কাল, বৃহস্পতিবার থেকে ফের খুলছে স্কুলের দরজা। তার আগে দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলে চলছে জীবাণুনাশের কাজ। নিজস্ব চিত্র।
আগামী কাল, বৃহস্পতিবার থেকে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য খুলছে স্কুলের দরজা। কিন্তু শহরের বেশির ভাগ স্কুল কর্তৃপক্ষই জানাচ্ছেন, ওই দিন থেকে অষ্টম থেকে দ্বাদশের সব পড়ুয়াকে একসঙ্গে স্কুলে আনার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না তাঁরা। তাই অফলাইন ক্লাসের পাশাপাশি চলবে অনলাইন ক্লাসও। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের বেশির ভাগই যেহেতু করোনা প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় এখনও পায়নি, তাই তাদের স্কুলে আনার বিষয়ে বেশি সাবধানী স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিছু স্কুল জানিয়েছে, ক্লাস করতে অভিভাবকদের থেকে সম্মতিপত্র আনতে হবে তাদের। তবে অধিকাংশ স্কুলই জানিয়েছে, পরীক্ষা দিতে হবে অফলাইনেই।
প্রথম দিন সমস্ত শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুলে ডাকছে না সাউথ পয়েন্ট স্কুল। ওই স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, “বৃহস্পতিবার শুধু নবম এবং একাদশের পড়ুয়ারা আসবে। দশম ও দ্বাদশের সামনে বোর্ডের পরীক্ষা, তাই ওরা আসছে না। পরিস্থিতি বুঝে অষ্টম শ্রেণিকে ১৬ তারিখ থেকে ডাকা হবে। অফলাইন ক্লাস চালু হলেও অনলাইন ক্লাস চলবে। তবে অষ্টম থেকে দ্বাদশের পরীক্ষা হবে অফলাইনেই।” তিনি আরও জানান, অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়েই চিন্তা বেশি থাকছে তাঁদের।
একই চিন্তা লা মার্টিনিয়ারের সচিব সুপ্রিয় ধরেরও। তিনি বলেন, “৭ তারিখ থেকে পড়ুয়াদের আসতে বলেছি। তবে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের অভিভাবকের থেকে সম্মতিপত্র আনতে হবে। কারণ
ওদের এখনও প্রতিষেধক দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবারের মধ্যে এই সম্মতিপত্র সকলের পক্ষে আনা সম্ভব নয়। তবে সেই সঙ্গে অনলাইনেও ক্লাস চলবে। অষ্টম, নবম, একাদশের পরীক্ষা হবে অনলাইনে। দশম ও দ্বাদশের পরীক্ষা বোর্ডের নিয়মানুযায়ী অফলাইনে হবে।” মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের এখনই স্কুলে আনার পক্ষপাতী নন তাঁরা। অনলাইনে পরীক্ষা দিয়ে নবম শ্রেণিতে ওঠার পরেই তাদের স্কুলে আনা হবে। সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়ারা অনলাইন পরীক্ষায় পাশ করে এপ্রিল থেকে স্কুলে আসবে। ওই স্কুলের অধ্যক্ষা অঞ্জনা সাহা বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকে কেউই স্কুলে আসছে না। আগামী ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি নবম ও একাদশ শ্রেণির অফলাইন পরীক্ষা। তার পরে তারা স্কুলে আসবে। এপ্রিল থেকে আসবে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা।”
মডার্ন হাইস্কুল ফর গার্লসের ডিরেক্টর দেবী কর বলেন, “প্রথম থেকে সমস্ত ক্লাসকে একসঙ্গে আনা হবে না। রস্টার তৈরি করা হচ্ছে, সেকশন অনুযায়ী পড়ুয়াদের আসতে বলা হবে। যারা করোনা পরিস্থিতির কথা ভেবে আসতে চাইবে না, তাদের জন্য অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থাও করা হবে। তবে পরীক্ষা হবে অফলাইনে।”
ডিপিএস রুবি পার্কে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। সংক্রমণের ঝুঁকি যেহেতু এখনও রয়েছে, তাই সবাইকে একসঙ্গে স্কুলে আসতে বলার পক্ষে নন কর্তৃপক্ষ। তাই ওই স্কুলেও পড়ুয়াদের পর্যায়ক্রমে আসতে বলা হবে। কিছু দিন পরে পরিস্থিতি বুঝে তবেই সমস্ত পড়ুয়াকে স্কুলে আনার ব্যাপারে ভাবা হবে। তবে ক্লাসের পরীক্ষা অনলাইনে হবে না অফলাইনে, তা দু’-এক দিনের মধ্যেই জানানো হবে। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুলে আসতে অভিভাবকদের অনুমতিপত্র চেয়েছে ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলও। অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহা বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকে সমস্ত ক্লাসের পড়ুয়ারা আসবে, তবে অনুমতিপত্র নিয়ে। পরীক্ষা অনলাইনে হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।”
স্কুল খোলার দাবিতে কয়েক দিন ধরে সরব হয়েছিলেন বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা। অনেকে পথে নেমে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। তবে বেসরকারি স্কুলগুলির অধিকাংশ শিক্ষক ও অধ্যক্ষদের মতে, স্কুল খুললে বোঝা যাবে, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে সত্যিই কতটা উৎসাহী অভিভাবকেরা। তবে অধিকাংশ স্কুলই জানাচ্ছে, কাউকেই স্কুলে আসতে জোর করা হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy