সুসজ্জিত: প্রাক্ পুজোর মিছিলের জন্য সাজানো হয়েছে রেড রোডের দু’পাশ। বুধবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
আজ, বৃহস্পতিবার শহরে পুজোর শোভাযাত্রায় আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বেসরকারি স্কুলগুলিকে। তবে বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল বুধবারই জানিয়ে দিয়েছে, যানজটের আশঙ্কায় তারা আজ আগে ছুটি দিয়ে দেবে। কোনও কোনও স্কুলে আবার হবে অনলাইন ক্লাস। তবে কিছু স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্কুল ছুটি হবে নির্দিষ্ট সময়েই। যানজট ও পথে দীর্ঘ সময় আটকে থাকার আশঙ্কায় অভিভাবকদের অনেকে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না। সরকারি স্কুলগুলি অবশ্য এ দিন চূড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে। যদিও চড়া রোদে পড়ুয়ারা এতটা পথ হাঁটতে পারবে কি না, বৃষ্টিতে ভিজে গেলে তারা কোথায় পোশাক বদলাবে— এই প্রশ্নও তুলছেন শিক্ষকদের একাংশ।
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি জানিয়েছেন, তাঁদের স্কুল দক্ষিণ কলকাতায় হলেও শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্রেরা আসে। দুপুর দুটোয় যখন জোড়াসাঁকো থেকে শোভাযাত্রা শুরু হবে, তখনই স্কুল ছুটির সময়। শোভাযাত্রা যাবে রেড রোড পর্যন্ত। ওই সময়ে স্কুলের বাস রাস্তায় থাকে। যানজটের আশঙ্কায় তাঁরা বৃহস্পতিবার পুরোপুরি অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করছেন। গোখেল মেমোরিয়াল স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁদের অফলাইনে ক্লাস হলেও দুপুর ১টায় ছুটি দিয়ে দেওয়া হবে। তবে পরীক্ষা থাকায় ছুটি দেওয়া বা অনলাইন ক্লাসের পথে হাঁটছে না মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি। স্কুলের অধ্যক্ষা অঞ্জনা সাহা জানিয়েছেন, তাঁরা ১২টায় ছুটি দিয়ে দেবেন। মডার্ন হাইস্কুল ফর গার্লসের ডিরেক্টর দেবী কর বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত স্কুল হবে। তবে স্কুল ছুটির পরে যে বিশেষ ক্লাস করে কিছু পড়ুয়া, সেই ক্লাস হবে না।’’ অন্য দিকে, আজ স্কুল ছুটি থাকবে বলে জানিয়েছেন শ্রীশিক্ষায়তন কর্তৃপক্ষ। ডিপিএস রুবি পার্কে ছুটি দেওয়া হবে ১১টায়।
এ দিকে, শোভাযাত্রা নিয়ে বুধবার সরকারি স্কুলগুলিতে ছিল শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। টাকি হাউস গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শম্পা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘১০০ জনের মতো ছাত্রী শোভাযাত্রায় অংশ নিচ্ছে। তাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য স্কুল থেকে ১১টায় বাস ছাড়বে। বাস যাবে গিরিশ পার্ক পর্যন্ত। ছাত্রীরা সেখানে নেমে জোড়াসাঁকো পর্যন্ত হেঁটে যাবে। তার পরে দুপুর দুটোয় পদযাত্রায় অংশ নিয়ে তারা যাবে রেড পর্যন্ত। অনুষ্ঠান-শেষে তাদের স্কুলে ফেরত আনার জন্য বাস থাকবে।’’
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, উত্তর কলকাতার ১ থেকে ৬ নম্বর বরোর বেশির ভাগ স্কুল থেকে শোভাযাত্রায় যাচ্ছে একাদশ ও দ্বাদশের ৫০-১০০ জন পড়ুয়া। কলকাতা জেলা থেকে মিছিলে অংশ নেবে ওই দুই শ্রেণির আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার পড়ুয়া। পড়ুয়ারা পাবে একটি রঙিন ছাতা, ব্যাগ, টুপি ও টিফিন। সবই দিচ্ছে শিক্ষা দফতর। বর্ষাকাল বলে ব্যাগ আর ছাতা দেওয়া হচ্ছে। পড়ুয়াদের বলা হয়েছে একটি অতিরিক্ত পোশাক আনতে। তা ব্যাগে রেখে দিতে হবে। বৃষ্টি পড়লে সেই পোশাক পরতে হবে। এ দিন দুপুরের মধ্যেই প্রায় সব স্কুলে ব্যাগ, ছাতা ও প্ল্যাকার্ড পৌঁছে গিয়েছে। পড়ুয়ারা হাঁটবে জোড়াসাঁকো থেকে রেড রোড পর্যন্ত।
তবে শিক্ষকদের কার কারও প্রশ্ন, শোভাযাত্রা শুরু হচ্ছে দুপুর ২টোয়। সাড়ে ১১টা থেকে ২টো পর্যন্ত পড়ুয়ারা জোড়াসাঁকোয় কোথায় দাঁড়িয়ে থাকবে? তা ছাড়া, তারা চড়া রোদে এক হাতে প্ল্যাকার্ড এবং অন্য হাতে ছাতা নিয়ে এতটা পথ হাঁটতে পারবে তো? অতিরিক্ত পোশাক আনার কথা বলা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজে গেলে কোথায় তারা ভেজা পোশাক পাল্টাবে? শিক্ষা দফতরের কর্তাদের অবশ্য দাবি, পড়ুয়াদের জন্য যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাতে তাদের অসুবিধা হবে না। সঙ্গে তাদের স্কুলের কয়েক জন করে শিক্ষক তো থাকছেনই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy