প্রস্তুত: রেড রোডে সেজে উঠছে কার্নিভালের মঞ্চ। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে রেড রোড ভিজে থাকতে পারে। তবে আজ, শুক্রবার প্রতিমা নিরঞ্জনের কার্নিভাল যাতে বৃষ্টির কারণে কোনও ভাবে ব্যাহত না হয়, সে জন্য সব দিক থেকে প্রস্তুত থাকতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। তাই বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভায় পুজোর ছুটি থাকলেও এ দিন সেখানে কার্নিভাল নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক হয়। সেখানে স্থির হয়েছে, বৃষ্টিভেজা রেড রোডের জন্য সিএবি-র থেকে চাওয়া হবে সুপার সপার। ভেজা ইডেন যে ভাবে সুপার সপার দিয়ে দ্রুত শুকিয়ে ফেলা হয়, কার্নিভালের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনে সেই পদ্ধতি গ্রহণ করবে পুরসভা।
এখানেই শেষ নয়। পুরসভা সূত্রের খবর, কার্নিভালের জন্য পুর জঞ্জাল বিভাগকে বেশ কয়েকটি গাড়ি প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। ওই সমস্ত গাড়ির পিছনে বড় স্পঞ্জ লাগানো থাকবে। সুপার সপারের পাশাপাশি সেই স্পঞ্জ দেওয়া গাড়িও রাস্তা শুকনো করার কাজে লাগানো হবে। এ ছাড়া বৃষ্টির মোকাবিলায় রেড রোড পরিষ্কার রাখতে অতিরিক্ত সাফাইকর্মীও নিয়োগ করতে চলেছে পুরসভা। জঞ্জাল সংগ্রহের জন্য ১৫০টি বিনও বসানো হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। এক পদস্থ পুরকর্তার কথায়, ‘‘বৃষ্টির জন্য সমস্ত প্রস্তুতিই নিয়ে রাখছি। প্রয়োজন মতো কাজে লাগানো হবে।’’
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে কার্নিভালে যোগ দেওয়ার কথা বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের। কার্নিভালের জন্যই দিল্লি সফর কাটছাঁট করে আজ দুপুরে মান্নান কলকাতায় ফিরছেন। রাজ্যপাল ও তাঁর সঙ্গীদের জন্য রেড রোডে আলাদা মঞ্চেরও ব্যবস্থা থাকছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ২০১৬ থেকে রেড রোডে শুরু হয়েছে এই পুজো কার্নিভাল। চলতি বছর পুজোর আগে থেকেই চলছে তার প্রস্তুতি। কিন্তু মঞ্চ বাঁধা থেকে অতিথি-অভ্যাগতদের বসার ব্যবস্থা— সব আয়োজনে বাদ সাধছে বৃষ্টির আশঙ্কা! আজ বিকেল সাড়ে চারটে থেকে শুরু হচ্ছে কার্নিভাল। সেই উপলক্ষে দুপুর থেকেই রেড রোড এবং সংলগ্ন রাস্তা নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, রেড রোডের দু’পাশে বসার জন্য ১২-১৩ হাজার আসনের ব্যবস্থা হলেও অনেকে দাঁড়িয়েও কার্নিভাল দেখেন। সব কিছু মাথায় রেখে রেড রোড এবং সংলগ্ন এলাকার জন্য প্রায় তিন হাজার পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকছেন। যুগ্ম কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার ছাড়াও থাকবেন প্রতিটি ডিভিশনের অফিসারেরা। বিকেলে কার্নিভাল শুরু হলেও নিরাপত্তার কথা ভেবে বেলা ১২টা-সাড়ে ১২টা থেকেই রাস্তায় নামছে পুলিশ।
এমনিতে রেড রোড সাধারণ গাড়ির জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে বৃহস্পতিবার রাতেই। দর্শকদের জন্য রেড রোড, সংলগ্ন এলাকা এবং ময়দানে ১৭টি জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হয়েছে। থাকছে ৬টি পুলিশ-সহায়তা বুথ, ৮টি ওয়াচটাওয়ার, ৪টি কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি)। বিপদ এড়াতে মূল মঞ্চের পিছনে থাকছে আরও একটি কিউআরটি। দর্শকদের জন্য রাখা থাকছে সাতটি অ্যাম্বুল্যান্স। থাকছে চিকিৎসকদের চারটি দলও। পাশাপাশি ডিভিশনগুলিতেও আলাদা করে পুলিশবাহিনী রাখা হচ্ছে, যাতে সেখানে কিছু ঘটলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি না হয়।
তবে সরকারি টাকায় এমন কার্নিভালের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক চন্ডীদাস ভট্টাচার্য যেমন বলেছেন, ‘‘সরকারের তরফে এত টাকা খরচ করে কার্নিভাল করার যুক্তি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষত সরকার নিজেই যখন প্রবল আর্থিক সঙ্কটের কথা ঘটা করে বলে বেড়াচ্ছে। এর সঙ্গে সাধারণ গরিব মানুষের সম্পর্ক নেই।’’ সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘দিন-রাত এক করে মন্ত্রী-আমলারা জনগণের করের টাকায় ধর্মের উৎসব উদ্যাপন করে যাচ্ছেন। এ পথেই তাঁরা নাকি বিজেপির ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের মোকাবিলা করবেন! এই উৎকট প্রতিযোগিতা রাজ্যকে কোথায় নিয়ে যাবে, সহজেই অনুমান করা যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy