—প্রতীকী চিত্র।
তালিকায় থাকা নিষিদ্ধ বাজির সেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছিল তিন বছর আগেই। অর্থাৎ, তিন বছর আগে ১০০টিরও বেশি বাজি ঢুকে পড়েছিল এই রাজ্যের নিষিদ্ধ শব্দবাজির তালিকায়। কিন্তু করোনার জেরে তার পর থেকে আর বাজির শব্দের পরীক্ষা হয়নি। তিন বছর বাদে টালা পার্কে আবার সেই পরীক্ষা হতে চলেছে আগামী শনিবার। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, তালিকায় থাকা ১০০টির মধ্যে অনেক বাজিই এ বার নিষ্কৃতি পেতে পারে। সেগুলির উপর থেকে উঠে যেতে পারে নিষেধাজ্ঞা! সৌজন্যে, এ রাজ্যে বাজির শব্দমাত্রা বৃদ্ধি!
জানা যাচ্ছে, গত বছর অক্টোবরের আগেই কলকাতা পুলিশের তরফে ১০৫টি নিষিদ্ধ শব্দবাজির তালিকা ঘোষণা করা হয়েছিল। এর পরে পাঁচটি বাজি বাজারের ৩৪টি নতুন বাজির শব্দমাত্রা পরীক্ষা হয় টালা পার্কে। সেই পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল বেরোনোর পরে দেখা যায়, পাশ করেছে মাত্র পাঁচটি বাজি। বাকিগুলির ক্ষেত্রে পড়েছে লাল দাগ। একটিকে আবার লাইসেন্স না থাকায় শব্দ পরীক্ষায় বসতেই দেওয়া হয়নি। অনুত্তীর্ণ হওয়া ২৮টি বাজির মধ্যে ছ’টি বাজি ফাটেনি। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সেই সময়ে জানায়, ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দমাত্রা থাকায় অধিকাংশ বাজি ফেল করেছে। সে বছর সব মিলিয়ে নিষিদ্ধ বাজির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩৩। কিন্তু এ বার কিছু দিন আগেই বাজির শব্দমাত্রা ৯০ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ ডেসিবেল করা হয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি নিষিদ্ধ তালিকায় থাকা বাজিগুলির আবারও পরীক্ষা হবে চলতি বছরে? সে ক্ষেত্রে কি বেশির ভাগই কালো তালিকা থেকে অব্যাহতি পেয়ে যাবে?
বাজি বাজারের কর্তারা যদিও এ প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর দিতে পারছেন না। এ নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই পুলিশ বা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদেরও। শনিবার কতগুলি বাজির পরীক্ষা হবে, সেই তালিকাও এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে খবর। যা জানা যাচ্ছে, তাতে আগামী রবিবার থেকে টালা, কালিকাপুর, বেহালা ও শহিদ মিনারে বৈধ বাজির বাজার শুরু হতে চলেছে। এ ছাড়া, বিজয়গড়ে আরও একটি বাজার বসবে কি না, সেই নিয়ে কথাবার্তা চলছে। বাজি ব্যবসায়ীরা জানিয়েই দিচ্ছেন, আগামী ৫ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে বাজি বাজার করার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। বাইরে থেকে বাজি এসে গেলেও কোনগুলি পরীক্ষা করা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। টালা বাজি বাজারের অন্যতম উদ্যোক্তা তথা ‘পশ্চিমবঙ্গ গ্রিন ফায়ারওয়ার্কস উন্নয়ন সমিতি’র সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না বললেন, ‘‘সমস্ত বাজার থেকেই চার-পাঁচটা করে বাজি পরীক্ষার জন্য আসতে পারে। কিন্তু তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। রবিবার উদ্বোধনের আগে বাজারগুলিতে দমকল বিভাগের তরফে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা সংক্রান্ত একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হবে। এই সব নিয়েই আপাতত ব্যস্ততা রয়েছে।’’
কিন্তু বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশই গোপনে জানাচ্ছেন, শনিবারের বাজি পরীক্ষা আসলে লোক দেখানোর পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। কারণ, এ রাজ্যে এই মুহূর্তে সবুজ বাজি প্রস্তুত করার ছাড়পত্র রয়েছে মাত্র একটি সংস্থার কাছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ওই একটি সংস্থার তৈরি বাজিতে সব বাজার ভরানো সম্ভব নয়। তাই এ বার বেশির ভাগই তামিলনাড়ুর বাজিতে ভরতে চলেছে কলকাতার বাজার। যে হেতু রাজ্যের বাইরে সর্বত্রই ১২৫ ডেসিবেল শব্দমাত্রা বৈধ, তাই ওই সব জায়গায় তৈরি বাজির বেশির ভাগই এই শব্দমাত্রার মধ্যে পড়ে। ফলে পরীক্ষা হলেও কোনও বাজিরই অনুত্তীর্ণ হওয়ার তেমন ঝুঁকি নেই।
উঠে আসছে আরও একটি আশঙ্কার দিক। নিয়ম অনুযায়ী, এ বার শুধুমাত্র সবুজ বাজিই বিক্রি হওয়ার কথা। এই সমস্ত সবুজ শব্দবাজির শব্দমাত্রা পরীক্ষা করে দেখার কথা ‘ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ বা নিরি-র। তার পরে তারা শব্দমাত্রার দিক থেকে এই সমস্ত বাজিকে ছাড়পত্র দেবে। জানা যাচ্ছে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে যে হেতু এ বার বাজি তৈরি হয়েছে, ফলে কলকাতায় ঢোকা বহু সবুজ শব্দবাজিরই নিরি-র শব্দমাত্রার ছাড়পত্র নেই।
তা হলে উপায়? আপাতত উত্তর খুঁজছে পুলিশও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy