বিপত্তি: হাওড়া জেলের ছাদে সেই বন্দি। শনিবার। ছবি: দীপঙ্কর
রক্ষীদের চোখে ধুলো দিয়ে জেলের দোতলার ছাদে উঠে পড়েছিল এক বন্দি। শনিবার ওই ঘটনায় তুলকালাম চলল হাওড়ায়। নাস্তানাবুদ হতে হল পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স ও জেল কর্তৃপক্ষকে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে এমন নাটক চলার পরে ওই বন্দিকে বাগে পেয়ে যায় পুলিশ। তাকে নামিয়ে এনে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নির্দিষ্ট সেলে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন জেল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে জেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।
হাওড়া সিটি পুলিশ ও হাওড়া জেল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মহম্মদ সোহেল নামে খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি কোনও ভাবে জেলের দোতলার ছাদে উঠে পড়ে। সেখানে উঠে নিজের হাত-পা ও বুকে ব্লেড চালাতে থাকে সে। তার পরে হাত-পা নেড়ে, চিৎকার করে জেলে চলা নানা ‘অনিয়মের’ প্রতিবাদ করে সে দাবি করে, মুখ্যমন্ত্রী বা পুরমন্ত্রীকে আসতে হবে। তাঁদের কাছেই সে নিজের সব অভিযোগ জানাবে। তার আগে ছাদ থেকে সে নামবে না। ওই কয়েদির অভিযোগ, হাওড়া জেলে অবাধে গাঁজা, মদ ও নানা ধরনের মাদক বিক্রি হয়। জেল কর্তৃপক্ষ সব জেনেও কিছু বলেন না। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই বন্দির হাতে ছিল একটি সাদা কাপড়। তাতে লাল রঙে লেখা ছিল, ‘জেলে কাটমানির প্রতিবাদে দিদিকে বলো।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কালো ট্রাউজার্স পরে খালি গায়ে রীতিমতো আত্মহত্যার হুমকি দিতে থাকে ওই বন্দি। মাঝেমধ্যেই ব্লেড দিয়ে নিজের শরীরে আঘাত করতে থাকে। এমনকি, তাকে জেল থেকে না ছাড়লে সে ছাদ থেকে ঝাঁপ দেবে বলেও হুমকি দেয়।
কারা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৫ বছর আগে মেটিয়াবুরুজে একটি খুনের মামলায় সোহেলকে আদালত যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তি দেয়। দুর্ব্যবহারের জন্য বারবার বিভিন্ন জেলে পাঠানো হয়েছে তাকে। কয়েক বছর প্রেসিডেন্সি জেলে রাখার পরে এক বছর আগে তাকে হাওড়া জেলে বদলি করা হয়েছিল। হাওড়া জেলের কারারক্ষীদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘ওই বন্দি জেলে স্বাধীন ভাবে ঘুরতে চায়। তাই এ দিন ও খেপে গিয়েছিল।’’
প্রায় এক দশক আগে এই জেলেই বিভিন্ন দাবি নিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছিল বন্দিরা। অগ্নিসংযোগ থেকে ভাঙচুর— সবই হয়েছিল। এ দিন জেলের আশপাশের বাসিন্দারা জানান, কারারক্ষীরা সোহেলকে ধরতে ছাদে ওঠার চেষ্টা করতেই সে পাথর ছুড়তে শুরু করে। দমকল এসে সিঁড়ি লাগিয়ে ছাদে উঠতে গেলে সিঁড়ি ফেলে দেওয়ার চেষ্টাও করে। ছাদে রাখা জলের ট্যাঙ্ক ফেলে দেয়। তখন খবর দেওয়া হয় সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের। তাঁরাও ছাদে ওঠার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বিকেল সাড়ে তিনটের পরে ওই বন্দিকে কথায় ব্যস্ত রেখে পুলিশ পিছন দিক দিয়ে উঠে আচমকা জাপটে ধরে। তার পরে মই দিয়ে নীচে নামিয়ে আনা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy