স্বচ্ছ নিয়োগের জন্যই বোর্ডের হাতে তুলে দিয়েছিলাম, বললেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার, গুড়াপে। —নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বন সহায়ক পদে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত হচ্ছে। বুধবার দুপুরে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের এক সভা থেকে ওই মন্তব্য করার কয়েক ঘন্টা পরেই হুগলির গুড়াপের সভা থেকে তার জবাব দিলেন রাজীব। পাল্টা তৃণমূলের দিকেই তির ছুড়ে রাজীবের হুঙ্কার, ‘‘কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়বে! কোন কোন নেতা ওই পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে চিঠি দিয়েছিলেন, তার সব নথি আমার কাছে রয়েছে।’’ দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে কেন মমতা তাঁকে আগেই দল থেকে তাড়াননি, সেই প্রশ্ন তুলে প্রাক্তন মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘নিয়োগে স্বচ্ছতা চেয়েছিলাম বলেই বোর্ডের হাতে দিয়েছিলাম।’’
আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে মমতা বলেছিলেন, ‘‘বন সহায়ক নিয়োগে কারসাজি করেছেন রাজীব। আমরা তদন্ত করছি।’’ নিয়োগের তালিকা পুনর্বিবেচনার আশ্বাসও দেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর ওই অভিযোগের পর রাজীবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গুড়াপের সভা থেকে জবাব দেবেন। সেই সভায় যোগ দিয়ে কার্যত মুখ্যমন্ত্রীকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজীব। বলেছেন, ‘‘বন সহায়ক পদে স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ করতেই বোর্ডের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু তার পর বীরভূমের এক নেতা আমায় ফোন করে তাঁর প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করেন। প্রয়োজনে বন সহায়ক নিয়োগের ওই প্যানেল বাতিল করে দিন। আমার তাতে কিছু আসে যায় না।’’
৮ অক্টোবর ৯টা ৫৮ মিনিটে তাঁর সঙ্গে ওই নেতার ফোন কথোপকথনের রেকর্ডও তাঁর কাছে রয়েছে বলে দাবি রাজীবের। তিনি বলেন, ‘‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিতে চাই, কোন উচ্চ নেতৃত্ব সুপারিশ করেছেন, কালীঘাট থেকে কী সুপারিশ এসেছে, সব নথি তুলে রেখেছি। আপনি আলিপুরদুয়ারে আছেন, সেখানকার জেলা সভাপতির কাছ থেকে জেনে নিন, উনিও সুপারিশ করেছিলেন।’’
তৃণমূল ছেড়ে তাঁর বিজেপি-তে যোগ দেওয়াকে ‘গুরুত্ব’ না দিতে তৃণমূল নেতৃত্ব একাধিক বার বলেছেন, ‘‘তৃণমূল বটগাছ। তার দু’একটা পাতা ঝরে পড়লে কিছু হয় না। সমুদ্র থেকে এক ঘটি জল তুলে নিলে সমুদ্র বদলায় না।’’ সেই সূত্র ধরেই রাজীব বলেছেন, ‘‘আমি জানি সরকারকে একটা নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়। মন্ত্রগুপ্তির শপথ নিয়েছিলাম। তাই এত দিন কিছু বলিনি। কিন্তু আপনি প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছেন। আমি মুখ খুললে শুধু বটগাছের পাতা নয়, গোটা বটগাছটাই নড়ে যেতে পারে। উথাল-পাথাল হয়ে যেতে পারে সমুদ্র।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, আপনি যত প্রশ্ন করবেন, তার উত্তর দিয়ে দেব।’’
তৃণমূল জমানায় চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগেও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন রাজীব। তাঁর কথায়, ‘‘গত কয়েক বছরে চুক্তিভিত্তিক যে নিয়োগ হয়েছে, তার তালিকা কোথা থেকে এসেছে বার করুন। কারা সুপারিশ করেছে, তার সমস্ত কপি আমার কাছে আছে। আপনি চাইলে সব কপি দিয়ে দেব।’’ গুড়াপের সভা থেকে কিসান মান্ডি তৈরিতে সরকারের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগও তুলেছেন রাজীব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy