কলকাতার নগর দায়রা আদালতে শাহজাহানের ফাঁসি চেয়ে স্লোগান আইনজীবীদের একাংশের। সোমবার দুপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার বিচার ভবনে বিশেষ ইডি আদালতে হাজির করানো হল সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ শাহজাহান শেখকে। নগর দায়রা আদালতে শাহজাহানকে কোর্ট লক আপে ঢোকানোর সময় ‘শাহজাহানের ফাঁসি চাই’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীদের একাংশ। তাঁদের হাতেও ছিল ‘শাহজাহানের ফাঁসি চাই’ লেখা পোস্টার। লক আপে ঢোকানোর সময় ধাক্কাধাক্কিতে হোঁচট খান শাহজাহান।
শাহজাহানের উদ্দেশে সন্দেশখালির দুষ্কৃতী ইত্যাদি বলে তোপ দাগেন ওই আইনজীবীরা। স্লোগান দেওয়া আইনজীবীদের এক জন বলেন, “শাহজাহান যা করেছেন, তাতে ফাঁসিও ওঁর শাস্তির জন্য যথেষ্ট নয়।” কিন্তু এক জন আইনজীবী হিসাবে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই এ ভাবে ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার হওয়া যায় কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে ওই আইনজীবী বলেন, “আমি সাধারণ মানুষ হয়ে বলছি, ওঁর ফাঁসি হওয়া উচিত। নারীদের সঙ্গে উনি অভব্য আচরণ করেছেন। তাই চাইব শাহজাহানকে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হোক।”
শাহজাহানকে নিজেদের হেফাজতে নিতে তৎপর ইডি। সোমবার এ ব্যাপারে কলকাতার বিশেষ ইডি আদালতের দ্বারস্থও হয় তারা। আদালত সূত্রের জানা যায়, সোমবার বিকেল ৪টের মধ্যে শাহজাহানকে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মতোই নির্ধারিত সময়ের আগে আদালতে হাজির করানো হয় তাঁকে। বিকেলে শাহজাহানকে এজলাসে হাজির করানো হলে ইডি ১৪ দিনের জন্য তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আর্জি জানায়।
ইতিমধ্যেই সিবিআই মামলায় বসিরহাট সংশোধনাগারে থাকা শাহজাহানকে গ্রেফতার দেখিয়েছে (শোন অ্যারেস্ট) ইডি। সোমবার আদালতে ইডি দাবি করে, কিছু নথি দেখিয়ে জেরা করার সময় তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন শাহজাহান। প্রশ্নও এড়িয়ে গিয়েছেন। এ ছাড়াও তদন্তে বেশ কয়েকটি নতুন নাম উঠে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে শাহজাহানকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা না হলে, যাঁদের নাম উঠে এসেছে, তাঁরা পালিয়ে যেতে পারেন বা নাগালের বাইরে চলে যেতে পারেন বলে আদলতে আশঙ্কা প্রকাশ করে ইডি।
শাহজাহানের বিরুদ্ধে ইডির তরফে দু’টি ইসিআইআর (এনফোর্সমেন্ট কেস ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট) রয়েছে। একটি রেশন বণ্টন দুর্নীতি এবং আর একটি বেআইনি ভাবে জমি দখল ও মাছ চাষ। এমনকি মাছ আমদানি-রফতানির মাধ্যমে বিদেশে কোটি কোটি টাকা বেআইনি লেনদেনের মামলাও রয়েছে। গত শুক্রবার সিবিআইয়ের হেফাজত থেকে শাহজাহানকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল। শনিবার সকালে বসিরহাট আদালতে বেআইনি ভাবে জমি দখল এবং মাছ আমদানি রফতানি ব্যবসার মামলায় শাহজাহানকে সংশোধনাগারে গিয়ে জেরা করার আবেদন করেন ইডির আইনজীবীরা। আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করে। এর পরেই শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত শাহজাহানকে সংশোধনাগারে গিয়ে জেরা করেন ইডির তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীদের দাবি, বেআইনি ভাবে জমি দখল এবং রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় কোটি কোটি কালো টাকা বিদেশে পাচার এবং বেআইনি ভাবে সম্পত্তি কেনা এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হয়েছিল। দু’টি ক্ষেত্রেই শাহজাহানের জড়িত থাকার যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীদের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy