Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Air Conditioners

হু হু করে এসি বিকোলেও চালু করতে হচ্ছে দেরি

শহরের একাধিক দোকানের এসি বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এ বছর মার্চের আগে থেকেই শহরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র কেনার চাহিদা বেড়েছে। গত বছরের গরম এবং এসির ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা ভেবে অনেকেই আগেভাগে এসি কিনে রেখেছেন।

এসি কিনতে বি বা দী বাগ এলাকার একটি দোকানে ভিড়।

এসি কিনতে বি বা দী বাগ এলাকার একটি দোকানে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৪৫
Share: Save:

ভরদুপুরে দোকানে ভিড়ের মধ্যেই ম্যানেজারের সঙ্গে রীতিমতো তর্ক করছেন মধ্যবয়সি ব্যক্তি! চিৎকার করে বলছেন, ‘‘এসি কেনার সময়ে তো বলেছিলেন, দু’দিনের মধ্যে বাড়িতে মিস্ত্রি চলে যাবে। এখন এক সপ্তাহ হতে চলল, কারও দেখা নেই। আজ এসি লাগানোর লোকের ব্যবস্থা করে তবেই আমি ফিরব।’’ ম্যানেজার তাঁকে যতই বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, গরমের জন্য চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে, ততই গলা চড়াচ্ছেন ওই ক্রেতা।

ডালহৌসি চত্বরের ওই একটি দোকানই শুধু নয়, গরমে এসির চাহিদা বাড়তে বাড়তে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে শহরের বহু এলাকাতেই। কারণ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের চাহিদা বাড়লেও তা বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে চালু করতেই সপ্তাহ পেরিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। আগে যেখানে এসি কেনার পরে এক-দু’দিনের মধ্যেই তা বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে চালু করার প্রক্রিয়া শেষ করা হত, সেখানে এখন সেই কাজে লেগে যাচ্ছে প্রায় এক সপ্তাহ। ফলে, ঝামেলা এড়াতে শহরের বহু দোকানেই এসি কেনার আগে ‘ইনস্টল করতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে’ বলে দেওয়া হচ্ছে। রাসবিহারী সংলগ্ন একটি দোকানের ম্যানেজারের কথায়, ‘‘আমরা কথায় আর কাজে এক। এখন এসির যা চাহিদা, তাতে তা বাড়িতে লাগিয়ে চালু করতে দু’-এক দিন বেশি সময় লাগছে। ক্রেতার সঙ্গে যাতে এ নিয়ে কোনও সমস্যা তৈরি না হয়, তা-ই লিখে রেখেছি।’’

শহরের একাধিক দোকানের এসি বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এ বছর মার্চের আগে থেকেই শহরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র কেনার চাহিদা বেড়েছে। গত বছরের গরম এবং এসির ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা ভেবে অনেকেই আগেভাগে এসি কিনে রেখেছেন। তার পরেও গত কয়েক দিনে শহরে রোদের তেজ বাড়তেই পাল্লা দিয়ে বিকোচ্ছে এসি, কুলার। কোনও দোকানে গত দু’সপ্তাহে বিক্রি বেড়েছে ১০ গুণ, কোথাও তা ১৫ গুণেরও বেশি।

যাদবপুরের একটি বৈদ্যুতিন সামগ্রীর দোকানের ম্যানেজার শিখা মিত্র বললেন, ‘‘আগে যেখানে দিনে ১০টি এসি বিক্রি হত, এখন সেখানে বিকোচ্ছে ১৫০টি! দোকান খুললেই দেখি, শুধু এসি কিনতে আসছেন ক্রেতারা। অন্য কিছুর দিকে কেউ ফিরেও তাকাচ্ছেন না।’’ একই কথা শোনালেন কসবার এক বিক্রেতাও।

তবে, চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এসি বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার পরে তা চালু করতে গিয়ে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতাদের বড় অংশ। এসি বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চার-পাঁচ দিন পরেও দেখা মিলছে না এসি লাগানোর কর্মীর। ধর্মতলা চত্বরের এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘এসি লাগানোর ছেলেরা দিন-রাত এক করে কাজ করছেন। কিন্তু চাহিদা এত যে, সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।’’

কাঁকুড়গাছি মোড়ের একটি দোকানে এসি দেখতে এসেছিলেন জয়ন্ত বিশ্বাস। তিনি বললেন, ‘‘হঠাৎ ঘরের এসি বিগড়ে যাওয়ায় এখানে আসা। কিন্তু এরা তো দেখছি সময় লাগবে বলছে। যা গরম, ঘর ছেড়ে না পালাতে হয়!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Air conditioner Installation Summer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE