খাতা খোলা: প্রতিমার বায়না দিচ্ছেন এক পুজোকর্তা। শুক্রবার, কুমোরটুলিতে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। সেই তুলনায় রথের দিন, শুক্রবার কুমোরটুলিতে তেমন জমল না দুর্গাপ্রতিমার বায়না। কেউ পেয়েছেন তিনটি, কেউ বা চারটি। মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, প্রাক্-করোনা পরিস্থিতিতে রথের দিন প্রতিমার বায়নার জন্য যেমন ভিড় হত, তেমন এ বার হয়নি। কিন্তু তা হলেও তাঁরা হতাশ নন। শিল্পীরা জানালেন, এ দিন অনেক পুরনো খদ্দের ফোন করেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, কিছু দিনের মধ্যেই ঠাকুরের বায়না দিতে আসবেন।
এ দিন টালিগঞ্জ থেকে দুর্গাপ্রতিমার বায়না দিতে এসেছিল একটি পুজো কমিটি। কমিটির সদস্য প্রসেনজিৎ দাস বললেন, ‘‘গত দু’বছর করোনার জন্য নমো নমো করে পুজো সারতে হয়েছে। এ বার ভাল করে করার ইচ্ছে আছে। প্রতি বারই রথে বায়না দিতে আসি। এ বার দেখলাম, প্রতিমার দাম বেড়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে বাজেটে কাটছাঁট করতে হল।’’
দমদমের মল রোডে বাড়ির পুজোর জন্য প্রতিমার বায়না দিতে এ দিন কুমোরটুলিতে এসেছিলেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানালেন, গত দশ বছর ধরে এই দিনেই তাঁরা বায়না দিতে আসেন। তাঁদের বাড়ির প্রতিমা বানান শিল্পী সুজিত পাল। এ বার প্রতিমার বায়না করতে এসে সুজিতবাবুর সঙ্গে দরদাম করতে হয় জয়ন্তবাবুদের। সুজিতবাবু বলেন, ‘‘গত দু’বছর অনেক কম দামে প্রতিমা বিক্রি করেছি। এ বার অবশ্য এখনও পর্যন্ত সব ঠিক মতো চলছে। তবে, প্রতিমা তৈরির সব উপকরণের দাম বেশ কিছুটা বেড়ে গিয়েছে। তাই বাড়াতে হয়েছে ঠাকুরের দামও।’’ এ দিন তিনটের মতো প্রতিমার বায়না পেয়েছেন ওই শিল্পী।
কেন এ বার রথের দিন সে ভাবে বায়না হল না? সুজিতবাবুর মতে, ‘‘মানুষ হয়তো আরও একটু সময় নিয়ে দেখতে চাইছেন, করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যায়। তাই বায়না কিছু দিন পরে শুরু হবে। তবে অনেকেই বলেছেন, এ দিন অফিস থাকায় আসতে পারেননি। শনি বা রবিবারে আসবেন।’’
দু’বছরের করোনা-ভীতি কাটিয়ে এ বার অনেক বেশি আশার আলো দেখছেন কুমোরপাড়ার শিল্পীরা। শিল্পী মালা পালের কথায়, ‘‘ইতিমধ্যে ছোট মাপের ১০০টির মতো এবং বড় ছ’টি প্রতিমার বায়না পেয়েছি। দেশের বাইরে যে প্রতিমা যাবে, তা-ও প্রায় তৈরি। উল্টো রথের দিন বায়না ভাল পাব বলে আশা করছি।’’
হাল ছাড়তে রাজি নন ‘কুমোরটুলি প্রগতিশীল মৃৎশিল্পী ও সাজশিল্পী সমিতি’র সম্পাদক অপূর্ব পালও। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ হয়তো এখনও ভাবছেন, ঠাকুরের দাম কিছুটা কমবে। তাই একটু রয়েসয়ে বায়না দিতে চাইছেন। ইতিমধ্যেই কয়েকটি বায়না পেয়েছি। রথের দিন অনেকেই ফোন করেছিলেন। ঠাকুরের দাম কিছুটা বাড়লেও বায়না অনেক ভাল হচ্ছে। এখনও তো পুজো কিছুটা দেরি আছে। আশা করছি, দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বায়নাও বাড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy