শেষ লগ্ন: বৃষ্টি মাথায় করেই চলছে প্রতিমা বিসর্জন। বুধবার, বাবুঘাটে। নিজস্ব চিত্র
ঘাটের কাছে ছাউনি বাঁধাই ছিল। ভোর থেকে রাখা ছিল গঙ্গা থেকে কাঠামো তুলে নিয়ে যাওয়ার ক্রেন এবং পুরসভার গাড়ি। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে তৈরি ছিল পুলিশও। কিন্তু দশমীর পরদিনের প্রতিমা নিরঞ্জনে তাল কাটল বৃষ্টি। যদিও একাদশীর সন্ধ্যার পরে বৃষ্টি থামলে ঘাটগুলিতে ভিড় বাড়তে থাকে উদ্যোক্তাদের। তবে পুলিশের দেওয়া তথ্য দেখলেই দু’দিনের প্রতিমা বিসর্জনের পার্থক্য বুঝতে পারা যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, দশমীতে বিসর্জন হয়েছিল ১,৮৬৪টি প্রতিমা। একাদশীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের সংখ্যা ছিল তুলনায় কম।
প্রতি বারের মতোই চলতি বছরেও প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় স্থির করে দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশ এবং প্রশাসনের তরফে। মঙ্গলবার দশমী থেকে কাল, শুক্রবার পর্যন্ত শহরের সব প্রতিমা নিরঞ্জন হওয়ার কথা। তবে শুক্রবারই রেড রোডে পুজোর কার্নিভাল রয়েছে। ফলে আগাম অনুমতি নেওয়া কিছু পুজো কমিটিকে রবিবার পর্যন্ত প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, বাজেকদমতলা, নিমতলা-সহ কলকাতার ১৫টি ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জলে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিমা দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার জন্য গঙ্গার ওই ঘাটগুলিতে বার্জ থাকছে। এ ছাড়াও প্রতিমার কাঠামো দ্রুত সরাতে ক্রেন এবং পে-লোডার রাখা হয়েছে। সঙ্গে বিসর্জনের জন্য ঘাটে আসা মানুষের নিরাপত্তায় প্রচুর পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রতিমা বিসর্জনের প্রক্রিয়া তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার। তিনি জানান, জলদূষণ রুখতে গঙ্গায় প্রতিমা ফেলার পরে রঙে থাকা রাসায়নিক যাতে জলে না মিশে যায়, সে জন্য সঙ্গে সঙ্গে কাঠামো জল থেকে ক্রেন দিয়ে তুলে ফেলা হচ্ছে। এর পরেই সে সব পে-লোডার দিয়ে তুলে পুরসভার গাড়িতে করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
দূষণ রুখতে ক্রেনের সাহায্যে জল থেকে তুলে ফেলা হচ্ছে প্রতিমার কাঠামো। বুধবার, বাবুঘাটে। নিজস্ব চিত্র
বুধবার সকালের দিকে বাজেকদমতলা ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, পুলিশ-প্রশাসনের তৎপরতার মধ্যেই প্রতিমা বিসর্জন চলছে। তবে বেলা বাড়তেই প্রবল বৃষ্টিতে তা বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিমা ছেড়ে ভাসান দিতে ঘাটে নামা যাত্রীদের সরাতেই তখন ব্যস্ত হয়ে পড়েন পুলিশকর্মীরা। বৃষ্টির মধ্যেই বিসর্জনে আসা এক পুজো উদ্যোক্তা ক্লাবের ব্যানার দিয়ে কোনও রকমে মাথা ঢেকে বললেন, ‘‘বৃষ্টি দেখে মনে হচ্ছে, সকলকে কাঁদিয়ে দিয়ে ঘরে ফিরছেন মা। শেষ মুহূর্তে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটলেই ভাল।’’ রাতের দিকে ওই ঘাটে বিসর্জনের সংখ্যা বাড়লেও তা দশমীর সংখ্যাকে ছোঁয়নি বলেই পুলিশ জানাচ্ছে।
একই অবস্থা এ দিন ছিল উত্তরের নিমতলা ঘাটের। সেখানে প্রতিমা সরিয়ে নেওয়ার জন্য রাখা ছিল পুরসভার একাধিক গাড়ি। দু’টি ক্রেন এবং পে-লোডারও দিনরাত কাজ করেছে সেখানে। তবে দুপুরের দিকে বৃষ্টিতে গোটা প্রক্রিয়াটাই কিছুটা ব্যাহত হয়েছে বলে জানান কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। উত্তর কলকাতার প্রতিমা নিরঞ্জনের মূল তদারক তিনিই। তাঁর কথায়, ‘‘বৃষ্টিতে সমস্যা কিছুটা হয়েছে ঠিকই। তবে হাতে এখনও দু’দিন সময় রয়েছে। আশা করছি তত দিনে সব ভাসান হয়ে যাবে। নিয়ম মেনেই সব কিছু হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy