মেরামতির কাজ চলছে। গত বছরে ঘূর্ণিঝড়ে আমপানের তাণ্ডবে অনেকটাই ক্ষতি হয়েছিল কসবার চিত্তরঞ্জন হাইস্কুল ভবনের। বেশ কিছু ক্লাসঘরের জানলা-দরজা তো বটেই, এমনকি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্কুলের একাংশের টিনের শেডও। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, “করোনা-কালে স্কুল বন্ধ থাকার মধ্যে গত বছরে আমপান এবং এ বছরে ইয়াস হয়েছে। ইয়াসের প্রভাব কলকাতায় সে ভাবে কিছু না হওয়ায় স্কুল ভবনের তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে আমপানে আমাদের স্কুলের যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল, তাতে পড়ুয়াদের স্কুলে বসে ক্লাস করা মুশকিল। তাই এখন পুরো ভবনের মেরামতি করিয়ে নিচ্ছি।”
একশো বছরেরও বেশি পুরনো বেহালা হাইস্কুল। তার প্রধান শিক্ষক দেবাশিস বেরা জানালেন, আমপানের পরে জলমগ্ন হয়ে থাকায় স্কুলের মেঝে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল অনেকটাই। তাই স্কুল খোলার আগে সেই মেঝের সংস্কার চলছে জোরকদমে। দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, স্কুল খুললে যাতে পড়ুয়াদের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষকেরাও স্কুল চত্বরে করোনা-বিধি মানেন, সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের স্কুলে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে ৪৬ জন রয়েছেন। তাই সবাইকে একসঙ্গে না বসিয়ে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। কয়েক জন বসবেন শিক্ষকদের কমন রুমে, বাকিদের কয়েক জন লাইব্রেরি সংলগ্ন ঘরে, কয়েক জন টিচার ইন-চার্জের অফিস সংলগ্ন ঘরে। স্কুলের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং রুমেও কয়েক জনের বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” এ ক্ষেত্রে স্কুল চত্বরে ছাত্রছাত্রীরা করোনা-বিধি মেনে চলছে কি না, সে দিকে শিক্ষকদের নজর রাখাটাও সহজ হবে বলে জানাচ্ছেন দেবাশিসবাবু।
শ্যামবাজারের দ্য পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা জানান, সেখানেও দরজা-জানলা, চেয়ার-টেবিল মেরামতির কাজ চলছে। ওই স্কুলেও শিক্ষকেরা দু’তিনটি ঘরে ছড়িয়ে বসবেন। স্কুলে পানীয় জলের লাইন ও শৌচালয় ঠিকঠাক আছে কি না, তা-ও এখন দেখে নেওয়ার কাজ চলছে।
উল্টোডাঙা এলাকার সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনের এক শিক্ষক কৌশিক সামন্ত বলেন, “ক্লাসঘরের না হলেও আমাদের স্কুলের পাঁচিলের সংস্কার ও রং করার প্রয়োজন রয়েছে। তাই স্কুল খোলার আগে সেই কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্কুল চলাকালীন যাতে পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা ছাড়া আর কেউ প্রবেশ না করেন, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই স্কুল খুলে গেলে মিস্ত্রিদের ঢুকিয়ে সংস্কার করানো যাবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy