তৃমণূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
দুর্নীতিতে অভিযুক্তরাই বিজেপিতে যাচ্ছেন। দলত্যাগীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ছিলই। এ বার রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তদন্তের হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বন সহায়ক পদে নিয়েোগের ব্যাপারে রাজীব দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। বুধবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে কর্মিসভা থেকে মমতার আশ্বাস, বন সহায়ক পদে প্রকৃত চাকরির দাবিদার কেউ বঞ্চিত হলে পুনর্বিবেচনা করা হবে। গুড়াপের সভা থেকে অভিযোগের জবাব দিয়েছেন রাজীব। বলেছেন, ‘‘তিনি স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগের জন্য বোর্ডের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।’’
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বনাঞ্চলে বন সহায়ক পদে নিয়োগ করা হয়েছে। নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, বনবস্তির বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই যাঁরা স্বেচ্ছায় বন-জঙ্গল রক্ষার কাজ করছেন, সুবিধা পাবেন তাঁরাও। কিন্তু এই নিয়োগ নিয়েই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আলিপুরদুয়ারের চিলাপাতা রেঞ্জ, জলপাইগুড়ির খুনিয়া রেঞ্জ, ময়নাগুড়ির রামশাই রেঞ্জ, গরুমারা নর্থ রেঞ্জ-সহ অধিকাংশ জায়গায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভও হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, অনেক জায়গাতেই বনবস্তিবাসীরা চাকির পাননি। অথচ শহরাঞ্চলের বাসিন্দারাও অনেকে চাকরি পেয়েছেন।
প্রবীর ঘোষাল, বৈশালী ডালমিয়া, রথীন চট্টোপাধ্যায়, পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়দের সঙ্গে সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন রাজীবও। তার পরে এই প্রথম রাজনৈতিক কোনও জনসভায় যোগ দিলেন তৃণমূল নেত্রী। আলিপুরদুয়ারের প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে রাজীবকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেউ কেউ এদিক ওদিক দৌড়ে বেড়াচ্ছে। যেতে দিন। যে বেশি দুর্নীতি করেছে, সে তো পালাবেই। আমি সবাইকে জানি, কে কী করেছে। ওদের লম্ফ-ঝম্ফ সব বন্ধ হয়ে যাবে। বিধানসভার পরে দেখব।’’
এর পর রাজীবের নাম না করেও মমতা বলেন, ‘‘যে ছেলেটা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে, বন সহায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে ও কিছু কারসাজি করেছে। আমরা তার তদন্ত করছি। আজ থেকে ৭-৮ দিনের মধ্যে নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গেলে আমরা করতে পারব না। কিন্তু তদন্ত চলবে। কিন্তু এর পরে আপনারা যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের দাবি সত্যি হলে আমরা পুনর্বিবেচনা করব।’’ কিছুক্ষণ পরে আবার রাজীবের প্রসঙ্গে ফিরে বলেন, ‘‘এখন যে বড় বড় কথা বলছে, বন সহায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে কী করেছে, জিজ্ঞেস করুন। চুরি করে এখন বিজেপির পকেটে চলে গিয়েছে।’’
মমতার অভিযোগের পরেই রাজীব বলেছিলেন, গুড়াপের সভা থেকে জবাব দেবেন। সেই সভা পাল্টা তৃণমূলের দিকেই অভিযোগ তুলে বলেছেন, ‘‘কোন কোন তৃণমূল নেতার কাছ থেকে সুপারিশ এসেছিল, সেই সব তথ্য আমার কাছে আছে। প্রয়োজনে সব দিয়ে দেব।’’
বুধবারই হুগলির গুড়াপে একটি সভায় যোগ দেন রাজীব। মমতার এই দুর্নীতির অভিযোগ এবং তদন্তের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা রাজীব বলেন, ‘‘উনি রাজনৈতিক সভায় বলেছেন, তাই আমিও রাজনৈতিক সভা থেকেই তার জবাব দেব। যা বলার, গুড়াপের মঞ্চ থেকেই বলব।’’
রাজীবের পাশাপাশি দলত্যাগীদের নিশানা করে মমতা বলেন, ‘‘যাঁরা লোভী এবং যাঁরা ভোগী, আমরা তাড়ানোর আগেই তাঁরা চলে গিয়েছেন বিজেপিতে। চলে যান। কেউ কেউ ভয়ে পালাচ্ছে। বিজেপিতে গিয়েছ তো? যখন লেজে আগুন দিয়ে দেবে, তখন লোকে বলবে লেজপোড়া বিজেপি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy