Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
School

স্কুলের ফি মকুব করার দাবিতে বিক্ষোভ ধর্মতলায়

বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই পরিস্থিতিতে ফি বৃদ্ধি না-করার যে আর্জি জানিয়েছিলেন, তা তারা মেনে নিয়েছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২০ ০৩:৩৬
Share: Save:

লকডাউনে স্কুল যে ক’মাস বন্ধ থাকবে, সেই সব মাসের জন্য টিউশন ফি বাদে অন্য ফি দেবেন না তাঁরা। গত এক সপ্তাহ ধরে এই দাবিতে শহরের বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন অভিভাবকেরা। সেই বিক্ষোভ এ বার পৌঁছে গেল ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে। বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিভাবকদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’ সেখানে বিক্ষোভ দেখাল। পরে সংগঠনের সদস্যেরা রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। সংগঠনের মুখ্য আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে বহু অভিভাবকের রোজগার অনিয়মিত। অনেকেই ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না। বেসরকারি স্কুলগুলি টিউশন ফি বাদেও স্কুল ডেভেলপমেন্ট ফি, কম্পিউটার ফি-সহ বিভিন্ন খাতে টাকা নেয়। এই পরিস্থিতিতে আমাদের দাবি, যত দিন স্কুল বন্ধ থাকবে, তত দিন আমরা শুধু টিউশন ফি দেব।’’

বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই পরিস্থিতিতে ফি বৃদ্ধি না-করার যে আর্জি জানিয়েছিলেন, তা তারা মেনে নিয়েছে। ‘চার্চ অব নর্থ ইন্ডিয়া’ এবং ‘রোমান ক্যাথলিক চার্চ’-এর অধীনে থাকা অধিকাংশ মিশনারি স্কুল কর্তৃপক্ষও জানিয়েছেন, শিক্ষামন্ত্রীর আর্জি মেনে তাঁরাও ফি বাড়াননি। লা মার্টিনিয়ার স্কুলের সচিব সুপ্রিয় ধর জানান, তাঁদের স্কুল ‘চার্চ অব নর্থ ইন্ডিয়া’র অধীন। সুপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘আমাদের চার্চের অধীন কোনও স্কুলই ফি বাড়ায়নি।’’ অন্য দিকে, ‘রোমান ক্যাথলিক চার্চ’-এর অধীন ডন বস্কো স্কুলের (পার্ক সার্কাস) প্রিন্সিপাল, ফাদার বিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলেও ফি বাড়ানো হয়নি।’’

তবে অভিভাবকেরা টিউশন ফি বাদে অন্য কোনও ফি দেবেন না বলে যে দাবি করছেন, তা সব ক্ষেত্রে যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে করছেন শহরের বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ। যেমন শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা ল্যাবরেটরি ফি মকুব করতে পারি। কিন্তু কম্পিউটার ফি বা এক্সট্রা-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি ফি কী ভাবে মকুব করব? স্কুলের কম্পিউটারগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সারা বছরের চুক্তি করা থাকে। লকডাউনের জন্য সেই টাকার অঙ্ক তো কমছে না। তা ছাড়া, আমাদের স্কুল বন্ধ থাকলেও নাচ, গান, ছবি আঁকা— সবই অনলাইনে করাচ্ছেন শিক্ষকেরা। স্কুল বন্ধ বলে তাঁদের বেতন তো বন্ধ রাখিনি। স্কুলবাসের চালক বা তাঁর সহযোগীদেরও তো বেতন দিতে হচ্ছে প্রতি মাসে।’’ ব্রততীদেবীর কথায়, ‘‘তবে কোনও পড়ুয়া যদি বিশেষ কারণ দেখিয়ে আলাদা করে ফি মকুবের আর্জি জানায়, তা হলে আমরা তা নিশ্চয়ই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করব।’’

প্রায় একই কথা বলেছেন লা মার্টিনিয়ারের সচিব সুপ্রিয়বাবু। তিনি বলেন, ‘‘এত পুরনো স্কুলের দেখভালেরর খরচ প্রচুর। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার সঙ্গে কোনও আপস করা হয় না। স্কুলে অত্যাধুনিক অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। তাই টিউশন ফি বাদে বাকি সব ফি মকুব করব কী ভাবে?’’

তবে সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, ‘‘করোনার কারণে যত দিন বন্ধ থাকবে, তত দিন আমাদের স্কুল শুধুই টিউশন ফি নেবে। এপ্রিল ও মে মাসের বাসভাড়াও মকুব করা হয়েছে। জুন মাস থেকে ৫০ শতাংশ বাসভাড়া দিতে হবে।’’ ডিপিএস মেগাসিটি-র তরফে বিজয় আগরওয়াল বলেন, ‘‘দিল্লির সদর দফতর থেকে যা নির্দেশ আসে, সেটাই মেনে চলতে হয়। স্কুল বন্ধ থাকাকালীন বাসভাড়া ৩৩ শতাংশ মকুব করা হয়েছে।’’

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্তব্য করতে চাননি।

অন্য বিষয়গুলি:

School Education Protest Esplanade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE